পুরুষ শাসিত সৌদি আরবে ঝড় তুলেছেন নারী রক ব্যান্ড সিরা। পাশ্চাত্য মিউজিকের সাথে মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন দেশীয় সংস্কৃতির। তাই তাদের গানগুলো দারুণভাবে গ্রহণ করেছেন দর্শক-শ্রোতারা। চলতি মাসেই বের হয়েছে তাদের প্রথম অ্যালবাম। আরব সঙ্গীতপ্রেমী নারীদের অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করতে চায় সিরা।
আন্ডারগ্রাউন্ড ব্যান্ড হিসেবে শুরুটা হয়েছিল রিয়াদের একটা গ্যারেজে। সেখানেই প্রথম পারফর্ম করে ব্যান্ডটি। কিন্তু জনসম্মুখে আসার পর বাজিমাত করেছেন।
সৌদি মেয়েদের ব্যান্ড সিরার ৪ ডিসেম্বর মুক্তি পেয়েছে প্রথম অ্যালবাম। সেখানে অসাধারণ লিরিক্স আর রক-আরব ফিউশনের কারণে রাতারাতি সেলিব্রেটি বনে গেছেন তারা।
সিরা রক ব্যান্ডের লিড সিঙ্গার নোরা বলেন, রক মিউজিক নিয়ে অনেকেরই ভুল ধারণা আছে। শুধু গলা ফাটিয়ে চিৎকার করাই রক মিউজিক না। এর আলাদা একটা ধরণ আছে। রক মিউজিক হোক বা অন্য যেকোন ধরনের গান ই হোক। আমি চাই সৌদি নারীরা নিজেদের প্রকাশ করুক। যেমন আমার সাথে রক মিউজিকটাই সবচেয়ে ভালো যায়।
আরবি সংস্কৃতিতে সিরা অর্থ- জীবন। ব্যান্ডের ৬ সদস্য সেখানে তুলে ধরতে চান জীবন, সংগ্রাম আর নারী জীবনের কথা। শুরু থেকেই সেই ভাবনা কাজ করেছে সবার মধ্যে।
ব্যান্ডটির বেজ সিঙ্গার মেস বলেন, সৌদি আরবে পারফর্ম করার মাঝে অন্যরকম একটা ব্যাপার আছে। এখানকার মানুষরা অতি উৎসাহী। যেন ওরা বিশ্বাসই করতে পারে না এভাবে গান করা সম্ভব।
আরবের ঐতিহ্যবাহী নিকাব পরেই ড্রাম বাজান ‘থিং’। জানিয়েছেন, সৌদি আরবের নারীদের সঙ্গীতের প্রতি আগ্রহ তৈরি করতে চান তিনি।
ব্যান্ডটির ড্রামার থিং বলেন, সৌদি আরবের প্রত্যেক নারী যাদের সঙ্গীতের প্রতি ভালোবাসা আছে তাদের বলতে চাই- এই গভীর আসক্তিকে হারাতে দিও না। গানের বিভিন্ন ধরণ আছে। অবশ্যই কিছু না কিছু করতে পারবে।
সিরাই প্রথম না, সৌদি আরবে ২০০৮ সালে ‘দা একোলেড’ নামের আরও একটি নারী রক ব্যান্ড ছিল। যদিও তাদের শুধু মাত্র আন্ডারগ্রাউন্ডেই পারফর্মের অনুমতি মিলেছিল। এবার সিরা জনসম্মুখে পারফর্মের অনুমতি পেয়েছে।
সম্প্রতি সৌদির কঠোর ইসলামিক শাসন ব্যবস্থায় এসেছে বিভিন্ন পরিবর্তন- বিশেষ করে নারীদের অধিকারের ব্যাপারে। যাতে অগ্রনী ভূমিকা রেখেছেন সৌদি বাদশা সালমান বিন আব্দুল আজিজ এবং ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান। এরই প্রেক্ষিতে, ২০১৮ সালে, আরব নারীরা পান ড্রাইভিং এর অনুমতি।