রমজানেও রাজধানীর বাজারে লাগামহীন মাছ-সবজির দাম। বিধিনিষেধ, সরবরাহে ঘাটতিসহ নানা অজুহাতে প্রতিদিনই এসব পণ্যের দাম বাড়াচ্ছেন বিক্রেতারা। বিধিনিষেধ-রমজানের আগে যেসব সবজির দাম বেড়েছিল, সেগুলোও কমার নাম গন্ধ নেই।
বুধবার (২১ এপ্রিল) রাজধানীর শুক্রাবাদ কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, বিধিনিষেধ আরোপের আগে কিছু সবজির যে দাম ছিল তা, এখন সেগুলোই আগের তুলনায় দ্বিগুণ বা তিনগুণ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। বাজারে এক কেজি গোল বেগুন কিনতে ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে ৮০-৯০ টাকা, যা বিধিনিষেধের আগে ৪০ টাকায় পাওয়া যেতো।
এছাড়াও বাজারে প্রতি কেজি লম্বা বেগুন ৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গত পরশু যা ৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কেজি প্রতি ২০ টাকা বেড়ে টমেটো বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা। দুইদিনে ১০ টাকা বেড়ে বাজারে ৫০ টাকা কেজিতে পেঁপে বিক্রি হচ্ছে। গত পরশু ৩০ টাকায় বিক্রি হওয়া গাজরের দাম ৪০ ঠেকেছে। সজনে ডাটা ২০ টাকা বেড়ে ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
আরও দেখা যায় বাজারে কিছু কিছু পণ্যের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। আগেরদিনের মতই বাজারে এদিন আলু ২৫ টাকা, করলা ৬০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, শসা ৭০-৮০ টাকা, কাঁচামরিচ ৬০ টাকা, পেঁয়াজ ৪০ টাকা, বরবটি ৭০ টাকা, কচুরলতি ৬০ টাকা, লাউ ৫০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ৬০ টাকা, ফুলকপি ৮০ টাকা, বাঁধাকপি ৭০ টাকা পিস বিক্রি হচ্ছে। পুঁইশাক, পালংশাক, লালশাক, ডাঁটাশাক, পাটশাক, কলমিশাকের আঁটি ২৫-৩০ টাকায় কিনতে হচ্ছে।
সবজি বিক্রেতারা বলছেন, সড়কে বিধি-নিষেধ থাকায় সবজি পরিবহনে অতিরিক্ত টাকা খরচ হচ্ছে। যার কারণে দাম বেড়েছে।
শুক্রাবাদ বাজারের সবজি বিক্রেতা আসিফ আলম বলেন, বিধিনিষেধ ছেড়ে দিলে গণপরিবহন চালু হলে আবারও সবজির দাম কমে আসবে। বাজারে সবজির ঘাটতি নেই। কিন্তু সবজি পরিবহনেই দাম বেড়ে যাচ্ছে। আমাদের আড়ৎ থেকেই বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। যার কারণে খুচরা বাজারে দাম বাড়তি।
সবজির এমন দামবৃদ্ধিতে বাজার করতে আসা ক্রেতাদের মধ্যেও অস্বস্তি বিরাজ করছে। বাজার করতে আসা ইলেকট্রিক মিস্ত্রি পাপন মীর বলেন, সবকিছুর দাম বেড়েছে, শুধু আমাদের আয় বাড়েনি। এই লকডাউনে শাকসবজি খেয়ে যে বেঁচে থাকবো, সে সুযোগও নেই। সবকিছুর দাম হাতের নাগালের বাইরে চলে গেছে। মাছের দাম বেশি, মাংসের দাম বেশি। গরিব মানুষ শাকসবজি খেয়ে বাঁচত, এখন সেটির দামও বেড়েছে।
অপরদিকে মাছের বাজারে ঘুরে দেখা গেছে, আকারভেদে ইলিশ প্রতি কেজি ৫০০-১০০০ টাকা, রূপচাঁদা ৫০০-১০০০ টাকা, চিংড়ি ৫০০-৭০০ টাকা, বড় রুই ৩০০-৩৮০ টাকা, ছোট রুই ২৫০-২৮০ টাকা, শিং ৪০০-৫০০ টাকা, তেলাপিয়া ১৩০-১৬০ টাকা, পাবদা ৪০০-৫০০ টাকা, পাঙ্গাশ ১৫০-২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে স্থিতিশীল রয়েছে ব্রয়লার মুরগির বাজার। বিধিনিষেধের দুইদিনের মধ্যেই ব্রয়লার মুরগির দাম কেজি প্রতি কমেছে ২০ টাকা। বর্তমানে বাজারে ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকা কেজি দরে। কিন্তু অপরিবর্তিত রয়েছে সোনালি ও লেয়ার মুরগির দাম। বাজারে কেজি প্রতি লাল লেয়ার বিক্রি হচ্ছে ২০০-২২০ টাকা এবং সোনালী মুরগি ২৫০-২৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও গরু ৬০০ টাকা এবং খাসির মাংস ৯০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।