ভূখণ্ড ও জনসংখ্যার দিক দিয়ে পৃথিবীর পঞ্চম বৃহত্তম দেশ ব্রাজিল। দেশটিতে প্রতি বছর প্রায় ১৫ লাখ মানুষ রোজা পালন করেন। নামাজসহ রমজান মাসের সামাজিক দিকগুলোতে করোনাভাইরাস বিধিনিষেধ কার্যকর থাকে। অন্যসব বছর সাধারণত পরিবার এবং বন্ধুদের সঙ্গে নিয়েই ইফতার করা হত, কিন্তু লকডাউনের কারণে এ জাতীয় আয়োজন এবার সীমাবদ্ধ। করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে এটি দ্বিতীয় রমজান এবং কর্মকর্তারা তাদের মসজিদগুলোতে জমায়েত বা মসজিদের কাছে বাড়ির বাইরে প্রিয়জনদের সাথে ইফতারের মূল্যবান মুহূর্তগুলো ভাগাভাগি করার বিষয়ে মুসলমানদের সতর্ক করেছেন।
দেশটি স্বাস্থ্য ও সামাজিক সঙ্কটে পড়েছে। করোনায় বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু ঘটেছে ব্রাজিলে। এ সংখ্যা ৪ লাখ ১৯ হাজার ৩৯৩ জন। দেশটির হাসপাতাল এবং স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবা ধসের পথে। ব্রাজিলে মহামারীটি বিস্তার লাভ করলে অনেক লোক চাকরি হারিয়ে ফেলেন। বেকারত্ব ১৪ দশমিক ৬ শতাংশের রেকর্ডে পৌঁছেছে। রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী ব্রাজিলিয়ান পরিবারগুলোর ৬০ শতাংশই খাদ্য নিরাপত্তাহীন। সব সময় হাসপাতালগুলো পরিপূর্ণ থাকে, খাবারের লাইনগুলো দীর্ঘ হয় এবং দেশ অসহায়ভাবে বিপর্যয় দেখছে।
তবে ব্রাজিলের মুসলিম সম্প্রদায় অলসভাবে দাঁড়িয়ে নেই। ভাইরাস তাদের কাছ থেকে যা ছিনিয়ে নিয়েছে রমজানে তা মেটানোর চেষ্টা করছে।
মানবতাবাদী সহায়তা সংস্থা সিনকো পাইলারেস ইনস্টিটিউশন (আইসিপি) এর সভাপতি পবিত্র রমজানে মাসে তাদের সংগঠনের কার্যক্রম ব্যাখ্যা করে বলেন, ‘জীবন এখানে থেমে গেছে, তবে দাতব্য কাজ থামেনি। আমাদের প্রতিষ্ঠানটি অভাবী পরিবারগুলোকে খাবার, অর্থ এবং পরিষ্কারের উপকরণ বিতরণের দায়িত্ব নিচ্ছে। রমজানে ইতোমধ্যে ২ হাজারেরও বেশি ঝুড়ি বিতরণ করা হয়েছে এবং সারা দেশের বেশ কয়েকটি জায়গায় ইফতারির জন্য খাবার পাওয়া যায়’।
মসজিদগুলো সাধারণ মুসল্লিদের প্রবেশ করতে দেয়নি; যদিও পুরোপুরি নামাজ স্থগিত করা হয়নি। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে তারাবিহসহ জামানে নামাজ হয়। বিধিনিষেধের অর্থ হ’ল স্বাভাবিক রমজানে তাঁবুগুলোতে সূর্যাস্তের সময় ইফতারের খাবার এবং সাহারী পরিবেশন করার অনুমতি নেই। এ কারণেই হাম্মাদেহ নিশ্চিত করেছেন, খাবারের পার্সেল বিতরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ‘সুরক্ষার প্রয়োজনীয় সাবধানতা অবলম্বন করে উপকারভোগী ও স্বেচ্ছাসেবীদের খাবারের কিট বিতরণ করা হচ্ছে’। তিনি উল্লেখ করে বলেন, আইসিপি প্রত্যেক এবং মুসলমানদের জন্য একইভাবে খাবার পরিবেশন করে, কারণ পরিস্থিতি সবার জন্যই কঠিন।
যদিও শুধুমাত্র ইফতার পরিবেশন নয়, বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে তারা ইসলামের সুমনাহ বাণীও সবার মাঝে প্রচার করে চলেছেন।
সূত্র : মিডল ইস্ট মনিটর।