শৈশবের ধর্মীয় আগ্রহ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ‘এফবিআই’-তে যোগ দেওয়ার স্বপ্ন ছিল অ্যাড্রিয়ান উড স্মিথের। এই স্বপনের পথেই ইসলাম গ্রহণের যাত্রা শুরু হয়।
একজন খ্রিস্টান পরিবারে বেড়ে ওছেন স্মিথ। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে খ্রিস্টান উপাসনার রীতিনীতির অযৌক্তিক পরিবর্তন তাকে ভাবিয়ে তোলে। স্কুলজীবনে এফবিআই-তে কাজ করার স্বপ্ন পূরণে তাকে আরবি ও পারস্য ভাষা শেখার পরামর্শ দেওয়া হয়। এ লক্ষ্যেই তিনি ডার্টমাউথ কলেজে আরবি ভাষায় পড়াশোনা শুরু করেন।
আরবি শেখার সময় তিনি ইসলামি সংস্কৃতি সম্পর্কে জানার সুযোগ পান। প্রথমবারের মতো আজান শুনে গভীরভাবে আলোড়িত হন। ইসলাম সম্পর্কে তার অনুসন্ধান শুরু হয়, খ্রিস্টান বিশ্বাসকে আরও মজবুত করার প্রয়াসে, কিন্তু ধীরে ধীরে তিনি উপলব্ধি করেন যে ইসলামেই তার কাঙ্ক্ষিত আত্মিক পরিপূর্ণতা রয়েছে।
খ্রিস্টান হয়েও তিনি ইসলামিক রীতিনীতি, বিশেষ করে নামাজ আদায় শুরু করেন। মুসলিম স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনে (এমএসএ) প্রথমবারের মতো যোগ দেেয়ার পর ইসলামের শিক্ষার সঙ্গে তার চিন্তা-চেতনার মিল খুঁজে পান। মাত্র দুই মাসের মধ্যেই তিনি শাহাদাহ (ঈমানের ঘোষণা) পাঠ করে আনুষ্ঠানিকভাবে ইসলাম গ্রহণ করে আদনান নাম হিসেবে পরিচয় দেন।
তার ইসলাম গ্রহণে তার পরিবার, বিশেষত তার মা শুরুতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। তবুও আদনান তার বিশ্বাসে অটল থাকেন। এ সময় তিনি এফবিআই-তে দুটি ইন্টার্নশিপ সম্পন্ন করেন, টপ সিক্রেট ক্লিয়ারেন্স পান। গোয়েন্দা বিশ্লেষক হিসেবে একটি চাকরির প্রস্তাবও পান। তার লক্ষ্য ছিল বিশেষ এজেন্ট হওয়া।
কিন্তু ইসলামের বিশ্বাস বা আদর্শের সঙ্গে তার কর্মজীবনের নৈতিক দ্বন্দ্ব তাকে ভাবিয়ে তোলে। তিনি উপলব্ধি করেন, এফবিআই-এর কার্যক্রম অনেক সময় মানুষের ওপর জুলুম অত্যাচারের কারণ হয়। এতে ইসলামের ন্যায়বিচার ও মানবতার নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
এসব উপলব্ধি থেকে আলেমদের সঙ্গে পরাপর্শের পর আদনান এফবিআই ছেড়ে মানুষের সেবা করার সিদ্ধান্ত নেন। বর্তমানে তিনি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি গবেষক হিসেবে নিয়োজিত রয়েছেন। ইসলামের সুমহান আদর্শে ঈমানের অনন্য যাত্রায় অন্যদের অনুপ্রাণিত করছেন তার জীবন ও কর্মের মাধ্যমে।
সূত্র: ইসলামিক সিটি