২০২০ সালের বার্ষিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে হুয়াওয়ে। এ প্রতিবেদনে প্রতিষ্ঠানটি এর বিজনেস পারফরমেন্সের পাশাপাশি ভবিষ্যতের পরিকল্পনা ও আর্থিক পূর্বাভাস নিয়ে আলোচনা করেছে।
২০২০ সালে প্রতিষ্ঠানটির আয় ছিল প্রায় ১১ লক্ষ ৫৩ হাজার কোটি টাকা, যা বছরপ্রতি প্রবৃদ্ধি হিসাবে ৩.৮% এবং নিট মুনাফা ছিল প্রায় ৮৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকা যা ২০১৯ সালের তুলনায় ৩.২% বেশি।
এ বিষয়ে হুয়ায়ের ডেপুটি চেয়ারম্যান কেন হু বলেন, “নানা প্রতিকূলতা সত্বেও গত বছর আমরা শক্ত অবস্থানে ছিলাম”। তিনি বলেন, “আমাদের ক্রেতাদের জন্য ভ্যালু তৈরিতে, অতিমারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তায় এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ও বিশ্বজুড়ে সামাজিক প্রবৃদ্ধিতে আমরা ধারাবাহিকভাবে উদ্ভাবন করে গিয়েছি। সামঞ্জস্যপূর্ণ ব্যবসায়িক সাফল্য পেতে আমরা আমাদের কার্যক্রমকে আর সমৃদ্ধ করেছি। প্রতিকূল ব্যবসায়িক পরিবেশ সত্বেও আমরা বিশ্বায়িত ও বৈচিত্র্যপূর্ণ সরবরাহ শৃঙ্খলের (সাপ্লাই চেইন) ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ছিলাম। এক্ষেত্রে, আমরা শুধু বিশেষ কোন দেশ বা অঞ্চলের ওপর নির্ভরশীল ছিলাম না, বরং সরবরাহের ক্ষেত্রে ধারাবাহিকতা নিশ্চিতে গ্লোবাল রিসোর্সের ব্যবহার করেছি”।
২০২০ সালে, কোভিড-১৯ এর লকডাউনের মধ্যে হুয়াওয়ে ক্যারিয়ার বিজনেস ১৭০টির বেশি দেশে ১৫শ’র বেশি নেটওয়ার্কে স্থিতিশীল কার্যক্রম নিশ্চিত করেছে। যা বিশ্বজুড়ে মানুষদের টেলিওয়ার্ক, অনলাইন লার্নিং ও অনলাইন শপিং সম্পন্ন করতে সহায়ক ভ‚মিকা পালন করেছে। ক্যারিয়ার সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে কাজ করার মাধ্যমে হুয়াওয়ে শক্তিশালী কানেক্টিভিটি অভিজ্ঞতা নিশ্চিতে সহায়তা করেছে। বিশ্বের বড় শহরগুলোতে থার্ড পার্টি প্রতিষ্ঠান দ্বারা পরিচালিত ফাইভজি অভিজ্ঞতা সমীক্ষা অনুযায়ী, হুয়াওয়ে নির্মিত ক্যারিয়ারগুলোর ফাইভজি নেটওয়ার্ক গ্রাহক অভিজ্ঞতা নিশ্চিতে শীর্ষ অবস্থানে ছিল।
এছাড়াও, কয়লা খনি, ইস্পাত উৎপাদন, বন্দর এবং উৎপাদনসহ ২০টির বেশি খাতে তিন হাজারের বেশি ফাইভজি উদ্ভাবন প্রকল্প বাস্তবায়নে হুয়াওয়ে বিশ্বব্যাপী ক্যারিয়ারগুলোর সাথে কাজ করেছে।
বিভিন্ন ক্ষেত্রের নানা ধরণের সমস্যার উদ্ভাবনী সমাধান নিশ্চিত করতে গত বছর হুয়াওয়ে এন্টারপ্রাইজ বিজনেস ‘অফ অল, বাই অল, অ্যান্ড ফর অল’ ডিজিটাল ইকোসিস্টেম তৈরিতে আরও বেশি মনোনিবেশ করেছে। চলমান ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে হুয়ায়ের কারিগরি দক্ষতা ও সমাধান গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণিত হয়। এর মধ্যে একটি উদাহরণ হচ্ছে হুয়াওয়ে ক্লাউড-ভিত্তিক এইআই-অ্যাসিসটেড ডায়াগনোস্টিক সল্যুশন, যা হাসপাতালগুলোকে এর অবকাঠামো সংশ্লিষ্ট প্রতিবন্ধকতা কমাতে সহায়তা করেছে। পাঁচ কোটির বেশি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল শিক্ষার্থীদের জন্য ক্লাউড-ভিত্তিক অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্ম উন্মোচনে হুয়াওয়ে বিভিন্ন অংশীদারদের সাথে কাজ করেছে।
হুয়াওয়ের ২০২০ সালের বার্ষিক প্রতিবেদনে সকল আর্থিক বিবৃতি স্বাধীনভাবে অডিট করেছে আন্তর্জাতিকভাবে চারটি বৃহৎ অ্যাকাউন্টিং প্রতিষ্ঠানের একটি – কেপিএমজি।
হুয়াওয়ে:
হুয়াওয়ে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান। সমৃদ্ধ জীবন নিশ্চিতকরণ ও উদ্ভাবনী দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে একটি উন্নত ও সংযুক্ত পৃথিবী গড়ে তোলাই প্রতিষ্ঠানটির উদ্দেশ্য। নতুন উদ্ভাবনের মাধ্যমে হুয়াওয়ে একটি পরিপূর্ণ আইসিটি সল্যুশন পোর্টফোলিও প্রতিষ্ঠা করেছে, যা গ্রাহকদের টেলিকম ও এন্টারপ্রাইজ নেটওয়ার্ক, ডিভাইস এবং ক্লাউড কম্পিউটিং-এর সুবিধাসমূহ প্রদান করে। প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের ১৭০টির বেশি দেশ ও অঞ্চলে সেবা দিচ্ছে, যা বিশ্বের এক তৃতীয়াংশ জনসংখ্যার সমান। এক লাখ ৯৪ হাজার এর বেশি কর্মী নিয়ে বিশ্বব্যাপী টেলিকম অপারেটর, উদ্যোক্তা ও গ্রাহকদের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করে ভবিষ্যতের তথ্যপ্রযুক্তি ভিত্তিক সমাজ তৈরির লক্ষ্যে হুয়াওয়ে এগিয়ে চলেছে।
শীর্ষস্থানীয় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ে, গত ২১ বছর ধরে বাংলাদেশের তথ্য-প্রযুক্তি শিল্প, টেলিকম অপারেটর এবং স্থানীয় অংশীদারদের সাথে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে, যার মাধ্যমে দেশের সাধারণ মানুষের কাছে তথ্য-প্রযুক্তির সেবা পৌঁছে দিয়ে ’ডিজিটাল বাংলাদেশে’র স্বপ্ন পূরণে অসামান্য ভূমিকা রেখে চলেছে প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়া বিভিন্ন সিএসআর কর্মসূচী পরিচালনার মাধ্যমে সামাজিক ক্ষেত্রেও নানান অবদান রাখছে হুয়াওয়ে। অগ্রযাত্রার পথে, বাংলাদেশের সাথে এই লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছে হুয়াওয়ে।