আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের ইশতেহার প্রকাশ করলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গত ১১ মার্চ তৃণমূলের ইশতেহার প্রকাশের কথা থাকলেও আগের দিন নন্দীগ্রামে মমতা আহত হওয়ায় দলটির ইশতেহার প্রকাশের দিন পেছানো হয়েছিল।
গত দশ বছরে তার সরকার ১১০ শতাংশ কাজ করেছে দাবি করে ইশতেহারে নানা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মমতা। তিনি বলেছেন, ভোটে জিতলে আগামী মেয়াদে তার সরকার বছরে ৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান করবে। সব পরিবারকে দেওয়া হবে নির্দিষ্ট মাসিক ভাতা।
দীর্ঘদিন ধরে অর্থনীতিবিদরা সরকারকে যে প্রকল্পটি চালু করার পরামর্শ দিয়ে আসছেন সেই ‘সবার জন্য ন্যূনতম আয়’ প্রকল্প চালু করার ঘোষণা দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী ও রাজ্যটির বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
তিনি ঘোষণা দিয়েছেন, তারা রাজ্যে ফের সরকার গঠন করলে প্রতিটি পরিবার মাসে সরকার থেকে ৫০০ রুপি করে পাবেন। তফসিলি জাতি ও উপজাতি পরিবারের ক্ষেত্রে এটি হবে মাসে এক হাজার রুপি। আর অর্থ যাবে প্রতিটি পরিবারের গৃহকর্ত্রীর নামে।
ইশতেহার প্রকাশের সময় এই ঘোষণা দিয়ে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘বাড়ির মহিলাদের হাতে অনেক সময় কোনও টাকা থাকে না। এই টাকাটা হাতে থাকলে সবারই কাজে লাগবে।’
এছাড়া শিক্ষার্থীদেরকে উচ্চশিক্ষার জন্য দশ লাখ রুপির স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড চালুর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এতে সুদ দিতে হবে মাত্র চার শতাংশ হারে। আর এই ঋণের ‘গ্যারেন্টার’ হবে রাজ্য সরকার।
কৃষকদের জন্য বাৎসরিক সহায়তা বাড়ানো ও বিধবা ভাতা বাড়ানো ছাড়াও শিল্প, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আবাসন, বিদ্যুৎ এবং খাবার পানির ক্ষেত্রে বিশেষ প্রকল্প নেওয়ার ঘোষণা এসেছে তৃণমূল কংগ্রেসের ইশতেহার থেকে।
তৃণমূল কংগ্রেস প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসতে পারলে এক কাঠা থেকে এক একর পর্যন্ত জমির কৃষকরা বার্ষিক দশ হাজার রুপি আর্থিক অনুদান পাবেন। এছাড়াও তৈরি করা হবে দশ লাখ ক্ষুদ্র, ছোটো ও মাঝারি শিল্পকেন্দ্র।
পশ্চিমবঙ্গের মানুষ আবার ভোট দিয়ে ক্ষমতায় আনলে রাজ্যের বেকারত্বের হার কমিয়ে অর্ধেক করা, দারিদ্র্যসীমার নিচে থাকা মানুষের সংখ্যা ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ শতাংশ করা এবং আরও ২৫ লাখ বাড়ি তৈরির প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন মমতা।
মমতা এ সময় বলেন, ‘গত দুই মেয়াদে যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছি তার ১১০ শতাংশ পূরণ করা হয়েছে। আমরা এই বাংলায় বিশ্বমানের অর্থনীতি গড়ে তুলতে চাই। নতুন করে চাকরি ও তরুণদের জন্য নতুন পথ তৈরি করতে চাই আমরা।’