spot_img

ভারতে নতুন ধরনের ‘ডাবল মিউট্যান্ট` কোভিড ভাইরাস শনাক্ত

অবশ্যই পরুন

ভারতে নতুন ধরনের ‘ডাবল মিউট্যান্ট’ করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ ধরনের ভাইরাসে দুইটি মিউটেশন বা ডিএনএ পরিবর্তনের দুই ধরনের ক্ষমতা থাকে, যা শরীরের সাধারণ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে পাশ কাটিয়ে আক্রমণ করে বা রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বাড়িয়ে দেয়।

সেই সঙ্গে দেশটিতে ১০ হাজার ৭৮৭টি নমুনা পরীক্ষা করে করোনাভাইরাসের আরও ৭৭১টি ধরন শনাক্ত হয়েছে। তার মধ্যে ৭৩৬টি যুক্তরাজ্যে শনাক্ত হওয়া ভাইরাসের ধরন, ৩৪টি দক্ষিণ আফ্রিকায় পাওয়া ধরন আর একটি ব্রাজিলের ভাইরাসের ধরন পাওয়া গেছে।

ভারতে সম্প্রতি করোনাভাইরাসে শনাক্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার খবরের মধ্যেই এসব তথ্য জানা গেল। তবে দেশটির সরকার বলছে, সাম্প্রতিক নতুন শনাক্ত রোগী বৃদ্ধির সঙ্গে ভাইরাসের এসব নতুন ধরন পাওয়ার কোন সম্পর্ক নেই।

বুধবার ভারতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ৪৭ হাজার ২৬২ নতুন রোগী শনাক্ত আর ২৭৫ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়। এই বছরের মধ্যে একদিনে এটাই ভারতে সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্তের রেকর্ড। ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণে থাকা ১০টি জাতীয় গবেষণাগারের এসব নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং করে এসব তথ্য জানা গেছে।

ভাইরাসের মধ্যে থাকা জেনেটিক কোড অনেকটা ব্যবহার বিবরণীর মতো। ভাইরাসের ক্ষেত্রে মিউটেশন বা ডিএনএ-র পরিবর্তন করাও স্বাভাবিক একটি ব্যাপার। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সেগুলো এত বেশি গুরুত্বহীন যে, শরীরের ভেতর বড় কোন অসুস্থতা বা সংক্রমণ তৈরি করতে পারে না।

কিন্তু যুক্তরাজ্যে বা দক্ষিণ আফ্রিকায় পাওয়া নতুন ধরনের ভাইরাসের কিছু কিছু মিউটেশন আরও বেশি সংক্রামক এমনকি মৃত্যুর কারণ হয়ে উঠতে পারে। ভাইরোলজিস্ট শহিদ জামিল ব্যাখ্যা করে বলছেন, ডাবল মিউটেশন মানে হলো, কোন একটা ভাইরাসে একই সঙ্গে দুইটি মিউটেশন বা পরিবর্তন করার ক্ষমতা রয়েছে।

”ভাইরাসের স্পাইক প্রোটিনে দুইটি মিউটেশন থাকার মানে হলো, সেটি আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বাড়িয়ে দেয় এবং ভাইরাসকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়। ফলে এটি আরও বেশি সংক্রামক হয়ে ওঠে,” বলছেন তিনি।

স্পাইক প্রোটিন হলো ভাইরাসের সেই অংশটি, যা মানব কোষের ভেতর প্রবেশ করে থাকে। ড. শহিদ জামিল ধারণা করেন, ভারতে হয়তো দুইটি ভাইরাসের আলাদা ধরনের একটি যোগসূত্র তৈরি হয়েছে।

তবে এসব নতুন ধরনের সঙ্গে ভারতে সম্প্রতি করোনাভাইরাস রোগী শনাক্তের হার বৃদ্ধির কোন সম্পর্ক থাকার কথা নাকচ করে দিয়েছে ভারতের সরকার।

”যদিও নানা ধরনের ভাইরাসের একটি উদ্বেগ রয়েছে এবং নতুন ধরনের ডাবল মিউট্যান্ট ভাইরাস ভারতে পাওয়া গেছে, কিন্তু সেগুলো এতো বেশি সংখ্যায় পাওয়া যায়নি যাতে বলা যাবে যে, কিছু রাজ্যে হঠাৎ করে শনাক্তের হার বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে।”

জিনোম সিকোয়েন্সিং করার জন্য সরকারের প্রতি বিশেষজ্ঞদের আহবানের পর নতুন এসব তথ্য বেরিয়ে এলো।

এ মাসের শুরুর দিকে ড. জামিল বলেছিলেন, ”আমাদের জনগণের ভেতর যাতে উদ্বেগজনক কোন ভাইরাসের ধরন ছড়িয়ে পড়তে না পারে, সেজন্য অব্যাহত নজরদারি আর কার্যকর ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। এখনো কিছু ঘটেনি মানে যে ভবিষ্যতেও ঘটবে না, সেটা বলা যাবে না। আমাদের শুধু নিশ্চিত করতে হবে যেন আমরা আগেভাগে সেটা বুঝতে পারি।”

বিশ্বে ভারত হচ্ছে করোনাভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সিং করা পঞ্চম দেশ। গত বছরের জানুয়ারিতে দেশটিতে প্রথম করোনাভাইরাস রোগী শনাক্ত হয়। এরপর দেশটি বিশ্ব থেকে নিজেকে অনেকটাই আলাদা করে রেখেছে।

ভারতে এ পর্যন্ত এক কোটি ১৭ লাখ করোনাভাইরাস রোগী শনাক্ত হয়েছে এবং এক লাখ ৬০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এই মাস থেকে দেশটিতে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা হঠাৎ করে অনেক বেড়ে গেছে। যদিও এক বছর ধরে করোনাভাইরাস বিপর্যয়ে থাকা দেশটির স্বাস্থ্যখাত অনেকটাই নাজুক হয়ে পড়েছে।

ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে অনেক রাজ্য আবার কারফিউ, লকডাউনের মতো কড়াকড়ি পদক্ষেপ নিতে চলেছে। দিল্লি ও মুম্বাই শহর কর্তৃপক্ষ এর মধ্যেই বিমানবন্দর, রেল স্টেশন এবং শপিং মলের মতো জায়গায় গণহারে র‍্যাপিড টেস্ট করার নির্দেশনা জারি করেছে।- বিবিসি বাংলা

সর্বশেষ সংবাদ

যুক্তরাষ্ট্রে ঘরের ভেতরে পরিচিতদের মধ্যে গোলাগুলি, অস্ত্রধারীসহ নিহত ৫

তিনটি বাড়িতে আলাদা বন্দুক হামলায় অস্ত্রধারীসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন। ঘটনাগুলো ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় সোমবার (১১ নভেম্বর) সন্ধ্যা পৌনে...

এই বিভাগের অন্যান্য সংবাদ