দক্ষিণ কোরিয়া ইস্যুতে সিউলে যখন বৈঠকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী, তখনই যেন শক্তিমত্তার জানান দিতে মিসাইল উৎক্ষেপণ উত্তর কোরিয়ার। এক প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যম এবিসি নিউজ এ তথ্য জানায়।
পিয়ংইয়ং থেকে ছোড়া এই মিসাইল যেন রীতিমতো কাঁপন ধরিয়ে দিয়েছে পশ্চিমাদের মনে। উত্তর কোরিয়ার দাবি- শব্দের চেয়েও ১২ গুণ বেশি গতিতে ছুঁটতে পারে তাদের এই মাঝারি পাল্লার মিসাইল। নিমিষেই যা ধূলিস্যাৎ করতে সক্ষম শত্রুপক্ষের যেকোনো টার্গেট। নতুন প্রযুক্তির এই হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রকে ঠেকানোর কোনো প্রযুক্তি নেই পশ্চিমাদের, এমনটাই দাবি কিম জং উনের। ১৫শ’ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ক্ষেপণাস্ত্রটি আঘাত হানে কোরীয় উপদ্বীপের সমুদ্রসীমায়।
হাইপারসনিক প্রযুক্তির মিসাইলটি কার্বন ফাইবারের তৈরি। একদিকে এটি অ্যালুমিনিয়ামের চেয়েও বেশি মজবুত এবং তুলনামূলক হালকা। এধরণের ক্ষেপণাস্ত্র রাডারের চোখ ফাঁকি দিতেও অধিক কার্যকরী। বিশ্লেষকরা বলছেন- এ ধরণের উপাদান দিয়ে মিসাইলের উৎপাদন প্রক্রিয়া বেশ জটিল।
পারমাণবিক অস্ত্র বিশেষজ্ঞ অঙ্কিত পানডে বলেছেন, বেশ কয়েক বছর ধরেই উত্তর কোরিয়া ক্ষেপণাস্ত্রে ব্যবহারের জন্য এ ধরণের উপাদান নিয়ে কাজ করছে। সাধারণত, সক্ষমতা আর পে-লোডের কার্যকারিতা বাড়াতে এইসব উপাদান ব্যবহার করা হয়ে থাকে। যা তার লক্ষ্যে আরও নির্ভুলভাবে পৌঁছাতে সাহায্য করে।
তবে, কিভাবে এমন প্রযুক্তির উদ্ভাবন করলো পিয়ংইয়ং তা নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। সংশ্লিষ্টদের ধারণা- উত্তর কোরিয়াকে সহায়তা করে থাকত পারে রাশিয়া।
ইউনিভার্সিটি অব নর্থ কোরিয়ান স্টাডিজের প্রেসিডেন্ট ইয়াং মু-জিন বলেন, এই ক্ষেপণাস্ত্র এতটাই উদ্বেগজনক যে এই প্রযুক্তি বর্তমানে শুধু রাশিয়া, চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের কাছে রয়েছে। প্রযুক্তিটি সম্পর্কে যা চিন্তার তা হলো এই ধরনের গতি অর্জনের জন্য এমন উপকরণের প্রয়োজন যা প্রতিকূল পরিস্থিতি সহ্য করতে পারে।
অত্যাধুনিক, ফ্লাইট অ্যান্ড গাইডেন্স কন্ট্রোল সিস্টেমযুক্ত ক্ষেপণাস্ত্রটির পাল্লা আনুমানিক দেড় হাজার কিলোমিটার। সাধারণত, শব্দের চেয়েও কয়েকগুণ বেশি গতিতে ছোটার কারণে এ জাতীয় হাইপারসনিক মিসাইলকে রাডারের নজরে আনা এবং ধ্বংস করা কষ্টসাধ্য।