spot_img

রুশ বিরোধী নেতা নাভালনির সংগঠনের সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধ

অবশ্যই পরুন

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কঠোর সমালোচক আলেক্সেই নাভালনির দুর্নীতিবিরোধী ফাউন্ডেশন (এফবিকে) ও এর আঞ্চলিক নেটওয়ার্কের সকল কার্যক্রম বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে দেশটির প্রসিকিউটররা। ৪৪ বছর বয়সী নাভালনি রাশিয়ার সুপরিচিত বিরোধী নেতা। তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের কট্টর সমালোচক।

মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, নাভালনির রাজনৈতিক ও দুর্নীতিবিরোধী নেটওয়ার্ক যদি সত্যিই নিষিদ্ধ করা হয়, তবে তা হবে সোভিয়েত পরবর্তী রাশিয়ায় মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও সংগঠন করার অধিকারের প্রতি অন্যতম গুরুতর আঘাত।

নাভালনির দুর্নীতিবিরোধী ফাউন্ডেশনের পরিচালক ইভান জাদানভ টুইটারে জানান, নাভালনির দপ্তর ও এফবিকের কার্যক্রম তাৎক্ষনিকভাবে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। মস্কো সিটি আদালত সংগঠনটির আঞ্চলিক নেটওয়ার্ক বাতিল করার তথ্য নিশ্চিত করেছে। তবে আদালত জানিয়েছে, সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা প্রসিকিউটরদের রয়েছে। সংগঠনটিকে ‘উগ্রপন্থী’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হবে কিনা সে বিষয়ে আদালতের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও আসেনি।

নাভালনিকে ইতিমধ্যে জেলে পুরেছে রুশ কর্তৃপক্ষ। তার অনেক সহযোদ্ধাকেও কারাগারে পাঠানো হয়েছে। নাভালনির সমর্থনে বিক্ষোভ ডাকলে তা বেআইনি হবে বলে বলছে কর্তৃপক্ষ। বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে নাভালনির হাজারো সমর্থককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জেল-জরিমানাসহ সরকারের রোষানল থেকে বাঁচতে নাভালনির অনেক সহকর্মী রাশিয়া ছেড়েছেন।
সমালোচকদের অভিযোগ, রাশিয়ায় নাভালনির রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রভাব কমাতে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন নানা আগ্রাসী পদক্ষেপ নিচ্ছেন।

মস্কো থেকে নাভালনির দপ্তর জানিয়েছে, সংগঠনটি বেশ কয়েক মাস কোনো কার্যক্রম চালাতো না। তারা বলেন, এটা আমাদের কর্মী ও সমর্থকদের জন্য খুবই বিপজ্জনক হবে। তবে তারা দুর্নীতি, ক্ষমতাসীন ইউনাইটেড রাশিয়া পার্টি ও প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত পরিসরে লড়াই অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন। তারা বলেন, ‘লড়াই সহজ হবে না, কিন্তু আমরা অবশ্যই জিতব, কারণ আমাদের সংখ্যা অনেক এবং আমরা শক্তিশালী।’

চলতি বছরের শুরুর দিকে রাশিয়া ছাড়েন নাভালনির দুর্নীতিবিরোধী ফাউন্ডেশনের পরিচালক ইভান জাদানভ। তিনি বলেন, চলমান ঘটনাপ্রবাহ তাকে সোভিয়েত আমলের কথাই মনে করিয়ে দিচ্ছে। তখন যাকে-তাকে গুপ্তচর বা বিদেশি এজেন্ট হিসেবে ঘোষণা করা হতো। তারপর গোপন বিচার হতো।

ইভান বলেন, পুতিন রাশিয়াকে সোভিয়েত আমলে ফিরিয়ে নিতে চান। তার ভাষ্য, উগ্রবাদী হিসেবে নাভালনির সংগঠন নিষিদ্ধ করা হলে রাশিয়ায় গণহারে দমন-পীড়নের দরজা খুলে যাবে। তিনি বলেন, রুশ কর্তৃপক্ষ সত্যিকার অর্থেই তাদের ধ্বংস করে দিতে চায়। কারণ, তাদের কার্যক্রম কর্তৃপক্ষকে ঝুঁকিগ্রস্ত করে তুলছে।

নাভালনি বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। টানা ২৪ দিনের অনশনের পর গত শুক্রবার তিনি খাবার গ্রহণে সম্মত হন। গত ৩১ মার্চ থেকে নাভালনি আরও ভাল চিকিৎসা সেবার দাবিতে অনশন শুরু করেছিলেন।

সাইবেরিয়ায় স্নায়ু বিকলকারী বিষ (নভোচক) প্রয়োগে আক্রান্ত হয়ে নাভালনি বার্লিনে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। এ ঘটনায় তিনি কোমায় চলে গিয়েছিলেন। গত জানুয়ারিতে সুস্থ হয়ে রাশিয়ায় ফিরে আসার পরপরই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। কারাদণ্ডের স্থগিতাদেশ ভঙ্গের অভিযোগে গত ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার একটি আদালত নাভালনিকে আড়াই বছরের কারাদণ্ড দিয়ে কারাগারে প্রেরণ করে। যদিও স্থগিতাদেশ ভঙ্গের সময় তিনি কোমায় ছিলেন। গত বুধবার নাভালনির হাজার হাজার সমর্থক রাশিয়ার বিভিন্ন শহরে সমাবেশ করেছে। এদের মধ্যে সতেরশ জনেরও বেশি সমর্থককে আটক করেছে পুলিশ।

সূত্র : রয়টার্স।

সর্বশেষ সংবাদ

মহানবী (সা.) রওজা শরিফ জিয়ারতে সৌদি আরবের নতুন নির্দেশনা

এখন থেকে মহানবী মুহাম্মদ (সা.) এর রওজা শরিফ জিয়ারতের জন্য আগাম অনুমতি নিতে হবে বলে জানিয়েছে সৌদি সরকার। দেশটির...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ