দক্ষিণ আফ্রিকায় পূর্ণাঙ্গ সফরে তিন ফরম্যাটের জন্য শক্তিশালী দল ঘোষণা করেছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। ঘোষিত দলে চমক ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে দুর্দান্ত বল করে সিরিজ সেরা হওয়া স্পিনার সাজিদ খানের ছিটকে যাওয়া।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুরে দল ঘোষণা করে পিসিবি।
এছাড়া টেস্ট দলে জায়গা হয়নি পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদির। তবে তাকে রাখা হয়েছে ওয়ানডে ও টি টোয়েন্টি সিরিজে। তবে ঘোষিত দলে ফিরেছেন সাবেক অধিনায়ক বাবর আজম।
ঘরের মাঠে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পাকিস্তানের ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজ জয়ে বল হাতে বড় ভূমিকার রাখেন সাজিদ। সিরিজের ১৯ উইকেট তুলে নেন তিনি। যদিও খেলেছেন মাত্র দুই ম্যাচ।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ঘরের মাঠে তিন টেস্টের সিরিজের শেষ দুটিতে পাকিস্তানের বোলিং মানেই নোমান আলী ও সাজিদ। দুই টেস্ট মিলিয়ে টানা ৮৯.৫ ওভার বোলিং করে বিশ্বরেকর্ডও গড়েন তারা। এমনটি শেষ দুই টেস্টে ইংল্যান্ডের ৪০ উইকেটের ৩৯টিই তুলে নিয়েছেন এই দুই স্পিনার। তবে সাজিদ না থাকলেও টেস্ট স্কোয়াডে রয়েছেন বাঁহাতি স্পিনার নোমান আলী।
তবে সাজিদের বাদ পড়ার পেছনে মূল কারণ কন্ডিশন। কেননা দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে পাকিস্তান যে টেস্ট খেলবে সেঞ্চুরিয়ান ও কেপটাউনে। এ দুই মাঠের পিস সাধারণত পেস নির্ভর। টেস্টে সেঞ্চুরিয়নের শীর্ষ ১০ উইকেট সংগ্রাহকের একজনও স্পিনার নেই। সর্বোচ্চ উইকেট ডেল স্টেইনের (৫৯)। কেপটাউনেও সর্বোচ্চ পাঁচ উইকেট সংগ্রাহকের সবাই পেসার।
দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের তিন সংস্করণের দলে বাবর ছাড়াও রয়েছেন মোহাম্মদ রিজওয়ান, সাইম আইয়ুব, সালমান আগা। নাসিম শাহ আছেন টেস্ট ও ওয়ানডে দলে। টেস্ট দলে আফ্রিদিকে না রাখার ব্যাখ্যায় তার ওয়ার্ক লোড ম্যানেজমেন্টের কথা জানিয়েছে পিসিবি। এ ছাড়া ২০২১ সালের পর টেস্ট দলে ফিরেছেন পেসার মোহাম্মদ আব্বাস।
নির্বাচক কমিটির সদস্য ও অন্তর্বর্তী সাদা বলের প্রধান কোচ আকিব জাভেদ বলেন, আমরা পরিস্থিতি অনুযায়ী দল নির্বাচন করেছি যাতে তিনটি দলই ভারসাম্যপূর্ণ হয় এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় শক্তিশালী পারফর্ম করতে পারে।
তিনি আরও বলেন, সাজিদ খানকে বাদ দেয়া কঠিন সিদ্ধান্ত ছিল, তবে সেঞ্চুরিয়ান ও কেপটাউনের পেস-বান্ধব কন্ডিশন এবং মোহাম্মদ আব্বাসের নিখুঁত সিম বোলিং দক্ষতা বিবেচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
আকিব জাভেদ বলেন, শাহীন শাহ আফ্রিদিকে টেস্ট দল থেকে বাদ দেয়া কৌশলগত সিদ্ধান্ত, যাতে তিনি ২০২৫ সালের আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির জন্য মানসিক ও শারীরিকভাবে সতেজ থাকতে পারেন।
টি-টোয়েন্টি দিয়ে শুরু হবে পাকিস্তান দক্ষিণ আফ্রিকা সফর। ১০ ডিসেম্বর পাকিস্তানের প্রথম টি-টোয়েন্টি, সিরিজ শেষ হবে ৩ জানুয়ারিতে শুরু হওয়া কেপটাউন টেস্ট দিয়ে।
টি টোয়েন্টি সিরিজ
প্রথম ম্যাচ: ১০ ডিসেম্বর, ডারবান
দ্বিতীয় ম্যাচ: ১২ ডিসেম্বর, ডারবান
তৃতীয় ম্যাচ: ১৪ ডিসেম্বর, প্রিটোরিয়া
ওয়ানডে সিরিজ
প্রথম ম্যাচ: ১৭ ডিসেম্বর, পার্ল
দ্বিতীয় ম্যাচ: ১৯ ডিসেম্বর, কেপটাউন
তৃতীয় ম্যাচ: ২১ ডিসেম্বর, প্রিটোরিয়া
টেস্ট সিরিজ
প্রথম টেস্ট: ২৬-৩০ ডিসেম্বর, সেঞ্চুরিয়ান
দ্বিতীয় টেস্ট: ৩-৭ জানুয়ারি, কেপটাউন
টি টোয়েন্টি সিরিজের দল-
শান মাসুদ (অধিনায়ক), সৌদ শাকিল, আমের জামাল, আব্দুল্লাহ শফিক, বাবর আজম, হাসেবুল্লাহ, কামরান গুলাম, খুররাম শাহজাদ, মীর হামজা, মোহাম্মদ আব্বাস, মোহাম্মদ রিজওয়ান, নাসিম শাহ, নোমান আলী, সাইম আইয়ুব ও সালমান আলী আঘা।
ওয়ানডে সিরিজের দল-
মোহাম্মদ রিজওয়ান (অধিনায়ক), আব্দুল্লাহ শফিক, আবরার আহমেদ, বাবর আজম, হারিস রউফ, কামরান গুলাম, মোহাম্মদ হাসনাইন, মোহাম্মদ ইরফান খান, নাসিম শাহ, সাইম আইয়ুব, সালমান আলী আঘা, শাহিন শাহ আফ্রিদি, সুফিয়ান মুকিম, তাইয়্যেব তাহির ও উসমান খান।
টেস্ট সিরিজের দল-
মোহাম্মদ রিজওয়ান (অধিনায়ক), আবরার আহমেদ, বাবর আজম, হারিস রউফ, জাহানদাদ খান, মোহাম্মদ আব্বাস আফ্রিদি, মোহাম্মদ হাসনাইন, মোহাম্মদ ইরফান খান, ওমর বিন ইউসুফ, সাইম আইয়ুব, সালমান আলী আঘা, শাহিন শাহ আফ্রিদি, সুফিয়ান মুকিম, তাইয়্যেব তাহির ও উসমান খান।