ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের হামলার চলমান পরিস্থিতিতে বিশ্ববাসীর উদ্দেশ্যে একটি বার্তা দিয়েছেন ইরানের আন্তঃধর্মীয় সংলাপ বিষয়ক নীতি-নির্ধারণ ও সমন্বয় পরিষদের চেয়ারম্যান ডক্টর আবুজর ইব্রাহিমী। পরিষদের বার্তাটি হুবহু তুলে ধরা হলো-
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম। শীর্ষ ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ, মহান ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, সম্মানিত চিন্তাবিদ এবং সারা বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষ এবং সকল সত্যানুসন্ধানীর প্রতি রইল আমার সালাম ও আন্তরিক শুভেচ্ছা।
শান্তি ও প্রশান্তির আলোয় বেঁচে থাকার ঐশী নেয়ামত মানুষের জন্য আল্লাহ তায়ালার এক বিশেষ উপহার। কিন্তু দুঃখজনকভাবে এই ঐশী উপহারকে আজ কেউ কেউ হুমকির মুখে ঠেলে দিচ্ছে এবং জুলুম-নিপীড়ন ও অপরাধের মাধ্যমে এই ঐশী উপহারকে কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। বেশ কয়েকদিন ধরে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, দখলদার ইহুদিবাদীদের রক্তাক্ত হাতে আবারও নিরীহ শিশু, মহিলা ও বেসামরিক নাগরিকের রক্ত ঝরছে এবং আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, এই নিষ্ঠুর কাজটি গণতন্ত্রের দাবিদারদের চোখের সামনে পরিচালিত হচ্ছে এবং মানবাধিকারের ধ্বজাধারীরা এসব দেখেও নিশ্চুপ রয়েছে।
এই অমানবিক অপরাধ বিশ্বের সকল শান্তিকামী মানুষের হৃদয়কে আহত করেছে। আশা করা হচ্ছে যে, বিশ্বের শীর্ষ ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ এই লজ্জাজনক কাজের বিরুদ্ধে নীরব না থেকে নিপীড়িতদের রক্ষা এবং এই অপরাধের জ্বলন্ত আগুন নিভিয়ে দেওয়ার জন্য সর্বাধিক মৌলিক ধর্মীয় শিক্ষা অনুসরণ করে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
নির্মম নিপীড়নের মোকাবেলায় যেমন কোনো মুক্তিকামী মানুষ নীরব থাকতে পারে না । তেমনি ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের কাছ থেকেও অনুরূপ প্রত্যাশা কামনা করা হচ্ছে। কারণ, ‘স্বাধীনতা’ হল তাদের সামাজিক অবস্থান ও স্থিতিশীলতার অন্যতম আবশ্যক বৈশিষ্ট্য।
মনে রাখতে হবে যে, ফিলিস্তিনে স্থায়ী শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা সম্ভব ঠিক সেভাবে যেমনটি ইরানের ইসলামি বিপ্লবের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনেয়ী বলেছেন, ফিলিস্তিনে শরণার্থীদের প্রত্যাবর্তন এবং সেখানকার ইহুদি, খ্রিস্টান এবং মুসলিম বাসিন্দাদের সম্মিলিত সিদ্ধান্তের ভিত্তিতেই কেবল শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব নতুবা নয়।
সুতরাং, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের আন্তঃধর্মীয় সংলাপ বিষয়ক নীতি-নির্ধারণ ও সমন্বয় পরিষদের প্রধান হিসেবে ( যে পরিষদ বহু বছর ধরে ধর্মের জ্ঞান অনুধাবন ও তার বিকাশ সাধনে কাজ করে যাচ্ছে তার পক্ষ থেকে) আমি সকল ধর্মের নেতৃবৃন্দ ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের কাছে আবেদন করছি ফিলিস্তিনে এই বর্বর অপরাধ সংঘটিত করার জন্য যায়নবাদী ইসরাইলের প্রতি ধিক্কার জানাবেন এবং নিরীহ ফিলিস্তিনিদের পক্ষে আপনাদের যে ধর্মীয় ও মানবিক দায়িত্ব রয়েছে তা পালন করার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন।
আমরা সর্বশক্তিমান আল্লাহর দরবারে এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সাহায্য প্রার্থনা করছি।