করোনাকালীন সময়ে অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো কওমি মাদরাসা বন্ধ রাখতে হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। যারা খোলা রাখবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন শিক্ষামন্ত্রী। ইতোমধ্যে পুলিশ প্রশাসনের কাছেও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার (৮ এপ্রিল) দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনার দ্বিতীয় ডোজের টিকা গ্রহণ করতে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় তিনি বলেন, আজ থেকে কওমি মাদরাসাগুলোর বিষয়ে মনিটরিং শুরু হবে। তবে এতিমদের জন্য শুধুমাত্র এতিমখানা খোলা রাখা হবে।
এছাড়া হেফাজত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অপরাধ কেউ করলে প্রশাসন নিয়ন্ত্রণ করবে। রাজনীতি কেউ করতে চাইলে রাজনৈতিক কার্যক্রমে অংশ গ্রহণ করবে। কিন্তু রাজনীতি করব না, রাজনৈতিক কর্মী না আমি, আবার রাজনীতির নাম করে জ্বালাও-পোড়াওয়ের মতো ঘটনা ঘটাবে, এইসব কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। মানুষের ভোগান্তি, জানমালের ক্ষতি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। ইতিমধ্যে ‘অ্যাকশান চলমান আছে, আপনারা দেখছেন বিভিন্ন জায়গায় অ্যাকশন শুরু হয়ে গেছে।
হেফাজত প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে যারা অরাজকতা করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। যারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করেছে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় হেফাজতের আক্রমণের শিকার হয়ে এক আওয়ামী লীগ নেতা মারা গেছেন। স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি কাদের ঘাড়ে বন্দুক রেখে বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডের মতো ঘটনা ঘটানোর জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে তা খুঁজে বের করতে হবে।
এছাড়া মামুনুল হককে উদ্দেশ্য করে নওফেল বলেন, কে কত বড় নেতা সেটা দেখার কোনো বিষয় নেই। প্রতিবাদ-প্রতিরোধের মুখে, ভয়ে মামুনুল চট্টগ্রামে আসে নাই। এ ব্যক্তি চরিত্রহীন ব্যক্তি। মিনিটে একজনকে তার স্ত্রী বানায়, আবার কিছুক্ষণ পর আরেক জনকে তার স্ত্রী বলে। এই ধরনের অপকর্মে হেফাজতের নেতা কর্মীরা কিভাবে জড়িত থাকে তা জাতি জানতে চায়।
এতিমখানার ছাত্র-ছাত্রীদের এইসব বিষয়ে সজাগ হওয়ার আহবান জানান নওফেল। কোমল মতি শিক্ষার্থীদের উস্কানি দিয়ে মাঠে নামানো হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। বিভিন্ন দাঙ্গা-হাঙ্গামায় ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য কওমি মাদরাসার শিক্ষার্থীদের প্রতি আহবান জানান শিক্ষা উপমন্ত্রী।
কওমি শিক্ষার সর্বোচ্চ ডিগ্রি জাতীয়ভাবে সম্মান দিয়ে ইসলামিক স্টাডিজ এ মাস্টার্সের স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। যদি ধ্বংসাত্মমূলক কার্যক্রম হেফাজত চালিয়ে যায়, অপরাধমূলক কাজ করতে থাকে, তাহলে ডিগ্রির যে স্বীকৃতি সে বিষয়টি নিয়ে বিবেচনা করে দেখতে হবে।
যথেষ্ট পরিমাণ টিকা আছে, সেগুলো সবাই পাবেন। গত বছর আতঙ্ক ও শঙ্কার কারণে অনেকে সেবা দেননি। এবার সেই অবস্থা নেই। এ বছর রোগী বাড়লে ও সমস্যা হবে না বলে জানান উপমন্ত্রী।
এ সময় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।