বিশ্বের প্রতিটি দেশই হিমশিম খাচ্ছে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ সামলাতে। তবে সংক্রমণ ঠেকাতে টালমাটাল ভারত। মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যে ভারতের উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বারে চলছে কুম্ভমেলা। এতে অংশ নেয়া ৩০ সাধুসহ গত ৫ দিনে ২ হাজার ১৬৭ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
এর মধ্যে রয়েছেন ভারতীয় সাধুদের সর্বোচ্চ সংগঠন অখিল ভারতীয় আখড়া পরিষদের সভাপতি মহান্ত নরেন্দ্র গিরি। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হরিদ্বারের প্রধান মেডিকেল অফিসার ড. শম্ভু কুমার (এসকে) ঝাঁ গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি এনডিটিভিকে জানান, কুম্ভমেলায় অংশ নেয়া ভক্ত-দর্শনার্থীদের একাধিক আখড়ায় আরটি-পিসিআর ও র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষার ব্যবস্থা ছিল। গত ১০ থেকে ১৫ এপ্রিলের মধ্যে ২ হাজার ১৬৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
প্রতি ১২ বছরে একবার গঙ্গা নদীর পাড়ে কুম্ভমেলার আয়োজন করা হয়। হিমালয়ের কোল ঘেঁষে উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বারে এই আসর বসে। দেশ-বিদেশ থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের অসংখ্য মানুষ গঙ্গাস্নান করতে কুম্ভমেলায় আসেন। এবার হরিদ্বার, তেহরি, দেরাদুন জেলার ৬৭০ হেক্টরের বেশি এলাকাজুড়ে এই মেলা চলছে। তবে করোনা সংক্রমণ রোধে মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। এই মেলা আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত।
এদিকে বেশ কয়েকজন সাধু করোনা আক্রান্ত হওয়ায় কুম্ভমেলা ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিরঞ্জনী আখড়া ও তপোনিধি শ্রী আনন্দ আখড়া। বৃহস্পতিবার তারা জানিয়েছে, ১৭ এপ্রিল কুম্ভমেলা প্রাঙ্গণ ত্যাগ করবেন ওই দুই আখড়ার সন্ত ও অনুগামীরা।
নিরঞ্জনী আখড়ার সেক্রেটারি রবীন্দ্র পুরি জানিয়েছেন, মেষ সংক্রান্তি উপলক্ষে ১৪ এপ্রিল প্রধান শাহী স্নান শেষ হয়ে গছে। আমাদের বেশ কয়েকজন সন্ন্যাসীর করোনা সংক্রমণের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। তাই আমাদের জন্য এবারের মতো কুম্ভমেলা শেষ।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর দিক থেকে বিশ্বজুড়ে দ্বিতীয় অবস্থানে ভারত। প্রথম অবস্থানে যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারতের পর আছে ব্রাজিল। গত ২ এপ্রিল থেকে বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি করোনা শনাক্ত হচ্ছে ভারতে।
বৃহস্পতিবার উত্তরাখণ্ডে ২ হাজার ২০০ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে, যা এ পর্যন্ত রাজ্যে সর্বোচ্চ শনাক্তের রেকর্ড। গত বুধবার উত্তরাখণ্ডে ১ হাজার ৯৫৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়।