প্রথম ম্যাচে বাজেভাবে হারের ক্ষত ভুলে আফগানিস্তানের বিপক্ষে তিন ওয়ানডে সিরিজে সমতা আনার লক্ষ্য নিয়ে আজ দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় বিকেল ৪টায় শুরু হবে সিরিজের ম্যাচটি।
ব্যাটারদের ব্যর্থতায় সিরিজের প্রথম ওয়ানডে ৯২ রানে হারে বাংলাদেশ। ব্যাটিং বিপর্যয়ের কারণে মাত্র ২৩ রানে শেষ আট উইকেট হারায় টাইগাররা। বাংলাদেশের এমন ব্যাটিং বিপর্যয় নতুন কিছু না। কিন্তু এমন চিত্র দিন-দিন দীর্ঘ হচ্ছে। এই অবস্থা থেকে বাংলাদেশ ঘুড়ে দাঁড়াবে বলে বিশ্বাস করে না দেশের ক্রিকেটপ্রেমিরা।
প্রথম ম্যাচে হারটি মানসিক বিপর্যয়ের জন্য হয়নি বলে মনে করেন দলের অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান মিরাজ।
গতকাল শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সাংবাদিকদের মিরাজ বলেন, ‘একটি খারাপ ম্যাচ আমাদের রাতারাতি খারাপ দলে পরিণত করবে না। আমরা আফগানিস্তানের বিপক্ষে অনেক ম্যাচ জিতেছি, বিশেষ করে ওয়ানডে ফরম্যাটে। এই ফরম্যাটে আমরা বেশ শক্তিশালী দল। আমরা বিশ্বকাপে ও দ্বিপক্ষীয় সিরিজে তাদের হারিয়েছি।’
তবে ব্যর্থতার বৃত্তে থাকা টপ অর্ডাররা জ্বলে উঠায় ভালো অবস্থায় থাকার পরও ম্যাচ হারের হতাশা তাড়া করবে বাংলাদেশকে।
২৩৬ রানের টার্গেটে ওপেনার তানজিদ হাসান তামিমকে দ্রুত হারানোর পর ২ উইকেটে ১২০ রান করে শক্ত অবস্থায় ছিল বাংলাদেশ। কিন্তু এরপরই আফগানিস্তানের তরুণ অফ-স্পিনার মোহাম্মদ গজানফারের ঘূর্ণি সামলাতে না পেয়ে অসহায় আত্মসমর্পণ করে টাইগাররা।
মিরাজ বলেন, ‘আমরা নিজেদের মাটিতে আফগানদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ম্যাচ জিতেছি। এমনকি আগেও তাদের বিপক্ষে সিরিজও জিতেছি। তাই প্রথম ম্যাচে হারের মানে এই নয়, সবকিছু শেষ হয়ে গেছে এবং আমরা ঘুড়ে দাঁড়াতে পারবো না। আশা করি, আমরা দারুণভাবে ফিরে আসবো।’
প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের কাছে হারের জন্য পিচের আচরণকে দায়ী করেছেন মিরাজ। তিনি বলেন, ‘পিচ থেকে আমরা যা আশা করেছিলাম তা হয়নি। কিন্তু একই সাথে দায়িত্ব নেয়াও জরুরি। ব্যাটার হিসেবে আমরা স্বীকার করছি, আমরা দায়িত্ব নিতে পারিনি।’
সিরিজের বাজে শুরুর পাশাপাশি আঙুলের ইনজুরির কারণে দলের সেরা ব্যাটার মুশফিকুর রহিমকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। ইনজুরির কারণে সিরিজের বাকি দুই ওয়ানডে থেকে ছিটকে গেছেন মুশি। যদিও ফর্মে ছিলেন না তিনি। তবে দলে তার উপস্থিতি বাড়তি অভিজ্ঞতা যোগ করেছিল। বিশেষ করে যখন সাকিব আল হাসান বা তামিম ইকবালের মতো ক্রিকেটাররা দলে নেই।
সিরিজের প্রথম ম্যাচ হেরে যাবার পরও, আফগানিস্তানের বিপক্ষে মুখোমুখি লড়াইয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ। ১৭টি ম্যাচের মধ্যে ১০টি জয়ী এবং ৭টিতে হেরেছে টাইগাররা।
গত বছরের জুলাইয়ের আফগানিস্তানের কাছে ২-১ ব্যবধানে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে সিরিজ হেরেছিল বাংলাদেশ। ওই হারের আগ পর্যন্ত দ্বিপক্ষীয় সিরিজে আফগানিস্তানের বিপক্ষে দুর্দান্ত রেকর্ড ছিল টাইগারদের।
নিজেদের পছন্দের ফরম্যাটে সিরিজ হেরে যাওয়ায় বাংলাদেশের ক্রিকেটে অনেকটাই বাজে অধ্যায়ের সূচনা হয়।
দ্বিতীয় ম্যাচে চাপে থাকবে বাংলাদেশ। কারণ এ ম্যাচও হেরে গেলে আফগানদের কাছে টানা দ্বিতীয়বারের মতো সিরিজ হারবে টাইগাররা।
ইতোমধ্যে দলের সাথে যোগ দিয়েছেন ভিসা জটিলতায় সফরের শুরু থেকে দলের সাথে না থাকা বাঁ-হাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ এবং পেসার নাহিদ রানা।
ইনজুরিতে ছিটকে যাওয়া মুশফিকুরের বদলি এখনো জানায়নি বাংলাদেশ। যদিও তার জায়গায় পরিবর্তন হওয়া স্বাভাবিক। ‘ডু অর ডাই’ ম্যাচে টাইগার একাদশে এক বা দু’টি পরিবর্তন আসতে পারে ।
বাংলাদেশ দল : নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), মেহেদি হাসান মিরাজ (সহ-অধিনায়ক), সৌম্য সরকার, তানজিদ হাসান তামিম, জাকির হাসান, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, তাওহিদ হৃদয়, জাকের আলি অনিক, রিশাদ হোসেন, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম ও নাহিদ রানা।
আফগানিস্তান দল : হাশমতুল্লাহ শাহিদি (অধিনায়ক), রহমত শাহ, রহমানউল্লাহ গুরবাজ, ইকরাম আলিখিল, আবদুল মালিক, রিয়াজ হাসান, সেদিকুল্লাহ আতাল, দরবেশ রাসুলি, আজমতুল্লাহ ওমরজাই, মোহাম্মদ নবি, গুলবাদিন নাইব, রশিদ খান, নাঙ্গিয়াল খারোতি, এএম গাজানফর, নূর আহমেদ, ফজলহক ফারুকি, বিলাল সামি, নাভিদ জাদরান ও ফরিদ আহমদ মালিক।