কাগজের ঘোষণা দিয়ে বিদেশি সিগারেট আমদানির করে ১২ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকির আরো একটি অপচেষ্টা ভন্ডুল করে দিয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। সোমবার রাতে চট্টগ্রাম বন্দরে মিথ্যা ঘোষণায় আনা একটি কনটেইনার আটক করা হয়।
কাস্টমস হাউসের সহকারী কমিশনার রেজাউল করিম বলেন, চট্টগ্রামের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান জে.কে. স্টেশনারী সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে এ৪ সাইজের কাগজ ঘোষণায় এক কন্টেইনার পণ্য আমদানি করে। ঝুঁকিপূর্ণ সিএন্ডএফ এজেন্ট, আমদানিকারক, রপ্তানিকারক, বন্দর, পণ্য ও পণ্যের তৈরি দেশ বিবেচনায় কন্টেইনার সংশ্লিষ্ট বিল অব ল্যাডিং ব্লক করে রাখে চট্টগ্রাম কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
গত ফেব্রুয়ারি মাসে দুবাইয়ের জাবেল আলী বন্দর থেকে এমভি এক্সপ্রেস নেপ্টেস জাহাজ যোগে সংশ্লিষ্ট কন্টেইনারটি চট্টগ্রাম বন্দরে আসলেও পণ্য খালাসের লক্ষ্যে কোন কার্যক্রম গ্রহণ করেনি প্রতিষ্ঠানটি। এ প্রেক্ষিতে নিয়ম অনুযায়ী সোমবার পণ্য পরীক্ষার উদ্যোগ নেয় চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের এআইআর (অডিট, ইনভেস্টগেশন এন্ড রিসার্চ) টিম ।
কন্টেইনার থেকে সব পণ্য বের করে আনার পর দেখা যায়, ৪৮ টি পলিথিনে মোড়ানো প্যালেটের প্রতিটিতে ৪৮ টি কার্টুন রয়েছে যার মধ্যে প্রথম আটটি প্যালেটে ছিল শুধুই কাগজ এবং নবম প্যালেট থেকে পরবর্তী প্যালেটসমূহে ৪৮ কার্টুনের মধ্যে উপরের স্তরের ১২টি কার্টনে শুধুই কাগজ এবং ২য় থেকে ৪র্থ স্তর পর্যন্ত ৩৬ কার্টনে খুলে উপরে এক রীম এ৪ সাইজের কাগজ পাওয়া যায়। কাগজের নিচে আলাদা অন্য একটি কার্টনে পাওয়া যায় অভিনব কায়দায় লুকানো সিগারেট। কায়িক পরীক্ষায় ২৪৯৯০ কার্টনে ৪৯ লাখ ৯৮ হাজার শলাকা বিদেশি ব্রান্ডের সিগারেট পাওয়া যায়। এছাড়া এ৪ সাইজের কাগজ পাওয়া যায় ১৩.৭ টন।
এদিকে গত ১৪ ফেব্রুয়ারি একই প্রক্রিয়ায় আমদানিকৃত অপর এক প্রতিষ্ঠানের (করিম ট্রেডিং) পণ্যচালান আটক করা হয় এবং কায়িক পরীক্ষায় ২৩০০০ কার্টনে ৪৬ লাখ শলাকা সিগারেট পাওয়া যায়। পণ্যচালানটিতে শর্ত সাপেক্ষে আমদানিযোগ্য পণ্য সিগারেট আমদানি করে প্রায় ১২ কোটি টাকা সরকারি রাজস্ব ফাঁকির অপচেষ্টা করা হয়।
কাস্টমস কর্মকর্তারা জানান, এ ঘটনায় দোষী ব্যক্তিদের দ্রুত চিহ্নিত করে কঠোর ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছেন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কমিশনার ।