করোনা পরিস্থিতিতে ভারতে অক্সিজেন সংকট চরমে। এরইমধ্যে অভিযোগ উঠেছে অক্সিজেন ট্রাক রাজধানী দিল্লি পর্যন্ত পৌঁছতে দেওয়া হচ্ছে না। সম্প্রতি দিল্লি হাইকোর্ট জানিয়েছে, যদি কেন্দ্র, রাজ্য বা কোনো স্থানীয় প্রশাসন অক্সিজেন সাপ্লাই আটকে দেওয়া হয় তাদের ‘আমরা ছেড়ে দেব না’। তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে। হাসপাতালগুলোর আবেদনের কথা শুনে এই নির্দেশ জারি করেছে দিল্লি হাইকোর্ট।
বহু হাসপাতাল অক্সিজেন নিয়ে ইতিমধ্যেই স্পেশাল অপারেশন সিস্টেম (এসওএস) পাঠাচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে অক্সিজেন সাপ্লাই চাইছে তারা। করোনা রোগীদের অক্সিজেন সংকট দেখা দিচ্ছে।
শনিবার (২৪ এপ্রিল) সকালেই দিল্লির বাত্রা হাসপাতাল থেকে অক্সিজেনের জন্য এসওএস পাঠানো হচ্ছে। হাসপাতালে ৩০০ জন করোনা রোগী ভর্তি রয়েছেন। অথচ তখন অক্সিজেন ছিল মাত্র ২০ মিনিটের। দিল্লির জয়পুর গোল্ডেন হাসপাতালে অক্সিজেনের অভাবে ২৫ জনের মৃত্যু হয়।
দিল্লি সরকারকে হাইকোর্ট জানিয়েছে, তারা যেন দ্রুত কেন্দ্রকে জানায় স্থানীয় প্রশাসন যদি অক্সিজেন সাপ্লাইয়ের ক্ষেত্রে সমস্যা সৃষ্টি করে তাদের বিরুদ্ধে যেন দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। কেন্দ্রকেও দিল্লি হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, প্রতিদিন দিল্লিকে ৪৮০ মেট্রিক টন অক্সিজেন সাপ্লাই করতে হবে।
আদালত বলেছে, আমরা সঠিক দিন জানতে চাই যেদিন দিল্লিকে ৪৮০ টন অক্সিজেন দেওয়া সম্ভব হবে। কেউ আপনাদের উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছে না। কিন্তু দিল্লিতে ৪৮০ টন অক্সিজেন পৌঁছাচ্ছে না। এভাবে আমরা মানুষকে মরতে দিতে পারি না।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউকে ‘সুনামি’র সঙ্গে তুলনা করছে দিল্লি হাইকোর্ট। ভারতে করোনা চূড়ান্ত অবস্থায় পৌঁছতে কিছু দেরি আছে। কেন্দ্র এ বিষয়ে কীভাবে পরিকল্পনা করছে তা জানতে চেয়ে আদালত বলেছে, এটা সেকেন্ড ওয়েভ নয়। এটা সুনামি। এখনও করোনার চূড়ান্ত অবস্থায় পৌঁছাইনি আমরা।
আদালত আরও বলেছে, মে মাসের মাঝামাঝিতে করোনার সর্বোচ্চ অবস্থায় থাকবে। এর জন্য আপনারা কী প্রস্তুতি নিচ্ছেন? সামনের সপ্তাহগুলোতে আরও করোনা কেস আসবে। এই সময়টা প্যানিক সৃষ্টি করার নয়। আমাদের সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির জন্য তৈরি থাকতে হবে। হাসপাতালগুলি বলছে এটি এসওএস অবস্থা। পরিস্থিতি যাতে দীর্ঘস্থায়ী না হয় তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছে দিল্লি হাইকোর্ট।