স্বাধীনতাবিরোধী প্রেতাত্মাদের এই বাংলাদেশে উত্থান ঘটতে দেয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। মঙ্গলবার (৩০ মার্চ) দুপুরে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে ঢাকার গেন্ডারিয়ায় মিল ব্যারাক নৌ জেটিতে বাংলাদেশ আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি আয়োজিত নৌ র্যালি, ২০২১ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।
রেজাউল করিম বলেন, ’৭১-এর রাজাকাররা কেউ হেফাজত নামে, কেউ নেজামে ইসলাম নামে, কেউ মুসলীম লীগ নামে নতুন করে দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছে। ইসলাম ধর্ম সহিংসতায় বিশ্বাস করে না, সন্ত্রাসকে পছন্দ করে না, জঙ্গিবাদে বিশ্বাস করে না। মহানবী রাসুলুল্লাহ (সা.) ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেছেন। কারো ওপর জুলুম না করতে বলেছেন, ফেৎনা-ফেসাদ সৃষ্টি না করার জন্য বলেছেন। তিনি বলেছেন এগুলো যুদ্ধের চেয়ে বড় অপরাধ। কিন্তু ইসলামের নামধারী কিছু উচ্ছৃঙ্খল, সাম্প্রদায়িক শক্তি বাংলাদেশকে নতুন করে অস্থিতিশীল অবস্থায় নিয়ে যেতে চাইছে।
এ প্রসঙ্গে প্রাণিসম্পদমন্ত্রী বলেন, দেশ যখন শান্তিতে আছে, মানুষের যখন অভাব-অনটন নেই, অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসার সব সুযোগ যখন মিলছে, এটা একটা শ্রেণির লোকদের ভালো লাগছে না। এরা হলো মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি। ওরা মারা যায়নি। ওদের প্রেতাত্মারা বেঁচে আছে। ওদের সন্তানরা এদেশে এখনো বেঁচে আছে। যারা মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ পছন্দ করে না, শান্তির বাংলাদেশ পছন্দ করে না, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ পছন্দ করে না, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ পছন্দ করে না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের যে অপ্রতিরোধ্য গতি এটা ওদের ভালো লাগছে না। এজন্য বেগম খালেদা জিয়া নিজ বাড়িতে থেকেও অকৃতজ্ঞের মতো মির্জা ফখরুল ও কজনকে দিয়ে দেশের পরিবেশ অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছেন।
মন্ত্রী বলেন, এ সময়ে একজন মানুষও না খেয়ে নেই, বিবস্ত্র অবস্থায় নেই, টাকার অভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারে না এমন অবস্থায় নেই। বাংলাদেশে অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা ও শিক্ষায় অভাবনীয় উন্নতি হয়েছে। বর্তমানে ইলিশ অহরণে বাংলাদেশ পৃথিবীর সেরা অবস্থানে রয়েছে। মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে তৃতীয় অবস্থান, স্বাদু পানির মাছ উৎপাদন বৃদ্ধিতে দ্বিতীয় অবস্থান এবং চাষের মাছ উৎপাদনে পঞ্চম অবস্থানে থেকে সারাবিশ্বে মাছ উৎপাদনে আমরা আমূল পরিবর্তন আনতে পেরেছি। এক্ষেত্রে মৎস্যজীবীদের বড় ভূমিকা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মৎস্য খাতকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি চান ভাতে-মাছে বাঙালি সংস্কৃতির মাছ যেন বিলুপ্ত হয়ে না যায়। মাছের সংকট যেন না হয়। মাছের মাধ্যমে মানুষের পুষ্টি ও আমিষের চাহিদা যেন মেটানো যায়। মাছ রপ্তানি করে যেন আমরা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে পারি, মৎস্য চাষের মাধ্যমে যেন বেকারদের বেকারত্ব দূর করা যায়, তারা যেন উদ্যোক্তা হতে পারে। সেজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বড় বড় প্রকল্প গ্রহণ করেছেন। মৎস্য চাষ এখন গর্বের বিষয়। এটি এখন অর্থ-বিত্তের সুযোগ করে দিচ্ছে।
বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, শেখ হাসিনার নেতৃত্ব ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সমালোচনা যেখানেই হবে সেখানে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য মৎস্যজীবী লীগের প্রতিটি নেতাকর্মীদের এ সময় আহ্বান জানান মন্ত্রী।
বাংলাদেশ আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি মো. সায়ীদুর রহমানের সভাপতিত্বে সংগঠনটির কার্যকরী সভাপতি সাইফুল ইসলাম মানিক, সাধারণ সম্পাদক লায়ন শেখ আজগর নস্করসহ ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ ও বিভিন্ন জেলা-উপজেলা ও মহানগর কমিটির নেতৃবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।