ভারতে করোনা সংক্রমণের সাম্প্রতিক উল্লফন নিয়ন্ত্রণে আরো বেশি সংখ্যক করোনা টিকার অনুমোদন দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি দিয়েছেন দেশটির প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। চিঠিতে মহামারি পরিস্থিতি সামাল দিতে অদক্ষতার জন্য সরকারের সমালোচনাও করেছেন তিনি।
চিঠিতে সোনিয়া গান্ধী বলেন, ‘সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে একদিকে যেমন আমাদের নিজস্ব টিকাগুলোর উৎপাদন বাড়ানো প্রয়োজন, তেমনি অন্যান্য যে টিকাগুলো অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে, দ্রুত সেগুলোর অনুমোদন দেওয়াই এই মূহূর্তে সবচেয়ে বিবেচনাপূর্ণ কাজ হবে।’
গত ১৬ জানুয়ারি থেকে ভারতে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে। এই কর্মসূচিতে ব্যবহারের জন্য তিনটি করোনা টিকার অনুমোদন দিয়েছিল ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
গত শনিবার ভারতের কংগ্রেস শাসিত রাজ্যগুলোর মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেছেন সোনিয়া গান্ধী। বৈঠকে পাঞ্জাব, রাজস্থান ও ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রীরা কংগ্রেস সভানেত্রীকে জানান, করোনা টিকার টান পড়ায় তাদের রাজ্যে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে টিকাদান কর্মসূচি। টিকার উৎপাদন বাড়ানো জন্য সরকারকে তাগিদ দেওয়া প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেন তারা।
সোমবারের চিঠিতে সোনিয়া বলেন, ‘টিকা দেওয়ার জন্য কেবলমাত্র বয়সকেই বিবেচনা না করে প্রয়োজনের দিকটি নিয়ে চিন্তাভাবনা করা প্রয়োজন। একইভাবে, রাজ্যগুলোতে জন্য টিকা বরাদ্দের বেলায় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন সংক্রমণ পরিস্থিতিকে। যে রাজ্যে সংক্রমণ বেশি ছড়িয়েছে সেখানে টিকাদান প্রসারিত করতে পৃথক পরিকল্পনা রাখা উচিত।’
পাশাপাশি করোনা চিকিৎসতার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণগুলো থেকে শুল্ক তুলে নেওয়ারও দাবি জানিয়েছেন কংগ্রেস সভানেত্রী। চিঠিতে তিনি বলেন, ‘করোনায় আক্রান্তদের চিকিৎসা আরো সাশ্রয়ী করে তুলতে যাবতীয় চিকিৎসা উপকরণ, প্রয়োজনীয় যন্ত্র ও যন্ত্রাংশ, ওষুধ, অক্সিজেন সিলিন্ডারের ওপর থেকে জিসটি শুল্ক তুলে নেওয়া প্রয়োজন।’ কারফিউ ও লকডাউনে ক্ষতিগ্রস্ত দ্ররিদ্র জনসমষ্টিকে আর্থিক সহযোগিতা প্রদানের ওপরও গুরুত্ব দিয়েছেন তিনি।
ভারতের সাম্প্রতিক বিধানসভা নির্বাচন করোনা সংক্রমণ বাড়ানোর ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রেখেছে বলে চিঠিতে নরেন্দ্র মোদির সমালোচনা করেন সোনিয়া গান্ধী।
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে বিশ্বজুড়ে করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ভারতে করোনায় মোট আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ৩৬ লাখ ৮৬ হাজার ৭৩ জন। এ রোগে এখন পর্যন্ত দেশটিতে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ১ লাখ ৭১ হাজার ৮৯ জনে।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস