সারি সারি কফিন পড়ে আছে। কিন্তু নানা জটিলতায় কবর দেওয়া যাচ্ছে না। ইতালির রাজধানী রোমে সমাধির অপেক্ষায় রয়েছে দুই হাজারেরও বেশি কফিনবন্দি লাশ। আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে লাশগুলো সমাধিস্থ করতে পারছেন না মৃতদের আত্মীয়-স্বজন ও সৎকারকর্মীরা। সম্প্রতি এই নিয়ে সেখানকার সৎকারকর্মীরা প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছেন
গত শুক্রবার (১৬ এপ্রিল) রোমের অনুষ্ঠিত হয় সৎকার কর্মীদের এ প্রতিবাদ কর্মসূচি। লাশঘরের সংরক্ষণ কর্মীরা রোমের মেয়র ভার্জিনিয়া রাগির অফিসের কাছে টেম্পল অব হারকিউলিস ভিক্টরের চারপাশে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। প্রতিবাদ নোটিশে লাশের উদ্দেশে তারা লেখেন, ‘দুঃখিত তারা আমাদের আপনাকে কবর দিতে দেবে না।’
সৎকার কর্মীদের রাষ্ট্রীয় সংগঠনের সেক্রেটারি ক্যাকসিওলির মতে, রাজধানী রোমে প্রতিবছর গড়ে ১৮ হাজার মানুষ কবরের জন্য আবেদন করে। এ কাজে পরিবারগুলোকে স্থানীয় কবরস্থান, পৌরসভার এএমএস এবং রেজিস্ট্রার অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হয়; ফলে সময় ও বিপুল অর্থ ব্যয় হয়।
গেল সপ্তাহের শুরুর দিকে ওবারদান জুকারোলি নামে এক ব্যক্তি তার মায়ের লাশ সমাধিস্থ করতে গিয়ে জটিলতায় পড়েন। তারপর রোমের চারপাশের বিলবোর্ডে একটি বার্তা সাঁটিয়ে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানান। সেই বার্তায় জুকারোলি লেখেন, ‘মা, দুঃখিত আমি আপনাকে এখনও সমাধিস্থ করতে পারিনি।’
কেমোথেরাপি দেওয়ার সময় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে লরেনা পেসারেসির স্বামী মারা গিয়েছিলেন গত জানুয়ারিতে। এখন পর্যন্ত তাকে সমাধিস্থ করতে পরেননি লরেনা। রোমের পৌরসভার কবরস্থানে মরদেহ সমাধিস্থ করতে গড়ে ৩৫ থেকে ৪০ দিন সময় লাগে বলে জানান ক্যাকসিওলি।
তিনি আরো জানান, অনেক সময় স্থানীয় চার্চ ও সৎকার কর্মীরা মৃত ব্যক্তির সৎকার না করে তার ব্যক্তিগত সম্পদের খোঁজে সময় ব্যয় করেন। অনেক ক্ষেত্রে বিশাল সম্পত্তির হদিস পাওয়া যায়। সেই সম্পত্তি স্থানীয় চার্চের হস্তগত হয়। সৎকার কর্মীরা লাশ দ্রুততম সময়ের মধ্যে দাফন সম্পন্ন করতে চাইলেও আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় তা সম্ভব হয় না।
রোমের একাধিক ভুক্তভোগী জানিয়েছেন, পরিবারগুলোর আর্থিক সক্ষমতা না থাকলে বা কবরস্থান ক্রয় করা না থাকলে সৎকারের জন্য অপেক্ষা করতে হয় মাসের পর মাস। ইতালির রাজধানী রোমের বাইরে মরদেহ সমাধিস্থ করতে জটিলতা থাকলেও সময় লাগে অনেক কম। রোমের সৎকার কর্মীরাও চান এ সমস্যার সমাধান