ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এলাকা নন্দীগ্রামে সংঘাত, সহিংসতা আর অনিয়মের ভোটের পরদিন শুক্রবার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, নন্দীগ্রামে ভোট চলাকালীন তৃণমূল কংগ্রসের কোনো এক কার্যালয়ে বসা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পা নাচাচ্ছেন। এই ভিডিও রাজ্যের বিরোধী দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতারা ফেসবুকে শেয়ার করে লিখেছেন মুখ্যমন্ত্রীর পা ভাঙার ঘটনা পুরো নাটক।
ভারতীয় বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার বলছে, শুক্রবার সকাল থেকে ওই ভিডিও চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। বিকেলের দিকে তা ফেসবুকে পোস্ট করেন রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র প্রণয় রায়।
তিনি বলেন, ‘আমরা প্রথম থেকেই বলেছিলাম গোটা ঘটনা নাটক। এবার দিদিমণি নিজেই সেটা প্রমাণ করে দিলেন। যে পায়ে ব্যথার জন্য তাকে হুইলচেয়ার নিয়ে ঘুরতে হয়, সেই পা উনি দিব্যি নাচাচ্ছেন! আর সেই ভাঙা পায়ের উপরে আরেকটা পা চাপিয়ে দেওয়া যায় না।’
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বসে রয়েছেন তৃণমূলের কোনো দলীয় কার্যালয়ে। বিজেপি বলছে, সেটি তৃণমূলের নন্দীগ্রামের দফতর। সেখানে টেবিলের তলা দিয়ে মমতাকে চোটগ্রস্ত বাম পা দোলাতে দেখা যায়। একটা সময়ে ব্যান্ডেজ করা বাম পায়ের ওপর ডান পা তুলে রাখেন তিনি।
বৃহস্পতিবার নন্দীগ্রামের বয়ালের মক্তব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বুথে দেড় ঘণ্টারও বেশি সময় বসেছিলেন মমতা। বুথের বাইরে উত্তেজনা তৈরি হয়। খবর পেয়ে আসেন জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা এবং নির্বাচন কমিশনের কর্তারা। মমতাকে কেন্দ্রীয় বাহিনী, রাজ্য পুলিশ এবং কমিশনের কর্মকতারা কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্য দিয়ে বুথের চত্বর থেকে বের করে আনেন। এর পর পাশে তৃণমূলের একটি দলীয় কার্যালয়ে যান।
বিজেপির দাবি, সেখানেই তোলা হয়েছে ভিডিওটি। বিজেপি নেতা প্রণয় বলেন, ‘বুথেও যে মাননীয়া নাটক করেছেন, সেটাও স্পষ্ট এই ভিডিওতে। স্পষ্টই দেখা যাচ্ছে, তিনি খোশমেজাজে আছেন। হাসতে হাসতে চায়ের আসর জমাচ্ছেন। চোখেমুখে কোনও কষ্টের ছাপ নেই। অথচ বুথে যখন ছিলেন বা যখন বেরিয়ে আসছিলেন, তখন তাকে ক্লান্ত দেখা গিয়েছে।’
প্রণয় আরো বলেন, ‘আমি আগেই সংবাদমাধ্যমে বলেছিলাম, নন্দীগ্রামের ভোট মিটে গেলেই সহানুভূতি পাওয়ার অভিনয় শেষ হয়ে যাবে। অভিনয় করার অধিকার ওর আছে। কিন্তু নিজেদের যোগ্যতায় যারা পুলিশ বা নিরাপত্তারক্ষীর চাকরি পেয়েছেন, তাদের দিয়ে হুইলচেয়ার ঠেলানোটা ঠিক নয়।’