জলবায়ু পরিবর্তনের কুপ্রভাব দূর করতে দ্রুত কার্বন নির্গমন কমানোর উদ্যোগ নিচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন৷ সদস্য দেশগুলির পাশাপাশি রাষ্ট্রজোট হিসেবে ইইউ-ও নির্গমন পুরোপুরি বন্ধ করার উদ্যোগ নিচ্ছে৷ যেমন ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নির্গমন ১৯৯৯ সালের তুলনায় কমপক্ষে ৫৫ শতাংশ কমানোর লক্ষ্যমাত্রা স্থির করার চেষ্টা চলছে৷ শুধু যানবাহনের ক্ষেত্রে জীবাশ্মভিত্তিক জ্বালানির ব্যবহার বন্ধ করলেই চলবে না, বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কয়লার উপরও নির্ভর করলে চলবে না৷ এমন বিশাল চ্যালেঞ্জের দায়দায়িত্ব ও ব্যয়ভার নিয়ে মঙ্গলবার আলোচনায় বসছেন ইইউ শীর্ষ নেতারা৷
আগামী জুলাই মাসে ইইউ কমিশন জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার লক্ষ্যে একাধিক প্রস্তাব প্রকাশ করতে চলেছে৷ অর্থের বিনিময়ে কার্বন নির্গমনেরর দায়মুক্ত হতে প্রতিষ্ঠিত বাজারের সংস্কার থেকে শুরু করে যানবাহনের জন্য আরও কড়া মানদণ্ডের মতে পদক্ষেপ স্থির করতে চায় ইইউ৷ তবে ২৭টি সদস্য দেশের মধ্যে ঐকমত্য অর্জন করা কঠিন হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে৷
মঙ্গলবারের ইইউ শীর্ষ সম্মেলনে গোটা উদ্যোগের খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে৷ একটি খসড়া অনুযায়ী এ ক্ষেত্রে দায় দায়িত্বের ন্যায্য বণ্টন নিশ্চিত করতে সদস্য দেশগুলির গড় জাতীয় আয় অনুযায়ী লক্ষ্যমাত্রা স্থির করে দেবার ব্যবস্থা প্রয়োগ করার প্রস্তাব রয়েছে৷ তা না হলে অপেক্ষাকৃত দরিদ্র দেশগুলির উপর বাড়তি চাপ পড়ার আশঙ্কা রয়েছে৷
তবে ২০৩০ সালের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে হলে সব দেশকেই দ্রুত বেশ কিছু জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে৷ সে সব পদক্ষেপ কার্যকর করতে হলে অর্থনৈতিক ও সামাজিক ধাক্কার কথা ভাবতে হবে৷ অপেক্ষাকৃত দরিদ্র নাগরিকদের উপর আর্থিক বোঝা দূর করতে সরকারকে ভরতুকিসহ নানা সহায়তা দিতে হবে৷ সেই অর্থ জোগানের বিষয়টি নিয়েও শীর্ষ নেতাদের আলোচনা করতে হবে৷
এক ঢিলে দুই পাখি মারতে করোনা সংকট মোকাবিলার জন্য গঠিত ৭৫ হাজার কোটি ইউরো মূল্যের তহবিলও কাজে লাগানোর চেষ্টা চলছে৷ সেই অর্থ দিয়ে শুধু পরিবেশবান্ধব ও ভবিষ্যতমুখী প্রকল্প ও উদ্যোগ চালানোর লক্ষ্যমাত্রা আগেই স্থির করা হয়েছিল৷ তবে সেইসঙ্গে অর্থায়নের অন্যান্য উৎসও নিশ্চিত করতে চায় কয়েকটি দেশ৷ যেমন পোল্যান্ড ও চেক প্রজাতন্ত্র আধুনিকীকরণের জন্য আলাদা তহবিলের ডাক দিচ্ছে৷
জার্মানি ইউরোপীয় ইউনিয়নের উদ্দেশ্যে এক ‘ক্লাইমেট ক্লাব’ গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ক্যানাডা, জাপান এবং সম্ভব হলে চীনকে সঙ্গে নিয়ে এমন কাঠামো সৃষ্টি করে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সংঘাত এড়ানো সহজ হবে বলে মনে করছে জার্মানি৷ সীমান্তে কার্বনের উপর শাস্তিমূলক শুল্ক চাপানোর পরিকল্পনা কার্যকর করতে এমন সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার উল্লেখ করেছেন জার্মানির অর্থমন্ত্রী ওলাফ শলৎস৷ তার মতে, এর ফলে প্রতিযোগিতার বাজারে ইউরোপ ও অ্যামেরিকার কোম্পানিগুলিকে সমস্যায় পড়তে হবে না৷
সূত্র: ডয়েচে ভেলে।