spot_img

কওমির ছাত্র-শিক্ষকদের রাজনীতি নিষিদ্ধ

অবশ্যই পরুন

লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এই রাজনীতি বন্ধ করতে হলে সবার আগে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক–রাজনীতি বন্ধ করা উচিত। দলীয় রাজনীতিতে যুক্ত কিছু শিক্ষকের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষতি কোনো অংশে কম হয় না। নষ্ট দলীয় ছাত্ররাজনীতির কারণেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হয়,যা এখন সর্বজনস্বীকৃত। এ অবস্থা থেকে বাদ পড়েনি কওমি মাদ্রাসা।

মাদ্রসা শিক্ষা ব্যবস্থায় রাজনতি ডুকে পড়ায় কখনও কখনও ধর্মের উপর কালো তিলক পড়ছে। সম্প্রতি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আগমনকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন স্থানে হেফাজতে ইসলামের সহিংস কর্মকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে কওমি মাদ্রাসাকে বহন করতে হচ্ছে কালো তিলক। এ অবস্থায় ভাবমূর্তি উদ্ধারে দেশের সব কওমি মাদ্রাসাকে রাজনীতি মুক্ত রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে মাদরাসার সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী বোর্ড আল-হাইআতুল উলয়া লিল জামিআতিল কওমিয়া। এরফলে দেশের সব কওমি মাদরাসায় ছাত্র-শিক্ষকদের রাজনীতি নিষিদ্ধ।

রোববার (২৫ এপ্রিল) কওমি মাদরাসার সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী বোর্ড আল-হাইআতুল উলয়া লিল জামিআতিল কওমিয়া বাংলাদেশের স্থায়ী কমিটির এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিকেলে বোর্ড অফিস সম্পাদক মু. অছিউর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে দিয়ে ছাত্র-শিক্ষকদের রাজনীতি নিষিদ্ধ করেছে।

বিবৃতিতে জানানো হয়,রোববার যাত্রাবাড়ীতে জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলূম মাদানিয়া মাদরাসায় স্থায়ী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় সভাপতিত্ব করেন আল-হাইআতুল উলয়া লিল জামিআতিল কওমিয়া বাংলাদেশের চেয়ারম্যান আল্লামা মাহমুদুল হাসান।

সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, দেশের কওমি অঙ্গনে বিরাজমান অস্থিরতা থেকে ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষাব্যবস্থার সুরক্ষা এবং উলামায়ে কেরামের শান ও মান বজায় রেখে স্বাভাবিক অবস্থায় নানামুখী দীনি কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরির উদ্যোগ নিতে বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

কওমি মাদরাসা সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ নেবে আল-হাইআতুল উলয়া। আল-হাইআতুল উলয়ার অধীন এক বা একাধিক বোর্ড কিংবা কোনো সংগঠন বা ব্যক্তি আল-হাইআতুল উলয়ার সিদ্ধান্ত ব্যতীত পৃথকভাবে কওমি মাদরাসা বিষয়ক কোনো সিদ্ধান্ত বা পদক্ষেপ বা উদ্যোগ নিতে পারবে না।

কওমি মাদরাসার ছাত্র ও শিক্ষকরা প্রচলিত সর্বপ্রকার রাজনীতি থেকে মুক্ত থাকবে মর্মে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

আল-হাইআতুল উলয়ার সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়নের জন্য এবং কওমি মাদরাসা সম্পর্কিত যাবতীয় বিষয়ে সিদ্ধান্তগ্রহণ ও তত্ত্বাবধানের জন্য আল-হাইআতুল উলয়ার অধীন ৫ বোর্ডের ৫ জন, বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া থেকে ৫ জন এবং চেয়ারম্যান কর্তৃক মনোনীত ৫ জন সমন্বয়ে সর্বমোট ১৫ জনের একটি ‘বাস্তবায়ন সাব-কমিটি’ গঠিত হবে।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কওমি মাদরাসার যে নিরীহ ছাত্র, শিক্ষক, আলেম-ওলামা, ধর্মপ্রাণ মুসলমান এবং মসজিদের ইমাম ও মুসল্লিদের গ্রেফতার করা হয়েছে, রমজানের এই রহমতের মাস বিবেচনায় সরকারের নিকট তাদের মুক্তির আহ্বান জানানো এবং নিরীহ আলেম-ওলামা, মাদরাসার ছাত্র ও ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের হয়রানি না করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ করা হয়েছে।

পবিত্র রমজান কুরআন তেলাওয়াতের মাস। কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে বালা-মুসিবত ও মহামারি দূর হয়। তাই রমজানের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ঘোষিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে হিফজ ও মক্তব বিভাগ খুলে দেওয়ার জন্য এবং রমাযানের পর কওমি মাদরাসার শিক্ষাকার্যক্রম চালু করার জন্য সরকারের কাছে বিশেষভাবে আবেদন করা হয়েছে।

আল-হাইআতুল উলয়ার সভার সিদ্ধান্ত সম্পর্কে সরকারকে অবহিত করার জন্য ৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলের স্বরাস্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সদস্যরা হলেন, মাওলানা মুফতি রুহুল আমীন, মাওলানা মুফতি মোহাম্মদ আলী ও মাওলানা মুফতি জসীমুদ্দীন।

সভায় আল-হাইআতুল উলয়ার কো-চেয়ারম্যান আল্লামা মুফতি ওয়াক্কাসের মাগফিরাত কামনা করা হয় এবং বর্তমান করোনা পরিস্থিতিতে দেশবাসীসহ বিশ্বমানবতার জন্য দোয়া করা হয়।

সভায় উপস্থিত ছিলেন আল-হাইআতুল উলয়ার অধীন বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের সহসভাপতি মাওলানা আব্দুল কুদ্দুস, মাওলানা নূরুল ইসলাম জিহাদী, মাওলানা সাজিদুর রহমান, মাওলানা আব্দুর রহমান হাফেজ্জী, মাওলানা আতাউল্লাহ ইবনে হাফেজ্জী, মাওলানা ছফিউল্লাহ, মাওলানা মুফতি ফয়জুল্লাহ, মাওলানা মুছলেহুদ্দীন রাজু, মাওলানা উবায়দুর রহমান মাহবুব, মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক, সহকারী মহাসচিব মাওলানা মুফতি নূরুল আমীন ও মাওলানা মুফতি জসীমুদ্দীন প্রমুখ। এ ছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন আল-হাইআতুল উলয়ার পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাওলানা মুহাম্মাদ ইসমাইল ও অফিস সম্পাদক মাওলানা মু. অছিউর রহমান।

সর্বশেষ সংবাদ

মহানবী (সা.) রওজা শরিফ জিয়ারতে সৌদি আরবের নতুন নির্দেশনা

এখন থেকে মহানবী মুহাম্মদ (সা.) এর রওজা শরিফ জিয়ারতের জন্য আগাম অনুমতি নিতে হবে বলে জানিয়েছে সৌদি সরকার। দেশটির...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ