ভ্রমণ ও পর্যটন চালু রাখতে ভ্যাকসিন পাসপোর্ট চালু করার পরিকল্পনা উন্মোচন করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন(ইইউ)। ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি উরসুলা ভন ডার লিয়েন ইইউর ডিজিটাল বুধবার সবুজ রঙের ভ্যাকসিন পাসপোর্টের রূপরেখা তুরে ধরেছেন। পাসপোর্টগুলো জুনের শুরু থেকে কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে।
জোরকদমে কোভিডের টিকাকরণ চলছে ইউরোপের প্রায় সব দেশে। বাসিন্দাদের অনেকেই টিকার দু’টি ডোজ নিয়ে ফেলেছেন। এই অংশের কথা মাথায় রেখেই এই বিশেষ ‘ডিজিটাল গ্রিন সার্টিফিকেট’ বা ‘ভ্যাকসিন পাসপোর্ট’ চালুর পদক্ষেপ নিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এর ফলে যারা ভ্যাকসিন নিয়ে ফেলেছেন, তাদের বিদেশ সফরে আর কোনও বাধা থাকবে না। মহামারি পরিস্থিতিতে স্বাধীন ও নিরাপদ পর্যটনের উদ্দেশেই এই উদ্যোগ।
তবে আপাতত নিজেদের ব্লকের অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোয় সফরের ক্ষেত্রেই এই বিশেষ পাসপোর্ট চালু করার কথা ভাবছে ইইউ। এতে লেখা থাকবে নির্দিষ্ট ব্যক্তির কোভিড সংক্রান্ত ইতিবৃত্তান্ত। সেই ব্যক্তির কখনও করোনা হয়েছিল কি না, বর্তমানে সে করোনা-নেগেটিভ কি না, ভ্যাকসিন নিয়েছেন কি না, যাবতীয় সব। আইসল্যান্ড, নরওয়ে, সুইজারল্যান্ড ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, সার্টিফিকেটটি ব্যবহারে তাদের সায় আছে। ব্রিটেনও নিজেদের মতো করে ‘ভ্যাকসিন পাসপোর্ট’ শুরুর কথা ভাবছে। আসন্ন গ্রীষ্মে পর্যটনের মরসুম স্বাভাবিক করতে চায় তারা।
২৫ মার্চ এ নিয়ে বৈঠকে বসবে ইইউ। ‘ভ্যাকসিন পাসপোর্ট’ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে। ইউরোপের দেশগুলি একে অন্যের সঙ্গে সমন্বয় রেখে, ধীরে ধীরে করোনা-সংক্রান্ত কড়াকড়ি কমাতে চায়। ইউরোপের দেশগুলোতে একসঙ্গে সংক্রমণ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ, সব দেশের মধ্যে অবাধ যাতায়াত। যেমন, ইটালিতে প্রথম সংক্রমণ ছড়ায় পর্যটকদের থেকে। সন্দেহ করা হয়, চীন ফেরত এক জার্মান পর্যটকের থেকে প্রথম করোনা সংক্রমণ ছড়িয়েছিল ইটালিতে।
ইইউ-এর স্বাস্থ্য ও খাদ্য নিরাপত্তা বিভাগের কমিশনার স্টেলা কাইরিয়াকাইডস বলেন, ‘আমরা একযোগে একটা পদক্ষেপ করতে চাইছি। যাতে ধীরে ধীরে ইউরোপের দরজা খুলে দেয়া যায়। এই মহাদেশের পরিস্থিতি এখনও খুব কঠিন। লক্ষ্য হল, টিকাকরণের মাধ্যমে ইউরোপের মধ্যে যাতায়াত ক্রমশ অবাধ করে দেয়া।’ পর্যটন শিল্পকে চাঙ্গা করতে ‘ভ্যাকসিন পাসপোর্ট’ ব্যাপক সাহায্য করবে বলে আশা আইসল্যান্ডের। তারা জানিয়েছে, ভ্যাকসিনের সম্পূর্ণ ডোজ নেয়া হয়ে গেলে সে-দেশে ঢুকতে আর বাধা দেয়া হবে না। সীমান্তে কোনও কড়াকড়িও সহ্য করতে হবে না পর্যটকদের। অর্থাৎ কি না, করোনা পরীক্ষা করাতে হবে না। কোয়ারেন্টিনেও থাকতে হবে না। সূত্র: সিটিএএম।