spot_img

অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্রে অন্তর্ভুক্তি চেয়ে বৈষম্যবিরোধীদের ৭ দাবি

অবশ্যই পরুন

জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্রে অন্তর্ভুক্তি চেয়ে সাতটি দাবি ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এসব দাবি সম্বলিত ‘জুলাই এর প্রেরণা, দিতে হবে ঘোষণা’ শীর্ষক লিফলেট সোমবার (৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যার পর গণমাধ্যমে পাঠিয়েছে সংগঠনটি।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবিগুলো হলো—

১. জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে আহতদের বিনামূল্যে রাষ্ট্রীয়ভাবে সুচিকিৎসা প্রদানের প্রতিশ্রুতি স্পষ্ট করতে হবে।

২. ঘোষণাপত্রে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ এর নেতৃত্ব পরিস্কারভাবে উল্লেখ থাকতে হবে।

৩. অভ্যুত্থানে আওয়ামী খুনী ও দোসরদের বিচার নিশ্চিত করার স্পষ্ট অঙ্গীকার ব্যক্ত করতে হবে।

৪. ১৯৪৭ সালের পাকিস্তান আন্দোলন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং ২০২৪ সালের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতা পরিস্কার করতে হবে।

৫. ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রব্যবস্থার মূল ভিত্তি সংবিধান বাতিল করে নির্বাচিত গণপরিষদ গঠনের মাধ্যমে সম্পূর্ণ নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রণয়নের অঙ্গীকার ব্যক্ত করতে হবে।

৬. নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তে সব ধরনের বৈষম্য নিরসনের মধ্য দিয়ে নাগরিক পরিচয় প্রধান করে রাষ্ট্রকাঠামো গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি থাকতে হবে।

৭. জুলাই অভ্যুত্থানের একমাত্র প্রধান লক্ষ্য আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারকে উৎখাত করা ছিল না; বরং গত ৫৩ বছরের বৈষম্য, শোষণ ও ফ্যাসিবাদী রাজনৈতিক ব্যবস্থা বিলোপ করার লক্ষ্যে এ অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়েছে। সুতরাং বিদ্যমান ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রকাঠামো বিলোপ করতে সব ধরনের সংস্কারের ওয়াদা দিতে হবে।

এতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বলে, এই অভূতপূর্ব অভ্যুত্থানকে টিকিয়ে রাখতে এবং বৈশ্বিক স্বীকৃতি আদায়ের লক্ষ্যে শুরু থেকেই আমরা একটি প্রোক্লেমেশন তথা ঘোষণাপত্র জারির দাবি জানিয়ে এসেছি। এ ঘোষণাপত্রই হবে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের বৈধতার উৎস এবং পরবর্তী সংবিধানের ভিত্তিমূল। জনগণের বিপুল সাড়া ও চাপের মুখে সরকার নিজে এ ঘোষণাপত্র জারির ব্যাপারে সম্মতি প্রদান করতে বাধ্য হয়। আমরা অনতিবিলম্বে এ ঘোষণাপত্র জারির দৃশ্যমান উদ্যোগ দেখতে চাই।

তাতে আরও বলা হয়, ইতোমধ্যে আমরা ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে সরকারকে ১৫ দিনের মধ্যে ঘোষণাপত্র জনগণের সামনে তুলে ধরার সময় বেঁধে দিয়েছি। আমরা ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ঘোষণাপত্রটি প্রকাশ করার জন্য জোরালো দাবি জানাচ্ছি। উক্ত ঘোষণাপত্রে এ জনগোষ্ঠীর বিগত দুইশত বছরের লড়াই-সংগ্রামের স্বীকৃতি থাকতে হবে। বিগত ১৬ বছরের জুলুম-নিপীড়ন, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করাসহ অর্থপাচারের খতিয়ান থাকতে হবে।

স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে ছাত্র- জনতার জুলাই অভ্যুত্থান এক অবিস্মরণীয় ঘটনা উল্লেখ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন বলে, এর মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আওয়ামী লীগের চেতনা ব্যবসার অবসান ঘটে। ফলে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধ ও লাখও শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা আপামর জনগণের অর্জন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পথ সুগম হয়। তাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে বাংলাদেশের জনগণ কীভাবে ভয়াবহ এই ফ্যাসিবাদী জিঞ্জির ছিন্ন করেছে ঘোষণাপত্রে তার উল্লেখ থাকতে হবে। আমরা চাই অধিকার, ইনসাফ ও মর্যাদাভিত্তিক সমাজ ও রাষ্ট্র। ব্যক্তি ও সমাজের সহাবস্থানে বৈষম্যহীন ও গণতান্ত্রিক এক রাষ্ট্রকল্প যেখানে ভোটাধিকারসহ সকল মৌলিক অধিকার সুরক্ষিত থাকবে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানসমূহ হবে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ।

বাহাত্তর থেকে পচাত্তরের একদলীয় শাসন এবং এক-এগারোর বিরাজনৈতিক বন্দোবস্তের পরিবর্তে বাংলাদেশকে গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র হিসেবে গঠন করার সংকল্প ব্যক্ত করবে এই ঘোষণাপত্র এমনটা বলছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।

উল্লেখ্য, গত ২৮ ডিসেম্বর রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র দেয়ার কথা বলেন। এজন্য ৩১ ডিসেম্বর বিকেল ৩টায় শহীদ মিনারে ছাত্র-জনতাকে জড়ো হওয়ার আহ্বান জানান।

এর মধ্যে ৩০ ডিসেম্বর রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেয়া হয়, জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে তারা ঘোষণাপত্র তৈরি করবেন। পরে ছাত্ররা নির্ধারিত দিনে ঘোষণাপত্র দেননি, সেদিন তারা শহীদ মিনারে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ কর্মসূচি পালন করেন। তাতে তারা ১৫ জানুয়ারির মধ্যে ঘোষণাপত্র দিতে সরকারেকে আলটিমেটাম দেন।

সর্বশেষ সংবাদ

জাস্টিন ট্রুডো : উত্থান ও উত্তরাধিকার

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো সোমবার (৬ জানুয়ারি) রাজধানী অটোয়ায় এক সংবাদ সম্মেলনে লিবারেল পার্টির প্রধান পদ থেকে তার পদত্যাগের...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ