করোনার নকল কিট ইস্যুতে তিন প্রতিষ্ঠানের ৯ জনের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মদ জসিম। করোনা শনাক্তের নকল কিট ও রি-এজেন্ট জালিয়াতির মাধ্যমে নতুন করে মেয়াদ বাড়িয়ে বিক্রির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় তাদের।
এই ৯ জন হলেন- বায়োল্যাব ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের স্বত্ত্বাধিকারী মো. শামীম মোল্লা (৪০), ব্যবস্থাপক মো. শহীদুল আলম (৪২), প্রধান প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল বাকী ছাব্বির (২৪), অফিস সহকারী মো. জিয়াউর রহমান (৩৫), হিসাবরক্ষক মো. সুমন (৩৫), অফিস ক্লার্ক ও মার্কেটিং অফিসার জাহিদুল আমিন পুলক (২৭), সার্ভিস ইঞ্জিনিয়ার মো. সোহেল রানা (২৮), এক্সন টেকনোলজিস্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেডের এমডি মো. মাহমুদুল হাসান (৪০), হাইটেক হেলথ কেয়ার লিমিটেডের এমডি এস এম মোজফা কামাল (৪৮)।
তাদের ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে মোহাম্মদপুর থানার বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য শনিবার (১৭ এপ্রিল) দশ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তাদের তিন দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করে।
শুক্রবার (১৬ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ৩টায় র্যাব-২ এর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-২ এর অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল ইমরান উল্লাহ সরকার বলেন, ‘চক্রটি ২০১০ সাল থেকে একাধিক প্রতিষ্ঠানের নামে বিদেশ থেকে বিভিন্ন রোগের কিট এনে তা টেম্পারিং করে মেয়াদ বাড়াতো। এই তিন প্রতিষ্ঠান করোনা, ক্যানসার, এইডস, জন্ডিস, ডায়াবেটিস ও নিউমোনিয়া রোগের টেস্ট কিটের মেয়াদ বাড়িয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করত।’
র্যাব গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জানতে পারে, কিছু অসাধু প্রতিষ্ঠান অননুমোদিত মেডিকেল ডিভাইস আমদানিকরণ, নকল ও মেয়াদোত্তীর্ণ করোনার টেস্টিং কিট ও রি-এজেন্টসহ অন্যান্য রোগ নির্ণয়ে ব্যবহৃত বিভিন্ন রোগের টেস্টিং কিট ও রি-এজেন্ট মজুত ও বাজারজাত করে আসছে।
এমন সংবাদের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের প্রতিনিধিদের সহযোগিতায় রাজধানীর মোহাম্মদপুরের লালমাটিয়া এলাকায় অবস্থিত বায়োল্যাব ইন্টারন্যাশনাল ও তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠান বনানী এলাকায় অবস্থিত এক্সন টেকনোলজি এন্ড সার্ভিস লি. এবং হাইটেক হেলথকেয়ার লি. নামের তিনটি প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালানো হয়।
অভিযানে দেখা যায়, ওই তিন প্রতিষ্ঠানের কর্তাব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বিশেষ ধরনের প্রিন্টিং মেশিনের সাহায্যে মেয়াদোত্তীর্ণ ও মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার খুব অল্প সময় রয়েছে, এমন বিভিন্ন টেস্ট কিট ও রি-এজেন্টের মেয়াদ বাড়ানোর কাজ চলছে। পরবর্তীতে তাদের ওয়্যারহাউজগুলোতে তল্লাশীর সময় বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। সেখানে মজুদকৃত বেশির ভাগ মেডিকেল ডিভাইস অননুমোদিত, প্রায় সকল প্রকার টেস্ট কিট এবং রি-এজেন্টের ব্যবহারের মেয়াদোত্তীর্ণ অথবা দ্রুতই মেয়াদোত্তীর্ণ হবে।
তিনি বলেন, ‘এমনকি এইডস নির্ণয়ের জন্য নির্ধারিত প্যাথলজিক্যাল টেস্ট কিট ও রি-এজেন্টও রয়েছে এই তালিকায়, যা তাদের সংরক্ষণে মেয়াদোত্তীর্ণ অবস্থায় পাওয়া যায়।’