অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, কোভিড মহামারিতে কৃষিকাজ ব্যাহত হয়েছে। যার ফলে চালের সরবরাহ কমে বাজারে দাম বেড়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) দুপুরে গণমাধ্যম প্রতিনিধিদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি প্রাক-বাজেট আলোচনা শেষে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন মন্ত্রী।
এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, এরইমধ্যে ৮ থেকে ১০ লাখ টন চাল আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যদিও আমরা দাবি করি খাদ্যশস্যে স্বাবলম্বী হয়েছি। খাদ্যশস্যে আমরা স্বাবলম্বী হতে পারি সেই বছর যে বছর আমাদের প্রকৃতি স্বাভাবিক থাকে। যদি প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ আসে সেটা আমরা মেইনটেইন করতে পারি না। আমাদের এখানে যে পরিমাণ জমি, দক্ষতা ও সক্ষমতা আছে তা যথাযথ কাজে লাগাতে পারলে আমরা সেই বছর সফল হই। কিন্তু আমরা দেখেছি গত বছরও আমাদের অনেক বোরো নষ্ট হয়েছে। তখন যেসব কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের জন্য একটি প্যাকেজ নেওয়া হচ্ছে। এখন সেভাবেই কাজটি করা হচ্ছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতও কৃষিতে সফল হতে পারেনি। এছাড়া আমাদের সঙ্গে যাদের যোগাযোগ আছে থাইল্যান্ডসহ সবাই কৃষিতে ঘাটতিতে রয়েছে। করোনাভাইরাস শুধু আমাদের দেশে নয় পুরো বিশ্বকেই ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। বরং আমাদের থেকে অন্যান্য দেশ বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ কারণে কৃষকরা কৃষি কাজ করতে পারেনি। স্বভাবতই যখন স্বাভাবিক জীবন যাত্রা ব্যাহত হয় তখন কৃষি কাজ ব্যাহত হয়েছে। আর কৃষি ব্যাহত হওয়ার কারণেই সরবরাহ কমে গেছে। এ কারণেই চালের দাম বেশি।
গণমাধ্যম নেতাদের বিভিন্ন পরামর্শের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, শাইখ সিরাজ খাদ্য নিরাপত্তা, কৃষিতে ভর্তুকি বাড়ানো, পোল্ট্রি শিল্পের দিকে নজর দিতে পরামর্শ দিয়েছেন। একইসঙ্গে কৃষিখাতে আমাদের শিক্ষিত তরুণরা এগিয়ে আসছে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে শহর কেন্দ্রিক ভবনের ছাদে কৃষি কাজ হচ্ছে। সে রকম আমাদের দেশেও করা যায় কি না তার পরামর্শ দিয়েছেন। নঈম নিজাম নিউজপ্রিন্টের ওপর আরোপিত কর কমানো, করপোরেট ট্যাক্স কমানোর পরামর্শ দিয়েছেন। নাইমুল ইসলাম খান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) এখন আন্তর্জাতিকমানের নয় বলে উল্লেখ করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়টিকে কীভাবে স্বীকৃত করা যায়, গবেষণার মাধ্যমে আরও বেশি আন্তর্জাতিকমানের করার বিষয়ে তিনি পরামর্শ দিয়েছেন। এছাড়া আমাদের বিভিন্ন কাজ সময়মতো হয় না বলে অপচয় হয়, সেই অপচয় বন্ধ করার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন তারা। বিশেষ করে এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রণালয়কে আরও কঠোর হওয়ার জন্য পরামর্শ হচ্ছে আমাদের আজকের আলোচনা।
অনুষ্ঠানে অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম, চ্যানেল আইয়ের বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ, বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম, আমাদের নতুন সময়ের সম্পাদক নাইমুল ইসলাম খান আলোচনায় অংশ নেন।