হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে উদ্দেশ্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমার মুখ থেকে বেশি কিছু বলতে চাই না। এদের চরিত্রটা কী? গতকালই আপনারা দেখেছেন ইসলামের নামে, ধর্মের নামে, পবিত্রতার নামে এতো কিছু বলে অপবিত্র কাজ করে সোনারগাঁয়ের রিসোর্টে গিয়ে ধরা পড়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেটা (অপকর্ম) আবার ঢাকার জন্য নানা রকমের চেষ্টা। পার্লারে কাজ করে এক মহিলাকে বউ হিসেবে পরিচয় দেয়। অন্যদিকে নিজের বউকে ফোন করে বলে— অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আমি এটা বলে ফেলেছি।’
রোববার (৪ মার্চ) সংসদের দ্বাদশ অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। এসময় সংসদে উপস্থিত সরকার দলীয় এমপিরা ‘লজ্জা, লজ্জা’ বলে বিরক্তি প্রকাশ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যারা ইসলামে বিশ্বাস করে, তারা তো এ রকম মিথ্যা কথা বলতে পারে না। তাহলে এরা কী ধর্ম পালন করে? তাহলে মানুষকে কী ধর্ম শেখাবে? হেফাজতের যারা সদস্য তাদেরকে আমি অনুরোধ করব তারা কী একটুও বুঝে, কী ধরনের নেতৃত্ব তাদের। আগুন, জ্বালাও-পোড়াও করে গিয়ে তিনি বিনোদন করতে গেলেন একটা রিসোর্টে, একজন সুন্দরী মহিলা নিয়ে। এটাই তো বাস্তবতা। এরা ইসলাম ধর্মের নামে কলঙ্ক এবং ইসলাম ধর্মকে ছোট করে দিচ্ছে।’
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ‘কিছু লোকের জন্য আজকে এই ধর্মটা (ইসলাম) জঙ্গি-সন্ত্রাসীর নাম হচ্ছে। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ধর্ম ইসলাম। ইসলাম ধর্ম সবচেয়ে সহনশীলতা শিখিয়েছে, শান্তির কথা বলেছে। সাধারণ মানুষের কথা বলেছে। সাধারণ মানুষের উন্নয়নের কথা বলেছে। সেই পবিত্র ধর্মকে এরা ধ্বংস করে দিচ্ছে। তারা ধর্মের নামে ব্যবসা শুরু করেছে। এতো অর্থ কোথা থেকে আসে এই বিনোদনের? সেটা একটা প্রশ্ন। এটা দেশবাসী বিচার করবেন। আর আইন তার আপন গতিতে চলবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘একজন মুসলমানের দায়িত্ব তার একজন মুসলমানের জানমাল রক্ষা করা। কিন্তু হেফাজতের নামে তারা জ্বালাও-পোড়াও করে যাচ্ছে এবং বিএনপি-জামায়াত তাদের মদদদাতা। এই লজ্জা শুধু বাংলাদেশের নয় জনগণের লজ্জা, সমস্ত পৃথিবীতে মুসলমানের জন্য লজ্জা। আমাদের দুঃখ হলো এই পবিত্র ধর্ম তাকে তারা সম্পূর্ণ নষ্ট করে দিচ্ছে। তাদের এসব কর্মকাণ্ডের ফলে বহু মানুষের জীবন গেছে। এমনকি এই কারণে ২৬ মার্চে অনেক মানুষের জীবন গেছে। এর জন্য দায়ী তারা।’
এ সময় তিনি দেশবাসীকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। আর এইসব অপকর্মের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিচার অবশ্যই হবে।’
হেফাজতের তাণ্ডবের বর্ণনা তুলে ধরে প্রাধনমন্ত্রী বলেন, ‘তারা ছোট্ট শিশুদের সামনে নিয়ে এসেছে। তাদের হাত দিয়ে সব করাচ্ছে। লাঠি-অস্ত্র এবং ব্যাগের ভিতর তারা বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। শুধু বাড়িতে আগুন দেয়া না। তারা কোরআন শরীফ পর্যন্ত পুড়িয়ে দিয়েছে। তারা কেমন ইসলামে বিশ্বাস করে সেটাই তো এখন প্রশ্ন। তারা কি ধর্মে বিশ্বাস করে?’