সাত মিনিটের রুদ্ধশ্বাস পর্ব পেরিয়ে শনিবার সকালে লাল গ্রহ মঙ্গলে সুষ্ঠু ভাবে নেমেছে চীনের রোভার ‘ঝুরং’। তিন মাস ধরে সেখানে ভৌগোলিক তথ্য জোগাড় করবে এটি। সংগ্রহ করবে পাথর ও তা বিশ্লেষণ করে তথ্য পাঠাবে পৃথিবীতে। মঙ্গলের কক্ষপথে অরবিটার পাঠানো, গ্রহটিতে ল্যান্ডার নামানো ও তার প্রান্তরে রোভার চালানো প্রথম চেষ্টাতেই এই তিনটি কাজ একসঙ্গে করতে পারাটা চীনের পক্ষে এক বড়সড় সাফল্য।
অরবিটার, ল্যান্ডার ও রোভারকে নিয়ে চীনের রকেট তিয়ানওয়েন-১ রওনা দিয়েছিল গত বছর জুলাইয়ে। সেটি মঙ্গলের কক্ষপথে পৌঁছোয় ফেব্রুয়ারিতে। শুক্রবার শুরু হয় অবতরণ-পর্ব। নামার শেষ সাত মিনিট বিজ্ঞানীদের কাছেও ভয়ঙ্কর। কারণ, এই পর্বে রেডিও তরঙ্গে পৃথিবীর সঙ্গে বার্তা বিনিময়ের চেয়েও দ্রুত নামতে থাকে ল্যান্ডার। ফলে তাৎক্ষণিক ভাবে এটির গতিবিধি নিয়ন্ত্রণের সুযোগ থাকে খুবই সীমিত। চীনের ন্যাশনাল স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (সিএনএসএ)-এর সূত্র উদ্ধৃত করে সরকারি সংবাদসংস্থা শিনহুয়া ও টিভি চ্যানেল সিসিটিভি জানিয়েছে, ল্যান্ডারটি প্যারাস্যুটে ভর করে রোভার ঝুরং-কে নিয়ে একেবারে নির্ধারিত জায়গায় অক্ষত নেমেছে। রোভার ঝুরংয়ের ছ’টি চাকা। সৌরশক্তিতে ভর করে ২৪০ কিলোগ্রামের গাড়িটি এখন মঙ্গলের উত্তর অংশে লাভা-প্রান্তর ‘ইউটোপিয়া প্ল্যানিটিয়া’-তে কাজ শুরু করেছে।
মহাকাশ অভিযানে রাশিয়া-আমেরিকার অনেক পরে দৌড় শুরু করেও চীন এখন বিশ্বের মহাকাশ চর্চায় একেবারে প্রথম সারিতে চলে এসেছে। ইতিমধ্যেই তারা মানুষ পাঠিয়েছে মহাকাশে। এ ছাড়া মহাকাশে তাদের নিজস্ব স্টেশন গড়ার জন্য তার প্রথম মডিউলটি নির্দিষ্ট কক্ষপথে পৌঁছে দিয়েছে ক’দিন আগেই। সেটিকে নিয়ে যাওয়া রকেট লং মার্চ-বি-এর ১০০ ফুট লম্বা একটি খণ্ড অবশ্য বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এর ক’দিন পরেই সফল হল চীনের মঙ্গল অভিযান ‘নিহাও মার্স’। সূত্র: সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।