সিরিজের শেষ ম্যাচেও নিউ জিল্যান্ড দাপট দেখাল। বাংলাদেশ পরাজয়ের বৃত্ত ভাঙতে পারল না।ব্যর্থতার ষোলোকলা পূর্ণ করে শেষ ম্যাচ হেরেছে আরও বাজেভাবে।
অকল্যান্ডে বাংলাদেশের আমন্ত্রণে ব্যাটিংয়ে নেমে নিউ জিল্যান্ড নির্ধারিত ১০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৪১ রান তোলে। বাংলাদেশের ইনিংস থেমে যায় ৭৬ রানে। ৬৫ রানের পরাজয়ে নিউ জিল্যান্ডের মাটিতে আরেকটি জয়হীন সফর শেষ করলো বাংলাদেশ। তিন ফরম্যাট মিলিয়ে বাংলাদেশ নিউ জিল্যান্ডে স্বাগতিকদের বিপক্ষে ৩২ ম্যাচ খেলেছে। জয় পায়নি কোনো ম্যাচেই।
বাংলাদেশের টস জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পেছনে বড় কারণ ছিল উইকেট সম্পর্কে ধারণা না থাকা। অকল্যান্ডের চারদিনের বৃষ্টিতে উইকেট থেকে কভার উঠেনি। ঝুঁকি না নিয়ে স্বাগতিকদের ব্যাটিংয়ে পাঠালেন মাহমুদউল্লাহর পরিবর্তে অধিনায়কত্ব পাওয়া লিটন।
আগে ব্যাটিংয়ের সুযোগ মানেই বড় লক্ষ্যের পথে ছুটে চলা। কিউইরা তাই করলো। বাংলাদেশের ছন্নছড়া বোলিং ও হতশ্রী ফিল্ডিংয়ে রানের উৎসব করলো। ১০ ওভারের খেলায় রান তুললো ওভারপ্রতি ১৪.১ করে। কমপক্ষে ১০ ওভার খেলা হয়েছে এমন ম্যাচে আজকের রান রেট দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
নিউ জিল্যান্ডের ইনিংসে ছিল বাউন্ডারির ছড়াছড়ি। ৬০ বলের ২২টি সীমানার বাইরে পাঠিয়েছেন। ১২টি ছিল চার, ১০টি-ই ছক্কা। শুধুমাত্র বাউন্ডারি থেকেই স্বাগিতকরা পায় ১০৮ রান।
উদ্বোধনী জুটিতে মার্টিন গাপটিল ও ফিন অ্যাালেন তুললেন ৫.৪ ওভারে ৮৫ রান। এ রান পেতে রুবেল, মোসাদ্দেক, সৌম্যর ভূমিকাও ছিল! অ্যালেনের তিন ক্যাচ ছেড়েছেন তারা। মেহেদীকে ছক্কায় উড়িয়ে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করতে চেয়েছিলেন ৫ ছক্কা হাঁকানো গাপটিল। কিন্তু ডিপ এক্সট্রা কভারে আফিফের হাতে ধরা পড়েন তিনি। কিউই ওপেনার ৪৪ রান করেন মাত্র ১৯ বলে।
কিন্তু আরেক ওপেনারকে বাংলাদেশকে থামাতে পারেননি। ১৮ বলে হাফ সেঞ্চুরির পর ব্যাট হাতে আরও আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেন তিনি। নিউ জিল্যান্ডের হয়ে যৌথভাবে দ্রুততম হাফ সেঞ্চুরির রেকর্ডও গড়েন তিনি। এর আগে কলিন মুনরোও ১৮ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন। হাফ সেঞ্চুরির পর শরিফুলের হাতে ফিরতি ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান অ্যালেন। শেষ পর্যন্ত তার ইনিংসটি থামে অতিরিক্ত খেলোয়াড় মিরাজের কল্যাণে। ২৯ বলে ৭১ রান করে অ্যালেন তাসকিনের বলে আউট হন। ১০ চার ও ৩ ছক্কায় সাজান তার ইনিংসটি।
আগের ম্যাচে ঝড় তোলা ফেলপস পারেননি দলের দাবি পূরণ করতে। ৬ বলে ১৪ রান করে শরিফুলের বলে আউট হন। ইনিংসের শেষ বলে রান আউট হন ডার্ল মিচেল। ৬ বলে ১১ রান করেন তিনি।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে সাউদির প্রথম ওভারে দুই উইকেট নেই বাংলাদেশের। সৌম্য দুই বাউন্ডারিতে ভালো শুরুর পর নিউ জিল্যান্ডের অধিনায়কের স্লোয়ারে ফিরতি ক্যাচ দেন। তিনে নেমে লিটন প্রথম বলে স্কুপ করতে গিয়ে বোল্ড হন।
বাংলাদেশ চতুর্থ ওভারে আবার জোড়া উইকেট হারায়। নাঈম ইসলাম লেগ স্পিনার টড অ্যাস্টেলকে উড়াতে গিয়ে লং অনে ধরা পড়েন ১৯ রানে। বাংলাদেশের তিন পরিবর্তনের একটি ছিল নাজমুল হোসেন শান্ত। সফরে প্রথমবার খেলতে নেমে অ্যাস্টেলের বলে শান্ত বোল্ড ৮ রানে। এক ওভার পর আবার অ্যাস্টেলে ধরাশয়ী বাংলাদেশের মিডল অর্ডার। এবার আফিফ হোসেন (৮) ও মেহেদী (০) নিজেদের উইকেট উপহার দেন। ২ ওভারে মাত্র ১৩ রানে ৪ উইকেট নিয়ে লেগ স্পিনার উড়ছিলেন অকল্যান্ডে।
পরের ব্যাটসম্যানরা পরাজয়ের ব্যবধান কমিয়েছেন মাত্র। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে নাসুম আউট হলে হলে চড়া হাসি নিয়ে অকল্যান্ডের সবুজ গালিচা ছাড়ে কিউইরা। টি-টোয়েন্টিতে এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন রান। এর আগে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষেই ৭০ করেছিল ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। এছাড়া ৭৮ রানে অল আউট হয়েছিল ২০১০ সালে হ্যামিল্টনে।