তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ভণ্ড ও মিথ্যাবাদীদের পক্ষে যারা বিবৃতি দেয়, তারাও সে পর্যায়ে পড়ে। হেফাজতে ইসলামের নেতাদের মুক্তির দাবিতে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নার বক্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডের বাসভবন থেকে বিশ্ব ধরিত্রী দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশবিষয়ক উপ-কমিটির ওয়েবিনার ‘আমাদের পৃথিবী পুনরুদ্ধার : বাংলাদেশ দৃষ্টিকোণ ও ভবিষ্যৎ পথযাত্রা’ (Restore Our Earth : Bangladesh Perspectives and the Way Forward) এ বক্তব্য প্রদান শেষে উপস্থিত সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, হেফাজত নেতারা যে নষ্ট এবং ভণ্ড, সেটি আজ প্রমাণিত। কারণ মামুনুলের অনৈতিক, অনৈসলামী কাণ্ডকে তারা যেভাবে তড়িঘড়ি করে বসে ইসলামের আলোকে বৈধতা দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে, নাউজুবিল্লাহ, সেটিই তার প্রমাণ।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, একইসাথে তাদের নেতৃত্বে হেফাজতে ইসলাম সারাদেশে তাণ্ডব চালিয়েছে, নিরীহ মানুষের ঘরবাড়ি-সহায়-সম্পত্তি, যানবাহন জ্বালিয়ে দিয়েছে, ভূমি অফিসে আগুন দিয়ে সাধারণ মানুষের জমির দলিলপত্র পুড়িয়েছে, ফায়ার-রেল-পুলিশ স্টেশনে হামলা চালিয়েছে, মহাসড়কের ওপর দেয়াল তুলে দিয়েছে এবং এগুলো করে আবার তা অস্বীকার করেছে।
মন্ত্রী বলেন, সূর্য পূর্বদিকে ওঠে তা যেমন সত্য, হেফাজত যে এসব করেছে, সেই দিবালোকের মতো সত্যকেও তারা অস্বীকার করেছে। সুতরাং এই মিথ্যাবাদী, নষ্ট ও ভণ্ড নেতৃত্বের পক্ষ নিয়ে যারা বিবৃতি দেয়, তারাও সেই পর্যায়েই পড়ে।
‘আওয়ামী লীগ মানুষের পাশে আছে, কৃষকের ধান কেটে তুলে দিচ্ছে গোলায়’
সাংবাদিকরা এ সময় করোনাকালে আওয়ামী লীগের মানুষের পাশে থাকার বিষয়ে প্রশ্ন করলে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান বলেন, আওয়ামী লীগ সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে গত একবছর ধরে করোনাকালে আওয়ামী লীগ মানুষের পাশে আছে এবং থাকবে। দলের পক্ষ থেকে প্রথম দফায় ১ কোটি ২৫ লাখ মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দেয়া হয়েছে এবং কোটি কোটি টাকা বিতরণ করা হয়েছে।
আওয়ামী লীগের প্রায় একশ দশজন এমপি করোনায় আক্রান্ত, পাঁচজন মৃত্যুবরণ করেছেন, কয়েকজন উপদেষ্টাসহ তিনজন প্রেসিডিয়াম সদস্য মৃত্যুবরণ করেছেন বলেও উল্লেখ করেন ড. হাছান।
তিনি বলেন, এই আক্রান্তের কারণ আওয়ামী লীগ নেতারা করোনাকালে জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছেন। আর এখন সেইসাথে তারা কৃষকের ধান কেটে গোলায় তুলে দিচ্ছেন।
অপরদিকে, যারা বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে নীতিকথা বলেন, তাদের তো দূরবীণ দিয়েও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে মন্তব্য করে ড. হাছান বলেন, মানুষের জন্য কিছু করবেন এমন কথা বলে বিদেশিদের কাছ থেকে অর্থ আনা, কজন দরিদ্রকে ডেকে ত্রাণ দেয়ার ছবি বিদেশে পাঠানোই তাদের কাজ।
পৃথিবীর সবকিছুকেই নিজের কাজে ব্যবহারের মনোবৃত্তি পরিহারের আহ্বান ড. হাছানের
এর আগে, আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপকমিটির ওয়েবিনারে দেয়া বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এবং সাবেক বন ও পরিবেশমন্ত্রী ড. হাছান বলেন, মানুষ নিজেদের পৃথিবীর একচ্ছত্র অধিপতি ভাবা এবং সবকিছুকেই নিজের কাজে ব্যবহারের মনোবৃত্তি পরিহার করতে হবে। অন্যথায় পৃথিবী এবং মানুষ দুইই বিপন্ন হচ্ছে এবং আরো হবে।
পরিবেশরক্ষায় সকলের অংশগ্রহণ আবশ্যক এবং তা নিশ্চিত করতে পরিবেশ স্বাক্ষরতা (এনভায়রনমেন্ট লিটারেসি) বৃদ্ধির কোনো বিকল্প নেই, বলেন পরিবেশ গবেষক ও আওয়ামী লীগের প্রথম পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপকমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খন্দকার বজলুল হকের সভাপতিত্বে ও দলের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেনের সঞ্চালনায় ওয়েবিনারে বাংলাদেশ সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড স্টাডিজ চেয়ারম্যান ড. আতিক রহমানের মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গোপালগঞ্জ-এর উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কিউ এম মাহবুব, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. জাকির হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. নাসরিন আহমাদ, স্থপতি ইকবাল হাবিব ও গাজী টিভির প্রধান সম্পাদক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা।