সরকারের সিদ্ধান্ত মেনে বাস ও ট্রেনের মত লঞ্চেও অর্ধেক যাত্রী পরিবহন করা হবে। এ জন্য দু-একদিনের মধ্যে বাড়ছে লঞ্চ ভাড়া। বুধবার (৩১ মার্চ) সচিবালয়ে ঈদ ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বৈঠক শেষে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। লঞ্চের ক্ষেত্রেও বাসের মতো ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়ানো প্রস্তাব দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন লঞ্চ মালিকরা।
খালিদ মাহমুদ বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি গুরুত্বপূর্ণ। ১৮ দফা স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে বলা হয়েছে। ঈদযাত্রার প্রস্তুতি যেন ভালোভাবে নিতে পারি সেজন্য সবাই সম্মত হয়েছে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঈদযাত্রা হবে।’
তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করতে গেলে যাত্রীর সংখ্যা কমিয়ে ফেলতে হবে। লঞ্চ মালিকরা আমাদের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে কতটুকু ভাড়া বাড়ানো যায় সেটি আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিয়ে মন্ত্রণালয়কে জানাবেন, আমরা সে আলোকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেব।’
‘এর আগে আমাদের অভিজ্ঞতা আছে, সেই আলোকে লঞ্চ মালিকদরে সঙ্গে কথা বলে তাদের ক্ষতি পোষাতে কতটুকু ভাড়া বাড়ানো যায় তা নিয়ে আলোচনা করব।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ গতবারের থেকে বেশি, যদি প্রয়োজন না হয় কেউ যেন স্থানান্তর না হন, স্বাস্থ্যবিধিটা যেন মেনে চলি। যাত্রীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে লঞ্চে উঠতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মানার ক্ষেত্রে কোনো লঞ্চ ব্যত্যয় ঘটালে আমরা তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
তিনি বলেন, ‘লঞ্চ মালিকদের আমরা কঠোর নির্দেশনা দিয়েছি, তারাও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে আমাদের সঙ্গে একমত হয়েছেন। বাস ও ট্রেনের সিট নম্বর আছে। কিন্তু লঞ্চের নকশাটা খুব জটিল একটা বিষয়। সেই জটিলতা কাটানোর জন্য আজ-কালকের মধ্যে একটা ব্যবস্থা নেব।’
‘গতবার আমরা একটা ব্যবস্থা নিয়েছিলাম, তবে আমরা খুব বেশি সফল হয়েছি, এটা বলা যাবে না। এবার আমরা সফল হতে চাই’ বলেন প্রতিমন্ত্রী।
খালিদ মাহমুদ বলেন, ‘বিআইডব্লিউটিএ মালিকরা বসে ভাড়া বাড়ানোর বিষয়ে আমাদের জানিয়ে দেবেন আমরা সেই ভাবেই ব্যবস্থা নেব। আশা করি, কাল থেকেই ভাড়া বাড়বে।’
লঞ্চ মালিক সমিতির সহ-সভাপতি শহিদুল ইসলাম ভূইয়া সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা ৬০ শতাংশ ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছি। আর আমরা যাত্রীদের বলব, আপনারা যে যেখানে থাকবেন সেখানেই ঈদ করবেন। এটা সবার জন্যই ভালো।’
এছাড়া সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, অনুমোদিত ভাড়ার চেয়ে বেশি ভাড়া আদায় করা হলে এবং নদীর মাঝপথে নৌকাযোগে যাত্রী উঠালে সংশ্লিষ্ট লঞ্চ মালিক ও চালকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে। ঈদের আগের তিনদিন ও পরের তিনদিন নিত্য প্রয়োজনীয় ও দ্রুত পচনশীল পণ্যবাহী ট্রাক ছাড়া সাধারণ ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যান ফেরিতে পারাপার বন্ধ থাকবে।
আগামী ১১ মে থেকে ১৭ মে পর্যন্ত দিনের বেলাও সব বালুবাহী বাল্কহেড চলাচল বন্ধ রাখতে হবে। সব যাত্রীবাহী নৌযানে সদরঘাটে ঈদের আগের পাঁচদিন মালামাল/মোটর সাইকেল পরিবহন সম্পূর্ণরূপে বন্ধ এবং ঈদের পরে অন্যান্য নদী বন্দর হতে আগত নৌযানে পাঁচদিন মালামাল/মোটর সাইকেল পরিবহন সম্পূর্ণরূপে বন্ধ থাকবে বলেও সভায় সিদ্ধান্ত হয়।