কাজখস্তানের আকতাউয়ে গত বুধবার যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়ে অন্তত ৩৮ জন নিহত হন। ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান ২৯ যাত্রী। ভয়াবহ এ দুর্ঘটনার আগমুহূর্তে বিমানের ভেতরের ভিডিও করেন এক যাত্রী।
ওই ভিডিও-তে দেখা যায়, যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বিমানটি যখন নিচে নেমে আসছিল তখন সবাই ভয়ে চিৎকার করছিলেন। তবে যিনি ভিডিওটি ধারণ করেছেন, তিনি শান্ত থাকার চেষ্টা করার পাশাপাশি সঙ্গে আল্লাহর নাম স্মরণ করছিলেন। এছাড়া বিভিন্ন দোয়া পড়ছিলেন। তার মধ্যেও আতঙ্কের স্পষ্ট ছাপ ছিল।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ভিডিওটির ওই ব্যক্তিও ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেছেন। শুভোনকুল রাখিমোভ নামের এ যাত্রী দুর্ঘটনার ভয়াবহ অভিজ্ঞতা ও আল্লাহর নাম স্মরণ করার কারণ জানিয়েছে বলেছেন, ”বিমানটি ভেঙে পড়তে যাচ্ছিল। কিন্তু কয়েক সেকেন্ড পার হওয়ার পরও এটি ভেঙে পড়েনি। আরও কয়েক মিনিট পার হওয়ার পরও বিমানটি নিচে পড়ে যায়নি। তখন আমার মনে হলো, এ মুহূর্তে আমার দোয়া পড়া উচিত। আমি আল্লাহকে স্মরণ করা শুরু করি। আমি ভেবেছিলাম এগুলো আমার শেষ কথা হবে, আমাকে আল্লাহর সামনে উপস্থিত হওয়ার জন্য প্রস্তুত হতে হবে। যেহেতু আমার মৃত্যু হয়নি। আমি মনে করি আমাকে এখন আল্লাহর আরও সন্তুষ্টি অর্জন করতে হবে।”
এদিকে আকউয়ে বিধ্বস্ত ওই বিমানটি আজারবাইজান থেকে রাশিয়ার চেচনিয়ার রাজধানী গৌজনিতে যাচ্ছিল। তবে খারাপ আবহাওয়ার কারণে এটি সেখানে অবতরণ করতে পারেনি। তখন বিমানটি গৌজনির আকাশে চক্কর খাচ্ছিল। ওই সময় রুশ বাহিনী বিমানটিকে ইউক্রেনের ড্রোন ভেবে মিসাইল ছোড়ে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে এটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর বিমানটিকে কাজাখস্তানের দিকে যেতে নির্দেশ দেয়া হয়। সেখানে গেলেও দেশটির আকতাউ বিমানবন্দর থেকে মাত্র ৩ কিলোমিটার দূরে থাকা অবস্থায় বিমানটি বিধ্বস্ত হয়।
এ ঘটনায় নিজেদের দায় স্বীকার না করলেও আজারবাইজানের যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনায় দেশটির প্রেসিডেন্টের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
তিনি বলেন, রাশিয়ার আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ব্যবহার করে ইউক্রেনের ড্রোন প্রতিহত করার সময় ‘মর্মান্তিক এ ঘটনা’ ঘটে। বিভিন্ন খবরে বলা হয়, উড়োজাহাজটি চেচনিয়ায় অবতরণের চেষ্টার সময় রাশিয়ার আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার হামলার শিকার হয়। তখন উড়োজাহাজটি দিক পরিবর্তন করে কাস্পিয়ান সাগর পার হয়ে আসে।
সূত্র : সিএনএন