প্রতিটি মানুষ আলাদা। আর তাদের স্বভাবও ভিন্ন হয়। অনেকেই আছেন যারা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে চান। তবে অনেক সময় তারা এ বিষয় একটি বেশি ভাবেন। যেটার পেছনের কারণ অনেক সময় অবসেসিভ কমপালসিভ ডিসঅর্ডার বা ওসিডি। উদাহরণ টেনে বলা যায়, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা খারাব কিছু না। তবে সেটা যখন বাড়াবাড়ি হয় তখন ভেবে দেখতে হয়। এমন অনেকেই আছেন যারা একেবারেই স্বাভাবিক তবে সাজানো গোছানো ঘরে হের ফের হলেই উদ্বিগ্ন হয়ে যান। এমনকি তারা অনেক সময় পরিষ্কার ঘরকেও অনেক সময় ময়লা বলে ব্যস্ত হয়ে যান নিজের মত সব ঠিক করতে। এটা তার কাছে স্বাভাবিক হলেও কিন্তু বাকিদের জন্য অস্বস্তির কারণ।
আবার অনেক সময় দেখা যায় অনেকের হাত ধোয়ার বাতিক থাকে। কেউবা প্রতিদিন বিছানার চাঁদর পরিবর্তন করেন। এমন অনেক বাতিক আছে যারা ওসিডিতে ভোগেন তাদের। যদিও ওসিডি কেবল পরিচ্ছন্নতার বাতিকই নয়, এর তালিকা আরও বেশি। মায়ো ক্লিনিনের এক প্রতিবেদনে বিস্তারিত জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
অবসেসিভ কমপালসিভ ডিজঅর্ডার: সহজভাবে বলা যায় ওসিডি একটি মানসিক সমস্যা। একই কাজ বারবার করে চলা, সবসময় মন চঞ্চল থাকা, অবাঞ্ছিত চিন্তা এই রোগের লক্ষণ। বিশেজ্ঞদের কথায়, কেউ যদি কোনও কাজে দিনে আট ঘণ্টা বা তার বেশি সময় ব্যয় করে, তা হলে তা চরম পর্যায়ে চলে যায়। অনেক সময় অবস্থা এমন হয়, যে ব্যক্তি উদ্বেগ বা অবসাদে ভুগতে থাকেন।
তবে এই সব কাজ কিন্তু ব্যক্তি ইচ্ছে করে করেন না, বা সেগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। আর এই অবস্থার ফলে ব্যক্তি এবং তাঁর কাছের মানুষদের দৈনন্দিন জীবনে মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে।
ওসিডির লক্ষণ: ওসিডি আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে যে লক্ষণ বা অবসেশনগুলো সাধারণত দেখা যায় সেগুলো হলো:-
নিজের বা অন্যের ক্ষতি হতে পারে এমন অহেতুক ভীতিকর চিন্তা।
শরীর, কাপড় বা আসবাবপত্রে জীবাণু বা ময়লা লেগে আছে এমন অহেতুক চিন্তা বারবার আসা৷
যৌনতা বিষয়ক অবসেশন।
বারবার একই কাজ করা। যেমন -গ্যাস বন্ধ আছে কি না বা দরজায় তালা লাগানো হলো কি না এ ধরনের চিন্তার বারবার করা।
জীবাণু ও দূষণের ভয়ে বারবার হাত ধোয়া বা পরিষ্কার করা৷
ডাক্তারের কাছে কখন যাবেন: অনেকেই ওডিসিকে স্বাভাবিক ভেবে এড়িয়ে যান। তবে এটা পরবর্তীতে বড় সমস্যা হতে পারে। বিশেষ করে অনেক সময় ওসিডি মানসিক চাপের কারণ হয়ে যায়। ব্যক্তিগত সম্পর্কও নষ্ট হয়। এমনকি স্বাভাবিক জীবন যাপনেও বাধা হয়ে দাঁড়ায়। যদি আপনার অবসেশন এবং কম্পালসন আপনার জীবনের মানের উপর প্রভাব ফেলে, তাহলে দয়া করে একজন ডাক্তার বা মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করুন।