১৩ বছর আগের ঘটনা। ভারতের উত্তর প্রদেশের বাওয়ানখেদি গ্রামের শবনম নামের এক গৃহবধূ পরকীয়ার জেরে প্রেমিক সেলিমকে নিয়ে পরিবারের সাত সদস্যকে খুন করে। বিচারে তারা দুজনই দোষী সাব্যস্ত হলে আদালত তাদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে প্রাণদণ্ডের আদেশ দেন।
তবে শবনম নিজে কখনোই এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেননি। শবনমের আইনজীবীদের যুক্তি শবনম নিজেও ওই ঘটনার শিকার।
আদালতের নথির বরাত দিয়ে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সন্ধ্যায় শবনম তার পরিবারের জন্য চা বানায় এবং তাতে কড়া ডোজের ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দেয়। চা পান করার পর পুরো পরিবার অচেতন হয়ে পড়ে। তখন সে প্রেমিক সেলিমকে বাড়িতে ডেকে নেয় এবং কুঠার দিয়ে সবাইকে গলা কেটে হত্যা করে। ২০০৮ সালের ১৫ এপ্রিল এবং রায় হয় ২০১০ সালে।
হত্যাকাণ্ডের সময় শবনম ৮ সপ্তাহের অন্তঃস্বত্ত্বা ছিলেন। তার গর্ভে ছিল প্রেমিক সেলিমের সন্তান। ঘটনার আট মাস পর কারাগারেই ছেলের জন্ম দেন শবনম।
বর্তমানে তার ছেলে বিট্টুর (ছদ্মনাম) বয়স ১২ বছর। বিট্টু তার পালক পিতার কাছে বড় হচ্ছে। ভারতের প্রেসিডেন্ট রাম নাথ কোভিন্দের কাছে সে তার মায়ের প্রাণ ভিক্ষা চেয়ে আবেদন করবে বলে জানানো হয়েছে।
২০১০ সালে ১৪ জুলাই জেলা ও দায়রা আদালত এই প্রেমিক যুগলকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। পরে তারা প্রথমে উত্তর প্রদেশ হাই কোর্ট এবং পরে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে।
কিন্তু উভয় আদালতেই জেলা আদালতের রায় বহাল থাকে। পরে শবনমের প্রাণভিক্ষার আবেদন খারিজ করেন রাষ্ট্রপতিও।
ফলে ফাঁসির সাজা বহাল থাকায় মথুরা জেলে শবনমের প্রাণদণ্ড কার্যকরের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। যদিও ফাঁসির দিনক্ষণ এখনও ঠিক হয়নি।
এই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হলে প্রায় ৭১ বছর পর ভারতে এই প্রথম কোনো নারীর ফাঁসি হবে।