আর উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ থাকায় অভিযোগ গঠনের ৫ বছরেও শুরু করা যায়নি সাক্ষ্য গ্রহণ। আলোচিত এ মামলার কালক্ষেপণের জন্য একে অন্যের ওপর দায় চাপাচ্ছে রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষ। এদিকে ভবন নির্মাণসংক্রান্ত দুর্নীতি ও নির্মাণ আইন লঙ্ঘনে করা মামলা দু’টিরও প্রায় একই অবস্থা।
২০১৩ সালের ২৪শে এপ্রিল সাভারের রানা প্লাজা ধসে মৃত্যু হয় ১ হাজার ১৩৬ জনের। গুরুতর আহত হয়ে পঙ্গু জীবন-যাপন করতে হচ্ছে আরও ১ হাজার ১৬৯ জনকে।
এ ঘটনায় মোট তিনটি মামলা হয়। এর মধ্যে অবহেলাজনিত মৃত্যুতে হত্যা মামলাটি করে পুলিশ। আর ইমারত নির্মাণ আইন লঙ্ঘন দায়ে রাজউক এবং ভবন নির্মাণসংক্রান্ত দুর্নীতির অভিযোগে মামলা করেন দুদক।
নৃশংস মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলার বিচার কাজ মোটেও এগোয়নি। অভিযোগপত্রের দুই আসামির পক্ষে উচ্চ আদালতের স্থগিতাদেশ থাকায় বর্তমানে মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ বন্ধ রয়েছে।
হত্যা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ কবে শুরু হবে এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ জানাতে না পারলেও মামলার সময়ক্ষেপণের জন্য আসামিপক্ষের ওপর দায় চাপালেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি আনোয়ারুল কবির বাবুল বলেন,’প্রতিটি শুনানির আগে তারা একেকটি গ্রাউন্ড সৃষ্টি করে আদালত থেকে সময় নিয়েছে। ২০১৬ সালে এই মামলায় যখন চার্জ হয়েছে তারপর থেকে এই রিভিশনগুলো নিস্পত্তি করতেই একটা দীর্ঘ সময় লেগেছে।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে বিচার বিলম্বিত হওয়ায় ওল্টো রাষ্ট্রপক্ষকে দুষলেন আসামিপক্ষ। আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহমেদ বলেন,’রাষ্ট্রপক্ষ বুঝতে পেরেছে এই মামলার যদি বিচার শুরু হয় তবে এই আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা হবে না। যেহেতু ১১৩৬ জন লোক মারা গেছে। আসামিদের যদি সর্বোচ্চ সাজা না হয় তবে রাষ্ট্র পক্ষের জন্যও লজ্জার বিষয়। এ কারণে বিলম্বিত করে যতদিন মামলাটি আটকে রাখা যায়, এটাই তাদের কৌশল।’
বিচারিক আদালতের অভিযোগ গঠনের আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আট আসামির মধ্যে ছয় আসামির স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। শুধু দুই আসামির পক্ষে স্থগিতাদেশ বহাল আছে। রানা প্লাজা ধস হত্যা মামলায় ৪১ আসামির মধ্যে বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন সোহেল রানা। জামিনে আছেন ৩২ আসামি। পলাতক ছয়জন। মারা গেছেন দুই আসামি।