ন্যূনতম মজুরি ২০ হাজার টাকা করার দাবি

অবশ্যই পরুন

শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২০ হাজার টাকা করার দাবি জানিয়েছে শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে কাজ করা সংগঠনগুলো। শনিবার (১ মে) মহান মে দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত মানববন্ধন ও সমাবেশে এই দাবি জানায় গার্মেন্ট শ্রমিক টিইউসি, শ্রমিক কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ)-সহ আরো কয়েকটি সংগঠন।

জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ২০ হাজার টাকা আদায়ের সংগ্রাম গড়ে তোলার ডাকে মহান মে দিবসে গার্মেন্ট শ্রমিক টিইউসির কেন্দ্রীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় প্রেসক্লাবের একপাশে। এ সময় ন্যূনতম মজুরি ২০ হাজার টাকা করা ছাড়াও শ্রমিকদের খাদ্য, জীবন, স্বাস্থ্য এবং চাকরির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, করোনা পরিস্থিতিতে কর্মরত শ্রমিকদের ঝুঁকিভাতা দেয়া, ২০ রোজার মধ্যে মূল মজুরির সমান বোনাস এবং বকেয়া পরিশোধ করা, বাঁশখালী, রানা প্লাজা ও তাজরিন গারমেন্টসে শ্রমিক হত্যার বিচারসহ ৯ দফা দাবি জানানো হয়।

গার্মেন্টস শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জলি তালুকদার বলেন, শ্রমিক হত্যাকাণ্ডের কোনো বিচার হয়নি। এ দেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হয়েছে, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়েছে। মনে রাখবেন এ দেশের মানুষের যদি আপনারা বিচার না করেন, তাহলে মানুষ আপনাদের বিচার করবে। শতভাগ কারখানা খুলে রেখেছেন করোনার মধ্যে, কিন্তু স্বাস্থ্যসুরক্ষার কোনো ব্যবস্থা করেননি। কোনো পরিবহনের ব্যবস্থা করেননি। গতবছর এই তামাশা করেছিলেন এবারও তাই করছেন। শ্রমিকদের আজকে অতিরিক্ত টাকা খরচ করে কারখানায় যেতে হচ্ছে।

গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২০ হাজার টাকা করার দাবি জানিয়েছে স্কপ। প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধনে স্কপের বক্তারা বলেন, লকডাউনে শ্রমিক কাজ ও আয় হারালেও মালিকরা পেয়েছেন বিপুল সহায়তা। গার্মেন্টস শিল্প মালিকদের হাজার হাজার কোটি টাকা প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে। কিন্তু রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে শ্রমিক জনগণের প্রতি যে দায়িত্ব নেয়ার কথা ছিল তা কার্যকরভাবে পালিত না হওয়ায় করোনা শ্রমজীবীদের মহাদুর্ভোগে পতিত করেছে। একদিকে উৎপাদন অব্যাহত রাখার প্রয়োজনের কথা বলে শ্রমিকদের কাজ করিয়েছে, অন্যদিকে কারখানা বন্ধ, ছাঁটাই, লে-অফ, চাকরিচ্যুতির ঘটনাও ঘটেছে। অধিকার বঞ্চিত শ্রমিকরা আন্দোলনে নেমে নিপীড়নের মুখোমুখি হয়েছে, জীবন ও রক্ত ঝরেছে। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের জন্য কিছু প্রণোদনা ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু শ্রমিক সংগঠনসমূহকে যুক্ত না করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে ত্রাণ বিতরণের কর্মসূচির ফলে এসব প্রণোদনা করোনার প্রথম ধাক্কায় যেমন কার্যকর হয়নি, এবারও তা শ্রমজীবী মানুষদের কতটুকু রক্ষা করবে এই প্রশ্ন সর্বত্রই জাগছে।

এ সময় ৯ দফা দাবি জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন, করোনাকালীন সময়ে শ্রমিক ছাঁটাই করা চলবে না। শ্রমিকদের করোনা ঝুঁকি ভাতা দিতে হবে। করোনা আক্রান্ত শ্রমিকদের চিকিৎসার দায়িত্ব মালিক ও সরকারকে বহন করতে হবে। কর্মহীন শ্রমিকদের খাদ্য ও আর্থিক সহায়তা করতে হবে। বাঁশখালীতে শ্রমিক হত্যার বিচার বিভাগীয় তদন্তসহ সব শ্রমিক হত্যার জন্য দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। নিহতদের আজীবন আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ, আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে এবং  মালিকানা নির্বিশেষে জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ২০ হাজার টাকা নির্ধারণ করতে হবে।

বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি শহিদুল্লাহ চৌধুরির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মে দিবসের সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জাতীয় শ্রমিক জোটের সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ, জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন, জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি কামরুল আহসান, জাতীয় শ্রমিক জোট বাংলাদেশের সভাপতি সাইফুজ্জামান বাদশা প্রমুখ।

সর্বশেষ সংবাদ

রাজনৈতিক নেতৃত্বের পরিবর্তনেও সঙ্গে থাকার বার্তা জাপানের

রাজনৈতিক নেতৃত্বের পরিবর্তন হলেও বাংলাদেশের সঙ্গে জাপান কাজ চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত দেশটির রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি। রোববার (২৪...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ