করোনা টিকার দুটি ডোজ, করোনা জয় অথবা করোনা পরীক্ষায় নেতিবাচক ফলের প্রমাণ দেখালে জার্মানিতে শনিবার থেকেই বেশ কিছু ছাড় দেওয়া হতে পারে৷ সরকার চলতি সপ্তাহে সেই প্রস্তুতি নিচ্ছে।
কয়েক সপ্তাহ আগেও জার্মানিতে করোনা সংক্রমণের দৈনিক হার আশঙ্কাজনক মাত্রা ছুঁলেও পরিস্থিতির আবার দ্রুত উন্নতি হচ্ছে৷ হাসপাতালের আইসিইউ-র উপর চাপও কমছে৷ রাতে কারফিউসহ একাধিক কড়া পদক্ষেপের সঙ্গে সঙ্গে টিকাদান কর্মসূচির গতি বাড়ার ফলেই এমন উন্নতি দেখা যাচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন৷ কিন্তু নতুন করে পরিস্থিতির অবনতি এড়াতে ‘এমারজেন্সি ব্রেক’, লকডাউন বা অন্যান্য বিধিনিয়ম পুরোপুরি তুলে নেওয়া হচ্ছে না৷
তার বদলে যেসব মানুষ পুরোপুরি করোনা টিকা পেয়ে গেছেন, তাদের জীবনযাত্রা ধাপে ধাপে স্বাভাবিক করার উদ্যোগ শুরু হচ্ছে৷ যারা করোনায় আক্রান্ত হয়ে সেরে উঠেছেন এবং সে কারণে নতুন করে আক্রান্ত হবার আশঙ্কা কম, তাদেরকেও সেই দলে ফেলা হচ্ছে৷ বাকিদের সেই সুযোগ নিতে হলে প্রতিবার করোনা পরীক্ষা করিয়ে নেতিবাচক ফল দেখাতে হবে৷ জার্মানির সরকার এভাবে যতটা সম্ভব কম ঝুঁকি নিয়ে জনজীবন স্বাভাবিক করে তুলতে চায়৷
চলতি সপ্তাহেই চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেলের সরকার সেই লক্ষ্যে কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছে৷ সোমবারই মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের খসড়া উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা ডিপিএ খুঁটিনাটী বিষয়গুলি তুলে ধরেছে৷ এর আওতায় টিকাপ্রাপ্ত ও করোনাজয়ী মানুষ উপযুক্ত প্রমাণ দেখিয়ে দোকানবাজারে অবাধ প্রবেশ করতে পারবেন৷ তাদের জন্য অনেক পরিষেবাও খুলে দেওয়া হবে৷ রাতে কারফিউ সত্ত্বেও তারা বের হতে পারবেন৷ অন্যান্য মানুষের সঙ্গে দেখাসাক্ষাতের ক্ষেত্রেও তাদের উপর কড়াকড়ি তুলে নেওয়া হবে৷
বিদেশ থেকে জার্মানিতে ফিরলেও তাদের ক্ষেত্রে কোয়ারেন্টাইনের নিয়ম প্রজোয্য হবে না৷ তবে লাল তালিকার দেশগুলির ক্ষেত্রে সেই ছাড় দেওয়া হবে না৷ উল্লেখ্য, এই মুহূর্তে জনসংখ্যার প্রায় আট শতাংশ করোনা টিকার দুটি ডোজই পেয়ে গেছেন এবং তিন শতাংশ করোনা জয় করে আবার সুস্থ হয়ে উঠেছেন৷ টিকাপ্রাপ্তদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে৷
ফেডারেল সরকারের পদক্ষেপের জন্য অপেক্ষা না করে সোমবার থেকেই একাধিক রাজ্য টিকাপ্রাপ্তদের জন্য কিছু ছাড় দিতে শুরু করেছে৷ বেশিরভাগ জায়গায় টিকার সার্টিফিকেটকে করোনা পরীক্ষার নেতিবাচক ফলের মর্যাদা দেওয়া হচ্ছে৷ ম্যার্কেলের মন্ত্রিসভা এবং সংসদের দুই কক্ষের অনুমোদনের পর সম্ভবত আগামী শনিবার থেকেই দেশজুড়ে এই নতুন নিয়ম চালু হবে৷ স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়েন্স স্পান আবার জুন মাসের মধ্যেই সব প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য টিকার সুযোগের আশা প্রকাশ করেছেন৷
তবে তিনি বলেন, সব মানুষ সঙ্গে সঙ্গে টিকা পাবেন না৷ সরবরাহ ও অবকাঠামোর ক্ষমতা অনুযায়ী ধীরে ধীরে অবশিষ্ট মানুষদের টিকা নেবার সুযোগ দেওয়া হবে৷ তিনি আগামী কয়েক মাসেই ১২ বছরের বেশি কিশোরদের টিকার ব্যবস্থা করা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন৷
সূত্র: ডয়েচে ভেলে।