সিরিয়ায় বাশার অল-আসাদ সরকারের পতন ঘটানো বিদ্রোহী বাহিনীর নেতা আবু মোহম্মদ আল-জোলানির সাথে যোগাযোগ রাখছে রাশিয়া। শুক্রবার এ কথা জানিয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সরকারের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী মিখাইল বোগদানভ। তিনি বলেন, ‘হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস)-এর নেতাদের সাথে আমরা যোগাযোগ রাখছি।’
গত ৮ ডিসেম্বর আসাদ সরকারকে উৎখাত করে সিরিয়ার রাজধানী দামাস্কাস দখল করেছিল বিদ্রোহী গোষ্ঠী এইচটিএস এবং তাদের সহযোগী ‘জইশ আল-ইজ্জা’র যৌথবাহিনী। দামাস্কাস ছেড়ে সপরিবার রাশিয়া চলে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন বাশার। যুদ্ধে জয়ী হলেও বিদ্রোহী জোটের নেতা জোলানি সরাসরি ক্ষমতা হাতে নেননি। ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী হিসাবে মোহম্মদ আল-বশিরকে নিয়োগ করেছেন তিনি। রাশিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশ জানিয়েছে, তারা সিরিয়ার নতুন সরকারের সাথে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত।
যদিও গৃহযুদ্ধ পর্বে ধারাবাহিকভাবে বাশার আল-আসাদের সেনাবাহিনীকে মদত দিয়েছে রাশিয়া। ধারাবাহিকভাবে এইচটিএস যোদ্ধাদের উপর বোমাবর্ষণ করেছে রুশ যুদ্ধবিমান। ব্রিটেনের মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ সংস্থা ‘সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস’ জানিয়েছে, সিরিয়ার ভূখণ্ডে রাশিয়ার বিমান হামলায় গত ৯ বছরে ২১ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে আট হাজার ৭০০ জন বেসামরিক নাগরিক।
সামরিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন, সিরিয়ায় দু’টি সেনাঘাঁটি রক্ষা করতেই পুতিনের এই ‘নমনীয়তা’। উল্লেখ্য, সিরিয়ার বন্দরশহর তারতসে রুশ নৌবাহিনীর ঘাঁটি রয়েছে। আর এক বন্দরনগরী লাতাকিয়ার অদূরে রয়েছে রুশ বিমানবাহিনীর ঘাঁটি। সেটি খমেইমিম বিমানঘাঁটি নামে পরিচিত। গত ২৪ বছর ধরে শাসন চালানোর পরে সিরিয়ায় এখন আসাদের জনপ্রিয়তা তলানিতে। তার সরকারের পতনের পরে দামেস্কসহ সিরিয়ার বিভিন্ন অংশে স্বতঃস্ফূর্তভাবে উৎসবে মেতেছে জনতা। এই আবহে পুতিনের অবস্থান বদল আসাদের ‘ভবিষ্যৎ’ আরো অনিশ্চিত করে তুলবে বলে মনে করা হচ্ছে।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা