বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় সর্বোচ্চ সংক্রমণ ও মৃত্যু হয়েছে ভারতে। এই সময়সীমার মধ্যে দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৭৫ হাজার ৩০৬ জন, এবং এ রোগে সেখানে মারা গেছেন ১ হাজার ৬২৫।
২২১ টি দেশে করোনায় আক্রান্ত, মৃত্যু ও সুস্থ হয়ে ওঠা বিষয়ক হাল নাগাদ তথ্য দিয়ে যাওয়া ওয়েবসাইট করোনা ওয়ার্ল্ডোমিটার এই তথ্য জানিয়েছে।
সংক্রমণ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ভারতে দৈনিক মৃত্যুও বাড়ছে লাগামহীনভাবে। রোববার (১৮ এপ্রিল) দেশটিতে মারা গিয়েছিলেন ১ হাজার ৫০১ জন। তার আগের দিন শনিবার (১৮ এপ্রিল) দেশটিতে ১ হাজার ৩৪১ জনের মৃত্যু হয়েছিল। গত বছর ১৬ সেপ্টেম্বরের পর থেকে সেটিই ছিল করোনায় আক্রান্ত হয়ে একদিনে মৃত্যুর সর্বোচ্চ সংখ্যা।
কয়েকমাস ধরে করোনায় সংক্রমণ ও মৃত্যুতে শীর্ষে আছে ভারতের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মহারাষ্ট্র। দেশটিতে দৈনি সংক্রমণ পৌঁছেছে প্রায় ৭০ হাজারের কাছাকাছি। সংক্রমণে রাশ টানতে ইতোমধ্যে রাজ্যে দুই সপ্তাহের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী উদ্ভব ঠাকরের নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকার।
ভারতে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় কেরালায়, ২০২০ সালের ৩০ জানুয়ারি। তারপর প্রায় বছরজুড়ে সংক্রমণ ও মৃত্যু ঘটতে থাকলেও গত নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত করোনা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে ছিল সেখানে। দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, ফেব্রুয়ারির দিকে ভারতে করোনায় দৈনিক সংক্রমণ গড়ে ১৫ হাজারেরও কম ছিল।
গত মার্চের ১ সপ্তাহের পর থেকেই আবার লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে শুরু করে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুহার, যাকে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ বলে উল্লেখ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। বর্তমানে ভারতজুড়ে দৈনিক সংক্রমণ এমন মাত্রায় পৌঁছেছে যে অনেক রাজ্যের হাসপাতালগুলোতে আর রোগী ভর্তি করার মতো অবস্থা নেই।
গত ১৬ জানুয়ারি থেকে দেশজুড়ে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু করেছে ভারতের সরকার। তবে সংক্রমণ লাগামহীনভাবে বাড়তে থাকায় সেখানে বিভিন্ন রাজ্যে দেখা দিয়েছে টিকা সংকট। টান পড়েছে ভারতের অভ্যন্তরীণ টিকার মজুতেও।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অবশ্য এখনও আত্মবিশ্বাসী যে ভারত সাফল্যের সঙ্গে বর্তমান এই সংকট কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হবে। শনিবার (১৭ এপ্রিল) এক ভিডিও কনফারেন্সে তিনি বলেন, ‘গত বছর ঐক্যবদ্ধভাবে করোনাভাইরাসকে পরাজিত করেছিলাম আমরা। এবার আবারও সেটাই করবে ভারত।’