মিয়ানমারে সম্ভাব্য মানবতাবিরোধী অপরাধের ব্যাপারে সতর্ক করে দিয়েছেন জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট। তিনি বলেছেন, সিরিয়া ধ্বংসযজ্ঞের মতো ভয়াবহ সংঘাতের দিকে মিয়ানমার যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে।
দেশটিতে বেসামরিক হত্যাযজ্ঞ বন্ধে অবিলম্বে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে বিশ্বের প্রভাবশালী রাষ্ট্রগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। মিশেল ব্যাচেলেট বলেছেন, দেশটিতে চলমান বিক্ষোভ দমনে নিরাপত্তাবাহিনীর বলপ্রয়োগে পুরোমাত্রার সংঘাত শুরু হতে পারে।
তিনি বলেছেন, নিন্দামূলক বিবৃতি এবং সীমিত লক্ষ্যযুক্ত নিষেধাজ্ঞা স্পষ্টতই যথেষ্ট নয়। প্রভাবশালী দেশগুলোকে গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং মানবতাবিরোধী অপরাধ বন্ধে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর ওপর জরুরি ভিত্তিতে চাপ প্রয়োগ করতে হবে।
চলতি সপ্তাহে মিয়ানমারে সমন্বিত রক্তপাতের পর জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের এই আহ্বান এলো। গত শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত মিয়ানমারের বাগো শহরে পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর গুলিতে অন্তত ৮২ জনের প্রাণহানি ঘটে।
মিশেল ব্যাচেলেট বলেন, সেনাবাহিনী মিয়ানমারের জনগণের বিরুদ্ধে সামরিক-গ্রেড এবং নির্বিচারে অস্ত্র ব্যবহার করে বিক্ষোভ দমনের নির্মম সহিংস নীতি জোরদার করেছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের কার্যালয় বলছে, এমনকি বিক্ষোভে আহতদের চিকিৎসা সহায়তা দিতেও নিরাপত্তা বাহিনী বাধা দিচ্ছে। এছাড়া বিক্ষোভে নিহতদের লাশ নিতেও স্বজনদের থেকে ৯০ মার্কিন ডলার জরিমানা আদায় করছে সেনাবাহিনী। বর্তমানে বিক্ষোভকারীদের কেউ কেউ আত্মরক্ষার্থে কৃত্রিম এবং সেকেলে অস্ত্র ব্যবহার করছেন।
গত বছরের নভেম্বরে দেশটিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে অং সান সু চির এই দল বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে আবারও ক্ষমতায় আসে। কিন্তু দেশটির সামরিক বাহিনীর এই নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ এনে তদন্তের দাবি জানায়।
জরুরি অবস্থা শেষে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে বলে সেনাবাহিনী ঘোষণা দিলেও অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে রাস্তায় টানা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে আসছেন দেশটির লাখ লাখ মানুষ। দেশটিতে সামরিক অভ্যুত্থান, অং সান সু চিসহ রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের কারান্তরীণ ও অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে এখন পর্যন্ত ৭ শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে।
সূত্র: ইউএন, এএফপি।