লিভার বা যকৃতে অল্প চর্বি থাকা স্বাভাবিক। কিন্তু অতিরিক্ত চর্বি জমে গেলে তা বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা তৈরি করতে পারে। বিষয়টি লিভার ক্যানসার ও সিরোসিসের দিকে যেতে পারে। হাঁটু এবং পিঠে ব্যথার কারণে বছরখানেক আগে ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলেন ইয়ানিক ফ্যাশার। সেই সময় তার লিভার পরীক্ষা করা হলে ডা. ফ্রিডহেল্ম জাইক তাকে জানান, তার ফ্যাটি লিভার রোগ হয়েছে৷
ফ্যাশার জানতেন, তার ওজন বেশি। ১.৮০ মিটার উচ্চতার ফ্যাশারের ওজন ১৩০ কেজি ছিল। তবে লিভারের সমস্যা তাকে অবাক করেছিল।
ডা. ফ্রিডহেল্ম জাইক বলছেন, আগামী বছরগুলোতে আমরা এই সমস্যা আরও বেশি দেখবো- ফ্যাটি লিভার, নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার সিরোসিস ও লিভার ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়বে। এটা আমাদের ও লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্ট সেন্টারগুলোর জন্য উদ্বেগের। ফ্যাশার নিশ্চিতভাবেই সেদিকে এগোচ্ছেন। ফ্যাটি লিভারের কারণে ক্যানসার ও সিরোসিস হতে পারে। এক পর্যায়ে ট্রান্সপ্ল্যান্টই একমাত্র সমাধান হতে পারে। ফ্যাশার সেটি এড়াতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সমস্যা হলো, ফ্যাটি লিভারের জন্য কোনো ওষুধ নেই।
ডা. জাইক বলেন, ফ্যাটি লিভারের জন্য কোনো পিল নেই৷ অনেক গবেষণা চলছে, কিন্তু এখনও প্রমাণিত কোনো চিকিৎসা নেই। তাই জীবনযাপনে পরিবর্তন আনাই এখন পর্যন্ত একমাত্র সমাধান।
ফ্যাশারের কাছে জীবনযাপন পরিবর্তন মানে ওজন কমানো। এখন তিনি নিজের জন্য অনেক সবজি রান্না করেন। আগে অনেক ফাস্ট ফুড খেতেন। ফ্যাশার বলেন, ওজন কমানো শুরু না করলে কী হতে পারে সেটা যখন ডা. জাইক ব্যাখ্যা করেছিলেন তখন সত্যিই আমার চোখ খুলে গিয়েছিল। আমার বয়স ত্রিশের দিকে ছিল, জীবনের অর্ধেক তখনও বাকি। তাই মনে হয়েছিল, এখন না হলে আর কখন? তাই শুরু করেছিলাম৷ ফ্যাশার শুধু খাওয়ার মেন্যু পরিবর্তন করেননি, খাওয়ার সময়ও বদলেছেন।
তিনি ইন্টারমিটেন্ট ফাস্টিং শুরু করেছিলেন- অর্থাৎ দিনের প্রথম খাবারটা ছিল দুপুরে। এভাবে ২৫ কেজি কমিয়েছেন।
ডা. জাইক বলেন, ওজন কমানো ও জীবনযাপনে পরিবর্তন করাকে ম্যারাথন হিসেবে ভাবাটা গুরুত্বপূর্ণ, যার জন্য অনেক স্ট্যামিনার প্রয়োজন হয়। এটা এমন বিষয় হওয়া উচিত নয় যেটাতে আপনি দ্রুত ওজন কমানোর পর আবার দ্রুত ওজন বাড়ান।
ফ্যাশার আশা করছিলেন যেন তার লিভারের সমস্যা দূর হয়, তবে তিনি পার্থক্য অনুভব করতে পারছিলেন না। এক বছর পরে ফলোআপের সময় তিনি জানতে পারেন, ওজন কমানোর কারণে তার লাভ হয়েছে। লিভারে চর্বি উল্লেখযোগ্য হারে কমে গিয়েছে। ফ্যাশার তার লিভার ক্যানসার ও সিরোসিস হওয়ার ঝুঁকি অনেকখানি কমিয়েছেন। ওজন যেন আবার না বাড়ে সেজন্য নতুন জীবনযাপন চালিয়ে যেতে বদ্ধপরিকর তিনি।