spot_img

বিজেপির অভিযোগকে দুর্ভাগ্যজনক বলল মার্কিন দূতাবাস

অবশ্যই পরুন

ভারতকে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর অস্থিতিশীল করতে চায় বলে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি যে অভিযোগ করেছে, সেটাকে দুর্ভাগ্যজনক হিসেবে অভিহিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

উল্লেখ্য, এক দিন আগেই দীর্ঘ সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপির তরফ থেকে অভিযোগ করা হয়েছিল যে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর ভারতকে অস্থিতিশীল করতে চায়। এহেন গুরুতর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এবার জবাব এলো ভারতে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসের তরফ থেকে। বিজেপির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে এই বিষয়ে মার্কিন দূতাবাস বলল, ‘ভারতের শাসকদল এই ধরনের অভিযোগ করায় তা খুবই দুর্ভাগ্যজনক।’ মার্কিন দূতাবাসের বক্তব্য, ‘সাংবাদিকদের প্রশিক্ষণ এবং পেশাদারিত্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যে মার্কিন সরকার স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে কাজ করে থাকে। তবে এই প্রোগ্রাম কোনোভাবেই ওই সব সংগঠনের সম্পাদকীয় নীতিকে প্রভাবিত করে না।’

মার্কিন দূতাবাস আরো বলে, ‘বহু বছর ধরেই বিশ্বের সর্বত্র স্বাধীন সাংবাদিকতার পক্ষে কথা বলে এসেছে আমেরিকা। বিশ্বের যেকোনো গণতন্ত্রের জন্য স্বতন্ত্র সংবাদমাধ্যম অত্যন্ত জরুরি। এর মাধ্যমেই ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিদের জবাবদিহি চাওয়া হয়। মানুষকে শিক্ষিত করে তোলে এবং তর্ক ও বিচারে তা সাহায্য করে।’

উল্লেখ্য, শুক্রবার বিজেপির তরফ থেকে নজিরবিহনীভাবে আক্রমণ শানানো হয় মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরকে। অভিযোগ করা হয়, আমেরিকার পররাষ্ট্র দফতর ভারতকে ‘অস্থিতিশীল করার’ চেষ্টায় আছে। এই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ একের পর এক পোস্ট করেছে বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ, গত চার বছরে কংগ্রেস যেসব ইস্যুতে বিজেপিকে আক্রমণ শানিয়েছে, ওই সব ইস্যুই আন্তর্জাতিক প্রচারের ওপর ভিত্তি করেই করা হয়েছে। বিজেপির অভিযোগ, পেগাসাস, আদানি থেকে শুরু করে জাতিগত জগণনা, হাঙ্গার ইন্ডেক্স, ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা- এই সব ইস্যুই আন্তর্জাতিক মহল থেকে সমর্থন পেয়েছে কংগ্রেস।

সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে বিজেপি লিখেছে, ‘যখনই কোনো রিসার্চ রিপোর্ট সামনে এসেছে বা বিদেশী কোনো সংস্থার তরফ থেকে কোনো সূচক প্রকাশিত হয়েছে, কংগ্রেস সেই সব ইস্যুকেই হাতিয়ার করে বিজেপি বা কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ শানিয়েছে। এটার জেরে প্রশ্ন তো উঠবেই। মনে হচ্ছে, কংগ্রেস যেন পশ্চিমি বিশ্বে সঙ্গী লুকিয়ে রেখেছে। সেখান থেকেই একটি বয়ান তৈরি করে ভারতকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা চলছে। এখন সময় এসেছে এই এজেন্ডাকে প্রকাশ করা।’

এরপরে বিজেপির তরফ থেকে আরো লেখা হয়েছে, ‘২০২০ সালের ১৩ নভেম্বর ফিন্যানশিয়াল টাইমস একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে- মোদির রকফেলার : গৌতম আদানি এবং ভারতের কুক্ষিগত শক্তি। এই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, বিজেপিকে দুর্বল করতে আদানিকে আক্রমণ শানাতে হবে। হিসেব করেই এই বয়ান প্রচার করা হয়েছিল ভারত এবং দেশের নেতৃত্বকে দুর্বল করতে।’

এরপর পোস্টে বিজেপি লেখে, ‘২০২৩ সালের ৩১ অগস্ট, জি২০ শীর্ষ সম্মেলের মাত্র ১০ দিন আগে রাহুল গান্ধী একটি প্রেস কনফারেন্স করেন আদানি ইস্যুতে। সেখানে তিনি সরাসরি মোদিকে আক্রমণ শানান। রাহুল গান্ধী উদ্দেশ্য স্পষ্ট ছিল। তার আসল লক্ষ্য ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং ভারতের শেয়ারবাজার। তাতে আদানি নিছকই একটি হাতিয়ার ছিল। বিগত চার বছরে কংগ্রেস ধারবাহিকভাবে মোদি সরকারকে আক্রমণ শানিয়েছে আদানি ইস্যুতে। এই সব হমলার জেরে সংসদ অচল হয়েছে। করদাতাদের কোটি কোটি টাকা এতে নষ্ট হয়েছে।’ বিজেপি আরো বলেছে, ‘আরো যে ইস্যুতে কংগ্রেস সংসদ অচল করেছে, সেটা হলো পেগাসাস। ওই সময় রাহুল গান্ধী কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারতকে লক্ষ্য করে আক্রমণ শানিয়েছেন।’

বিজেপির দাবি, ‘আদানি এবং পেগাসাস ইস্যুতে একটি সূত্র হলো ওসিসিআরপি। এটি ইউরোপভিত্তিক একটি সংবাদসংস্থা। এর থেকেই বোঝা যায়, ভারতের বিরুদ্ধে প্রচারের ক্ষেত্রে কংগ্রেস এবং ওসিসিআরপি-এর মধ্যে যোগ আছে। ২০২১-২০২২ সালে ওসিসিআরপি একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে পেগাসাস ইস্যুতে। সংসদ অধিবেশনের আগে মোদি সরকারকে আক্রমণ শানিয়ে ওই সব প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছিল। কংগ্রেস ওই সব প্রতিবেদনকে হাতিয়ার করেছিল সংসদ অচল করতে। ২০২৩ সাল থেকে ওসিসিআরপি আদানি ইস্যুতে পাঁচ থেকে সাতটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। বিশ্বে এত বহুজাতিক সংস্থা থাকতেও আদানির ওপরই ফোকাস করে থেকেছে তারা। এর আগে পুতিনের বিরুদ্ধে একই কাজ করেছিল তারা।

এরপরই গোটা কংগ্রেস আদানি ইস্যুতে নড়েচড়ে বসে এবং ওসিসিআরপি-এর সেই সব প্রতিবেদনকে হাতিয়ার করে আদানি, প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং ভারতকে আক্রমণ শানিয়েছে। ওসিসিআরপি ক্রমাগত কংগ্রেসকে নানা ইস্য়ুতে সমর্থন করে গিয়েছে। তাদের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তাতেই স্পষ্ট। ওসিসিআরপি বারবার হাতিয়ার তুলে দিয়েছে কংগ্রেসের হাতে, এবং সেটা ব্যবহার করে তারা বিজেপি এবং ভারতকে আক্রমণ করেছে।’

সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস

সর্বশেষ সংবাদ

চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে একই গ্রুপে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান

ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্বের কারণে এখনো প্রকাশ পায়নি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সূচি। তবে ইএসপিএন ক্রিকইনফো প্রকাশ করেছে তার রূপরেখা। যেখানে দেখা যাচ্ছে,...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ