আজকের সমীকরণটা এমন ছিলো, যে দল জিতবে তারাই মৌসুমের প্রথম ট্রফি জিতবে। এমন সমীকরণে খেলতে নেমে পিছিয়ে থেকেও বাজিমাত করেছে বসুন্ধরা কিংস। প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হওয়া চ্যালেঞ্জ কাপে ৩-১ ব্যবধানে মোহামেডানকে হারিয়েছে বসুন্ধরা।
বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এক ম্যাচের এক টুর্নামেন্ট হয়েছে। টুর্নামেন্টের নামটি এসেছে ছাত্র-জনতা গণঅভ্যুত্থানের আন্দোলন থেকে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে জীবন উৎসর্গ করা শহীদদের উদ্দেশেই চ্যালেঞ্জ কাপের নাম ‘বাংলাদেশ ২.০’ রাখা হয়েছে।
শহীদদের স্মরণে গতকাল বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনাকেও সাজানো হয়েছিলো আবু সাঈদ ও মীর মুগ্ধদের গ্রাফিতিতে। সঙ্গে আন্দোলনের স্লোগানগুলোও জায়গা পেয়েছে ওপরের গ্যালারির ওয়ালে।
বসুন্ধরা অ্যারেনায় অবশ্য শুরুটা মোহামেডানই করেছিলো। ৭ মিনিটে সুলেমান দিয়াবাতের গোলে এগিয়ে যায় তারা। ইমানুয়েল সানডের দারুণ ক্রসটিতে শুধু মাথাটাই লাগিয়েছেন মোহামেডানের অধিনায়ক দিয়াবাতে।
যদিও বিরতির পর দারুণ এক প্রত্যাবর্তন করে বসুন্ধরা। সমতায় ফিরতে ৫৮ মিনিটে দারুণ এক সুযোগ পেয়েছিলেন ফয়সাল আহমেদ ফাহিম। কিন্তু বাঁ প্রান্ত থেকে যে শটটি তিনি নিলেন তা ডান পোস্টের বাইরে মারেন। এর কিছুক্ষণ পরেই গ্যালারি থেকে ফ্লেয়ার ছুঁড়ে মারেন দর্শকেরা। গোলাপি রংয়ের ঝাঁজের কারণে কিছুটা সময় ম্যাচ বন্ধ থাকে। ইউরোপীয় ফুটবলে এমন দৃশ্য সচরাচর দেখা গেলেও বাংলাদেশে দেখা যায় না। বিরতির এই সময়টায় যেন কোচ ভ্যালেরি তিতার সঙ্গে নিজেদের কৌশলটা আরেকটু ভালোভাবে সেরে নেয় বসুন্ধরার খেলোয়াড়রা।
যার ফলও পায় ৭৩ মিনিটে। মিগেল দামাশেনোর কর্নার থেকে বসুন্ধরাকে সমতায় ফেরান তপু বর্মণ। একদম ফ্রি খেলোয়াড় হিসেবে কর্নার কিকের বলে শুধু পা লাগিয়ে দেন এই ডিফেন্ডার। সমতায় ফেরার পর উজ্জীবিত বসুন্ধরা এগিয়েও যায় ৮১ মিনিটে। ডান প্রান্ত থেকে বসুন্ধরার অধিনায়ক দামাশেনোর বাড়ানো ক্রসে অনেকটা উড়ে এসে ডান পায়ে বল জালে জড়িয়ে দিলেন ফাহিম। জয়সূচক গোলের পর তার উদযাপনও ছিল দেখার মতো। পাগলাটে এক দৌড়ে কোচ তিতার কাছে চলে যান তিনি।
এরপর ম্যাচের যোগ করা অতিরিক্ত ১৮ মিনিট সময়ে সময়ে মোহামেডানের কামব্যাকের স্বপ্নকে ধূলিসাৎ করেন দেন দামাশেনো। অতিরিক্ত সময়ের সপ্তম মিনিটে দারুণ এক গোল করেন ম্যাচে দুই অ্যাসিস্ট করা ব্রাজিলিয়ান এই প্লে মেকার। এরপর আর কোনো গোল শোধ দিতে পারেনি মোহামেডান। আর শেষ বাঁশি বাজার সাথে উল্লাসে ফেটে পড়েন গ্যালারিভর্তি বসুন্ধরার ভক্ত-সমর্থকরা।