spot_img

হোয়াইট হাউস নিয়ে যতো অজানা তথ্য

অবশ্যই পরুন

ওয়াশিংটন ডিসি নাম শুনলেই চোখে ভেসে উঠে ধবধবে সাদা ভবন হোয়াইট হাউস। ১৬০০ পেনসিলভানিয়া অ্যাভিনিউতে অবস্থিত চারতলা এই ভবনটি ঘিরেই চলে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর দেশ আমেরিকার রাজনীতি। প্রায় ৫৫ হাজার বর্গফুটের এই ভবনেই আছে মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রধান দপ্তর। চার বছর পরপর নির্বাচনের মধ্যদিয়ে ক্ষমতার পালাবদল হয় হোয়াইট হাউজে।

৬০তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইতোমধ্যে প্রায় সব অঙ্গরাজ্যের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। ভোট গণনাও শেষের দিকে। তবে এরমধ্যেই অধিকাংশ অঙ্গরাজ্যগুলো থেকে ফলাফলও এসেছে। এখন পর্যন্ত ঘোষিত ফলাফলে প্রেসিডেন্ট হিসেবে জয়ের দ্বারপ্রান্তে আছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ও দেশটির ৪৫তম প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আনুষ্ঠানিক ফলাফলে জয় পেলে আবারও ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার দখলে থাকবে হোয়াইট হাউস। তবে ধবধবে সাদা এই ভবনটির এমন কিছু ইতিহাস রয়েছে, যা জানলে যে কেউ অবাক হবেন। চলুন তাহলে একনজরে জেনে নেই অজানা এসব তথ্য।

১৯০১ সালের আগ পর্যন্ত হোয়াইট হাউস পরিচিত ছিল ভিন্ন নামে

বর্তমান হোয়াইট হাউস ১৮০০ সাল থেকেই মার্কিন প্রেসিডেন্টদের অফিশিয়াল বাসভবন ছিল। শুরু থেকে এটি ‘দ্য প্রেসিডেন্টস হাউস’ বা ‘দ্য প্রেসিডেন্টস ম্যানশন’ নামে পরিচিত ছিল। তবে ১৯০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ২৬তম প্রেসিডেন্ট থিয়োডর রুজভেল্ট প্রমবারের মতো সরকারিভাবে ভবনটির নাম দেন হোয়াইট হাউস।

অবশ্য কেউ কেউ দাবি করেন, ১৮১৪ সালের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের পর হোয়াইট হাউস নামটি আলোচনায় আসে। সে সময় ধোঁয়ায় দাগযুক্ত দেয়ালগুলোতে সাদা রং করা হয়। যদিও ঐতিহাসিকেরা বলেন, এমন দাবি ভিত্তিহীন।

প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট থাকেননি হোয়াইট হাউসে

প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটন ১৭৯১ সালে যে জায়গায় হোয়াইট হাউস তৈরি হবে সেটি নির্বাচনের পাশাপাশি অনুমোদন করেন এর চূড়ান্ত নকশা। পরবর্তীকালে ১৭৯২ সালের ১৩ অক্টোবর হোয়াইট হাউসের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পাশাপাশি এর নির্মাণকাজ শুরু হয়।

এদিকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে জর্জ ওয়াশিংটনের মেয়াদ ১৯৯৭ সালে শেষ হয়। এর দু’বছর পর (১৭৯৯) সালে মারা যান তিনি। ফলে কখনো হোয়াইট হাউসে বসবাসের সুযোগ পাননি তিনি। অথচ মজার বিষয় হলো- হোয়াইট হাউস যে শহরে অবস্থিত তার নামকরণ হয় জর্জ ওয়াশিংটনের নামেই। অন্যদিকে ১৭৮০ সালে প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে জন অ্যাডামস হোয়াইট হাউসে বসবাস শুরু করেন।

হোয়াইট হাউসের নিজেদের সংস্করণ তৈরি করে ফিলাডেলফিয়া

মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রসাদস্বরূপ দালানটি সে সময়ের নতুন শহর ওয়াশিংটনে তৈরি হবে এতে মোটেও খুশি ছিল না পেনসিলভানিয়ার অপর শহর ফিলাডেলফিয়া। ১৭৯০ এর দশকে জর্জ ওয়াশিংটন ও অন্যদের নিজেদের শহরের প্রতি প্রলুব্ধ করতে ফিলাডেলফিয়াতে প্রেসিডেন্টের জন্য শহরটির নিজস্ব প্রাসাদ তৈরি করা হয়েছিল। সে সময় শহরটি অস্থায়ী রাজধানী ছিল। তবে সেখানে থাকতে অস্বীকৃতি জানিয়ে ফিলাডেলফিয়ার অন্য জায়গায় থাকেন ওয়াশিংটন।

অগ্নিকাণ্ডের পর মূল হোয়াইট হাউসের সামান্যই অবশিষ্ট আছে

মার্কিন বাহিনী ১৮১৪ সালে কানাডার পার্লামেন্টে আগুন দেয়ার পর আসল হোয়াইট হাউস পুড়িয়ে দেয় ব্রিটিশরা। তবে ওই সময় জর্জ ওয়াশিংটনের বিখ্যাত গিলবার্ট স্টুয়ার্ট পেইন্টিং সংরক্ষণ করা সম্ভব হয়। এছাড়া বাইরের কিছু পাথরের দেয়ালই কেবল আগুন থেকে রক্ষা পেয়েছিল।

হোয়াইট হাউসকে ঝকঝকে রাখতে প্রয়োজন হয় ৩ টন রং

ঐতিহাসিক সব ভবনের ন্যায় নতুনের মতো ঝকঝকে রাখতে হোয়াউট হাউসকে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন হয়। তবে পুরো ভবনটি ঝকঝকে রাখতে যে পরিমাণ রং লাগে তা জানলে যে কেউ চমকে উঠবেন। ধবধবে সাদা ভবনটিতে চমক ধরে রাখতে প্রয়োজন হয় ৫৭০ গ্যালন বা তিন টন রং। এরমধ্যে শুধু বাসভবনের অংশটি রং করতে ৩০০ গ্যালন রং প্রয়োজন হয়।

আয়তনও বিশাল

দূর থেকে দেখলে সঠিক আয়তন বোঝার উপায় না থাকলেও আসলে হোয়াইট হাউস কিন্তু বিশাল একটি দালান। লম্বায় এটি ১৬৮ ফুট এবং চওড়ায় ৮৫ ফুট। এরমধ্যে দক্ষিণ অংশের উচ্চতা ৭০ ফুট আর উত্তর অংশের উচ্চতা ৬০ ফুট ৪ ইঞ্চি। সবমিলিয়ে ১৮ একর জায়গাজুড়ে রয়েছে হোয়াইট হাউস ও এর বিশাল এলাকা।

অন্যদিকে হোয়াইট হাউসের মোট ছয়টি স্তরে এতে ১৩২টি কামরা ও ৩২টি বাথরুম রয়েছে। এছাড়া হোয়াইট হাউসে ৪১২টি দরজা, ১৪৭টি জানালা ছাড়াও ২৮টি ফায়ারপ্লেস রয়েছে। অন্যদিকে আটটি সিঁড়ি ছাড়াও এতে তিনটি এলিভেটর রয়েছে।

ধসের আশঙ্কায় মুছে যাওয়ার দ্বারপ্রান্তে ছিল হোয়াইট হাউস

ধবধবে সাদা হোয়াইট হাউস ১৯৪৮ সালে ব্যবহারের অযোগ্য বলে ঘোষণার দ্বারপ্রান্তে চলে গিয়েছিল। সে সময় প্রকৌশলীরা আবিষ্কার করেছিলেন হোয়াইট হাউস কাঠামোগতভাবে ভালো অবস্থায় নেই। সেই সঙ্গে এটি প্রায় ধসে পড়ার কাছাকাছি পর্যায়ে চলে গিয়েছিল। যার ফলে ৩৩তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হ্যারি এস ট্রুম্যানকে বাধ্য হয়ে হোয়াইট হাউস থেকে বের হয়ে প্রেসিডেন্টের গেস্ট হাউস ব্লেয়ার হাউসে বসবাস করতে হয়েছিল। পরবর্তীতে তার নেতৃত্বেই হোয়াইট হাউসের ব্যাপক সংস্কার ছাড়াও এর পুনরুদ্ধারে প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। যা শেষ হয় ১৯৫২ সালে।

‘ভুতুড়ে’ হোয়াইট হাউস

একাধিক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ছাড়াও ফার্স্ট লেডি, কর্মচারী ও অতিথিরা বিভিন্ন সময়ে হোয়াইট হাউসের বিভিন্ন কামরায় ভূত দেখার কথা জানিয়েছেন। দ্বিতীয় মার্কিন রাষ্ট্রপতি জন অ্যাডামসের স্ত্রী অ্যাবিগেল অ্যাডামসের ভূতকে ইস্ট রুমের দিকে যেতে দেখা গেছে, যেখানে তিনি নিজের কাপড় ঝুলিয়ে রাখতেন।

তবে ভবনটির সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ভূত যুক্তরাষ্ট্রের ১৬তম প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন। কুলিজ, জনসন ও রুজভেল্ট প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় তাদের স্ত্রীরা আব্রাহাম লিংকনের ভূত দেখার দাবি করেছিলেন। এমনকি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিলও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় হোয়াইট হাউসে থাকার সময় আব্রাহাম লিংকনের ভূত দেখার কথা জানিয়েছিলেন।

সর্বশেষ সংবাদ

কোনো নিরীহ মানুষ যেন হয়রানির শিকার না নয়: আইজিপি

পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) বাহারুল আলম বলেছেন, ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে দায়ের করা মামলাসমূহ যথাযথভাবে তদন্ত করতে হবে। কোনো...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ