ইসরায়েলের নারকীয় আগ্রাসন থেকে বাদ পড়ছে না গাজার শরণার্থী শিবিরগুলোও। শাতি ক্যাম্পে চালানো হামলায় প্রাণ হারালো একই পরিবারের ১০ সদস্য। বেঁচে ফিরেছে কেবল পাঁচ মাস বয়সী ওমর। ইসরায়েলি গোলায় জ্বলেপুড়ে ছারখাড় শরীরের ডান অংশ। কিছু বুঝে ওঠার আগেই নিষ্পাপ শিশুটি হারিয়েছে মাসহ চার ভাইকে।
ছোট্ট প্রাণ ওমরকে সুস্থ করতে চলছে চিকিৎসকদের দিনরাত চেষ্টা। ইসরায়েলি আগ্রাসনে হতবাক তারাও।
ফিলিস্তিনের আল-শেফা হাসপাতালের চিকিৎসক আহমেদ হামোদা বলেন, মধ্যরাতে শিশুটিকে হাসপাতালে আনা হয়। সে আবু হাতাব পরিবারের একমাত্র জীবিত মানুষ। ৫/৬ মাস বয়সী শিশুটির নাম ওমর মোহাম্মদ হাদিদি। তার সাথে কেউই নেই। অথচ পা ভাঙ্গা-জ্বলেপুড়ে যাওয়া শিশুটি যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে।
গোলার আঘাত কেড়ে নিয়েছে প্রিয়তমা স্ত্রী আর চার ছেলেকে। হাসপাতালে জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে আরেক সন্তান। তাই, বিচারের সব আশা ছেড়ে দিয়েছেন শিশু ওমরের পিতা হাদিদি।
প্রাণে বাঁচা শিশু ওমরের পিতা মোহাম্মদ হাদিদি বলেন, বিশ্ববাসী, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বা মানবাধিকার সংগঠনগুলোর কাছে আমি বিচার চাই না। কারণ, গাজা উপত্যকায় কোনো মানবাধিকার নেই, সব প্রোপাগাণ্ডা। বিবেকবানদের কাছে শুধু কয়েকটা প্রশ্ন: ইসরায়েল কেনো আমারই পরিবার কেড়ে নিলো? তারা কি ইহুদিদের দিকে রকেট বা গোলা ছুঁড়েছিলো? এই নিষ্পাপ শিশুর অপরাধটা কি?
শাতি ক্যাম্পে ভাইয়ের কাছে সন্তানদের নিয়ে ঈদ কাটাতে এসেছিলেন মাহা হাদিদি। মধ্যরাতে ইসরায়েলের ছোঁড়া রকেটে প্রাণ হারান বাড়িটির সবাই। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন দুই নারী, বাকি ৮ জনই শিশু। পরিবারটির করুণ পরিণতিতে ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা গাজা উপত্যকা। চাইছে জায়নবাদীদের অবিচারের শাস্তি।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল কেদরা বলেন, ফিলিস্তিনিদের ওপর জায়নবাদীদের এ প্রতিশোধ পরায়ণ হামলার রাশ টানতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অনুরোধ জানাচ্ছি। বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান থাকবে এটাই যেনো ফিলিস্তিনি কোনো পরিবারের প্রতি শেষ হত্যাকাণ্ড হয়। আন্তর্জাতিক নীতিমালার তোয়াক্কাই করছে না ইসরায়েল।
জাতিসংঘের ত্রাণ বিষয়ক সংস্থা- UNRWA’র তথ্য অনুসারে, ঐ হামলায় আহত আরও ১৫ জন। ধ্বংসস্তুপের নিচে আরও কেউ চাপা থাকতে পারে- এই আশঙ্কায় চলছে অনুসন্ধান।
গাজার ৮টি শরণার্থী শিবিরের মধ্যে সবচেয়ে জনবহুল শাতি ক্যাম্প যেখানে বাস করেন ৮৫ হাজারের বেশি মানুষ।