দু’মাসে ১০ কোটি মানুষ প্রতিষেধক পেয়েছেন। কথা ছিল করোনাভাইরাস মোকাবিলায় এই সাফল্য নিয়ে বলার। কিন্তু নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তুলে ধরলেন অন্য এক পুরনো ‘ভাইরাস’-এর কথা। সেটি হল জাতিবিদ্বেষ। যা নিয়ে কখনওই তেমন উচ্চবাচ্য হয় না যুক্তরাষ্ট্রে।
জর্জিয়ার এশীয়-আমেরিকান সম্প্রদায়ের শোকগ্রস্ত, ক্ষুব্ধ ও উদ্বিগ্ন প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলার পরে শুক্রবার বাইডেন এমোরি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সংক্ষিপ্ত কিন্তু জোরালো বক্তৃতা দেন। কোনও রকম রাখঢাক না-করে স্বীকার করেন, এশীয়-আমেরিকানদের বিরুদ্ধে হিংসা হু-হু করে বাড়ছে যুক্তরাষ্ট্রে। তার কথায়, ‘ভিন্দেশিদের ঘৃণা করা ও জাতিবিদ্বেষের ঘটনাগুলোকে যুক্তরাষ্ট্র আর মেনে নিতে পারে না।’
গত সপ্তাহে আটলান্টার তিনটি ম্যাসাজ পার্লারে আট জনকে গুলি করে খুন করেছে ২১ বছরের শ্বেতাঙ্গ যুবক রবার্ট এ লং। তদন্তকারীরা অর্থনৈতিক উদ্বেগ ও যৌন আসক্তিকে এর কারণ হিসেবে চালানোর চেষ্টা করলে অনেকেই তার প্রতিবাদ করেন। বলা হয়, ঘটনাটি তার চেয়েও কিছু বেশি। নিহতদের মধ্যে ছ’জনই এশীয় আমেরিকান মহিলা। অনেকেই এই বলে সরব হন যে, এর পিছনে রয়েছে এশীয় আমেরিকান ও মহিলাদের প্রতি ঘৃণা। প্রেসিডেন্ট বাইডেনও এ দিন বলেন, ‘এই ঘৃণার বিষ দীর্ঘদিন ধরে আমেরিকাকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে। বহু সময়েই এ সব নিয়ে নীরব থাকা হয়। কিন্তু নীরব থাকা মানে মেনে নেয়া। আমাদের বলতেই হবে এ সবের কথা। কিছু করতেই হবে।’
বেসরকারি সূত্র জানাচ্ছে, এশীয় আমেরিকান ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপগুলির বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক আচরণের ৩ হাজার ৮০০টি ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে গত এক বছরে। কোথাও শারীরিক বা মৌখিক আক্রমণ, কোথাও বৈষম্য বা নাগরিক অধিকার না-দেওয়ার মতো ঘটনা। সমাজকর্মীদের দাবি, অনেক ক্ষেত্রেই অভিযোগ দায়ের হয় না। চোরাগোপ্তা চলতেই থাকে ঘটনাগুলি।
আটলান্টার হত্যালীলায় স্বজনহারাদের কথা শোনাটা কতটাই হৃদয় বিদারক ছিল, এ দিন তা বিশেষ ভাবে উল্লেখ করেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। জাতিবিদ্বেষ ছড়ানোর প্রশ্নে নাম না-করে পূর্বসূরি ডোনাল্ড ট্রাম্পকেও একহাত নেন। চীনে নোভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রথম চিহ্নিত হয়েছিল বলে ক্রমাগত সেটিকে চীনা ভাইরাস বলে গিয়েছেন ট্রাম্প। গত বছর এ নিয়ে প্রবল বিরোধিতার মুখে পড়তে হয়েছিল ট্রাম্পকে। বাইডেন এ দিন বলেন, ‘কিছু বললে তার পরিণাম পেতেই হয়। এটা করোনাভাইরাস। সেটাই শেষ কথা।’ সূত্র: রয়টার্স।