আফগানিস্তানের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো দেশের বাইরে দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ দল। আফগানদের বিপক্ষে নিরপেক্ষ ভেনু্যতে ওয়ানডে ফরম্যাটে টাইগারদের অতীত রেকর্ড অনেককেই আশাবাদী করবে। কিন্তু আসন্ন সিরিজের ভেনু্য শারজাহ। যেখানে আফগানিস্তান এক কথায় অপ্রতিরোধ্য। এই সিরিজের সামনে ম্যাচের ভেনু্য আছে দারুণ এক রেকর্ডের অপেক্ষায়।
ক্রিকেটের বহু ঐতিহাসিক ঘটনা আর ম্যাচের সাক্ষী হয়ে আছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়াম। ভারত-পাকিস্তানের অনেক ঐতিহাসিক দ্বৈরথ দেখেছে এই স্টেডিয়াম। নব্বইয়ের দশকের শুরু থেকে আজ পর্যন্ত শারজাহ স্টেডিয়াম মানেই যেন ক্রিকেটের এক অনন্য উপাখ্যান। প্রথমবারের মতো আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে ফরম্যাটে বাংলাদেশের অ্যাওয়ে সিরিজের আয়োজক হচ্ছে শারজাহ।
শারজাহ স্টেডিয়ামে বাংলাদেশের স্মৃতি অবশ্য খুব একটা ভালো নয়। ১৯৯৫ সালে সবশেষ এখানে ওয়ানডে খেলেছিল টাইগাররা। ৬ ওয়ানডে খেলায় জয় নেই একটি ম্যাচেও। আজ বুধবার আফগানিস্তানের বিপক্ষে নামবে সেই বিব্রতকর রেকর্ড ঘুচাতে। ২৯ বছর পর এই মাঠে ওয়ানডে ফরম্যাটে খেলতে নামবে বাংলাদেশ। মাঝে টি২০ খেললেও অবশ্য তাতে জয়ের দেখা পায়নি টাইগাররা।
তবে এরইসঙ্গে একটা রেকর্ডেও সাক্ষী হচ্ছে বাংলাদেশ। বিশ্বের প্রথম ভেনু্য হিসেবে আজ শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মাঠে অনুষ্ঠিত হবে ৩০০তম আন্তর্জাতিক ম্যাচ। সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডও ৩০০’র মাইলফলক স্পর্শের খুব কাছেই আছে। তবে শারজার নামটা থাকছে সবার প্রথমে।
কদিন আগেই দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আফগানিস্তানের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচ দিয়ে ইতিহাস গড়েছিল এই স্টেডিয়াম। সেই ম্যাচ ছিল শারজাহ স্টেডিয়ামে ২৫০তম ওয়ানডে ম্যাচ। একদিনের ক্রিকেটে আগে থেকেই সবচেয়ে বেশি ম্যাচ আয়োজনের রেকর্ড ছিল এই মাঠে। দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচ তাতে যোগ করে নতুন মাত্রা।
আফগানিস্তান বেশ লম্বা সময় ধরেই শারজায় ক্রিকেট খেলে আসছে। স্বাভাবিকভাবেই এ মাঠ সম্পর্কে তাদের ভালো ধারণা হয়ে গেছে। যার সুফলও তারা পাচ্ছে। সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আফগানিস্তান প্রথম দ্বিপাক্ষিক সিরিজ জিতেছে এ মাঠেই। অতীতে হারিয়েছে জিম্বাবুয়ে-আয়ারল্যান্ডকেও।
এবার বাংলাদেশ সাক্ষী হচ্ছে সবমিলিয়ে শারজাহ স্টেডিয়ামের ৩০০তম আন্তর্জাতিক ম্যাচের। ১৯৮৪ সালে আরব আমিরাতের শিল্পনগরী শারজাহতে ওয়ানডে ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা বিবেচনায় তৈরি করা হয় শারজাহ ক্রিকেট স্টেডিয়াম। এর ছয় বছর পর, ১৯৯০ সালে এশিয়া কাপ দিয়ে এ মাঠে অভিষেক হয় বাংলাদেশের। আরব আমিরাতে থাকা প্রবাসী দর্শকের সুবাদে দ্রম্নতই জনপ্রিয়তা পেতে থাকে এই স্টেডিয়াম। শতবর্ষী অনেক স্টেডিয়ামের তুলনায় অনেক বেশি ম্যাচ আয়োজন করেছে শারজাহ স্টেডিয়াম। বিশ্বের একমাত্র স্টেডিয়াম হিসেবে ২০০ ওয়ানডে ম্যাচের আয়োজক এই মাঠ।
২৯ বছর পর শারজাহর এই মাঠে খেলতে গিয়ে প্রতিপক্ষ হিসেবে শক্ত এক দলকেই পাচ্ছে বাংলাদেশ। সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আফগানিস্তান প্রথম দ্বিপাক্ষিক সিরিজ জিতেছে এ মাঠেই। অতীতে হারিয়েছে জিম্বাবুয়ে আর আয়ারল্যান্ডকেও।
২০১৭ সালের পর শারজায় খেলা কোনো সিরিজ হারেনি রশিদ খানরা। গেল দেড় দশকে আফগানরা মোট ৫৩টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছে শারজায়। যার ৬৬ শতাংশ ম্যাচেই জয়ী হয়েছে গেল টি২০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালিস্টরা।
৩০০ আন্তর্জাতিক ম্যাচের এই যাত্রায় ২০১৮ সালে আইসিসি বিশ্বকাপ, ২০২১ সালের টি২০ বিশ্বকাপ, ২০০৪ সালের আইসিসি ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপের আয়োজক ছিল এই স্টেডিয়াম। বাংলাদেশ থেকে রাজনৈতিক কারণে সরিয়ে নেওয়া ২০২৪ সালের নারী টি২০ বিশ্বকাপের ম্যাচও হয়েছে এই স্টেডিয়ামে। ২০১০ সালে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডেও উঠেছিল এই স্টেডিয়ামের নাম।