সামরিক বাহিনী ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই বিক্ষোভ করছে মিয়ানমারের জনগণ। প্রাণও দিয়েছেন অনেকে। আর সেই সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা গ্রহণকেই সমর্থন দিলো আসিয়ান।
প্রথম থেকেই সামরিক বাহিনীর পক্ষ থেকে বিক্ষোভ বন্ধ করে আলোচনার আহ্বান জানানো হচ্ছিল। এবার তাদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে একই আহ্বান জানালো আসিয়ান।
শনিবার (২৪ এপ্রিল) ইন্দোনেশিয়ায় অনুষ্ঠিত আসিয়ান শীর্ষ সম্মেলনে চেয়ারম্যানের বিবৃতিতে সহিংসতা বন্ধ ও আলোচনার আহ্বান থাকলেও তাতে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়ে কোনও বক্তব্য নেই। উল্লেখ্য ওই শীর্ষ সম্মেলনে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর প্রধান মিং আং হ্লাইংও অংশ নিয়েছেন।
এ বিষয়ে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক বলেন, ‘এই বিবৃতির মাধ্যমে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে স্বীকৃতি দিয়ে দিল আসিয়ান। মিয়ানমারে যে সমস্যা চলছে সেটি মূলত গণতন্ত্র ও মানবাধিকার সংক্রান্ত। কিন্তু গোটা বিবৃতিতে একবারের জন্যও এটি উল্লেখ করা হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘এখন মিয়ানমারে প্রতিদিন মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। সেখানে দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। অর্থনৈতিক অবস্থাও আগের যেকোনও সময়ের চেয়ে খারাপ। কিন্তু এ নিয়ে উদ্বেগ তো দূরের কথা, উল্লেখও করা হয়নি। এতে বোঝা যায়, মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে প্রছন্ন সমর্থন দিচ্ছে আসিয়ান।’
মিয়ানমারের এই বিশাল সমস্যাকে অন্যসব সাধারণ সমস্যার কাতারে নামিয়ে এনেছে আসিয়ান। এমনটা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অর্থনৈতিক সুবিধা ও আসিয়ানের সংহতি ধরে রাখার জন্য এই কাজ করা হতে পারে।’
বিবৃতিতে কী বলা হয়েছে?
শহীদুল হক বলেন, পাঁচটি পয়েন্ট বিবৃতিতে সংযুক্ত করা হয়েছে। প্রথম পয়েন্টে বলা হয়েছে. সব পক্ষ যেন সহিংসতা বন্ধ করে।
তিনি বলেন, ‘জনগণ গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের জন্য রাস্তায় আন্দোলন করছে এবং তাদের ওপর মিয়ানমার বাহিনী গুলি চালাচ্ছে। বিবৃতিতে যদি মিয়ানমার বাহিনীর গুলি করা বন্ধ করার কথা বলা হতো, তবে বোঝা যেত আসিয়ান গণতন্ত্রের পক্ষে আছে।’
শহীদুল হক বলেন, ‘আরেকটি জায়গায় বলা হয়েছে সব রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি প্রসঙ্গে। কিন্তু মিয়ানমারে কোনও রাজনৈতিক বন্দি নেই। সবার বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।’
আলোচনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এই আলোচনার বিষয়টি মিয়ানমার সেনাবাহিনী প্রথম থেকেই বলে আসছিল। কারণ এ আলোচনার নাম করে আগামী এক-দুই বছর অনায়াসে পার করে দিতে পারবে তারা।