পাকিস্তান সৃষ্টিতেও বঙ্গবন্ধুর অবদান রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম. মোজাম্মেল হক। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার (১৮ মার্চ) বেলা পৌনে ১২টায় রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ১৯ মার্চ প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ দিবস উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ মন্তব্য করেন তিনি।
মোজাম্মেল হক বলেন, পাকিস্তান সৃষ্টিতে বঙ্গবন্ধুর অবদান রয়েছে। পাকিস্তানের তিনটি প্রদেশ অখণ্ড ভারতের পক্ষে ছিল। একটি প্রদেশ শুধু পাকিস্তান সৃষ্টির পক্ষে ছিল। ফলে পাকিস্তান সৃষ্টির বিষয়টি আটকে যায়। তখন বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালিরা পাকিস্তান সৃষ্টির পক্ষে ভোট দেয়। ফলে বাঙালিদের ভোটেই পাকিস্তান সৃষ্টি হয়। কিন্তু পাকিস্তান সৃষ্টির পর তৎকালীন তরুণ ছাত্রনেতা বুঝতে পারেন যে পাকিস্তান দিয়ে বাঙালিদের ভাগ্যের উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই ১৯৪৮ সালে ছাত্রলীগ গঠন করেন বঙ্গবন্ধু। তখন থেকেই মূলত মুক্তিযুদ্ধের সংগ্রাম শুরু হয়।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়কমন্ত্রী বলেন, ১৯ মার্চ আকস্মিক কোনো ঘটনা নয়। পাকিস্তান আমলের দীর্ঘ ২৩ বছরের আন্দোলনের ফল। অনেকে মনে করেন, মুক্তিযুদ্ধ নয় মাস হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ নয় মাস হয়নি। পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকেই বঙ্গবন্ধু বাঙালির মুক্তির জন্য সংগ্রাম শুরু করেন। স্বাধীনতা সংগ্রাম মূলত শুরু হয় ১৯৪৮ সালে।
তিনি বলেন, পাকিস্তান আমলে কোনো ভোট হয়নি। বৃটিশ পদ্ধতিতে ভোট হয়েছে। কিন্তু জনগণের সরাসরি কোনো ভোটাধিকার ছিল না। ১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর প্রথম ভোট হয়। কিন্তু তৎকালীন পাকিস্তানি শাসকরা ক্ষমতা হস্তান্তরে নানা টালবাহানা করতে থাকে।
মোজাম্মেল হক বলেন, বঙ্গবন্ধুর বার্তা আমরা আগেই আঁচ করতে পারি। বঙ্গবন্ধু আগেই স্বাধীনতার বার্তা দিয়েছেন। সেই বার্তা পেয়ে ১৯৭১ সালের ১৯ মার্চ জয়দেবপুরে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলি আমরা। এর আগে, সশস্ত্র প্রতিরোধ কেউ করেনি। এটা স্বীকৃতি পাওয়ার দাবি রাখে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. হাফিজা খাতুনের সভাপতিত্বে ও গাজীপুর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আতাউর রহমানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সংসদ সদস্য মেহের আফরোজ চুমকি এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য শামসুন নাহার ভুইয়া।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আইবুর রহমান, বাংলাদেশ সাংবাদিক অধিকার ফোরামের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আজিজুল ইসলাম ভুঁইয়া, গাজীপুর অফিসার্স ফোরাম ঢাকার সাবেক সাধারণ সম্পাদক আজহারুল হক ও বাসন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আব্দুল বারী।