চলতি বছরে ভারতে ফের দৈনিক করোনায় আক্রান্তের রেকর্ড হয়েছে। দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন আরও ২৬ হাজার ২৯১ জন। সোমবার এক অনলাইন প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে বিবিসি।
বিশ্বজুড়ে মহামারি করোনার সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। অনেক দেশ এটাকে করোনা সংক্রমণের ‘তৃতীয় ঢেউ’ বলে অভিহিত করে ফের কঠোর বিধিনিষেধ জারি করছে। আবার জারি করা হচ্ছে লকডাউন সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ও সংশ্লিষ্ট দেশের সরকার এ নিয়ে সতর্ক করেছে জনসাধারণকে।
বিবিসি লিখেছে, ভারতে প্রথম থেকেই করোনা প্রাদুর্ভাবের অন্যতম কেন্দ্র দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্য মহরাষ্ট্র। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী গতদিনে ভারতে নতুন করে যেসব কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছেন তার অর্ধেকই মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা।
২০২১ সালের শুরুর দিকে ভারতে করোনার সংক্রমণ অবশ্য কমতে শুরু করেছিল। এক সময় তা অনেক কমে যায়। কিন্তু কোভিড সংক্রান্ত বিধিনিষেধ না মেনে দেশটির মানুষজন ফের অবাধে চলাচল করতে শুরু করলে আবারও বেশ কিছু রাজ্যে ভাইরাসটির সংক্রমণ পরিস্থিতি ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে।
ভারতের সরকারি হিসাবের বরাতে বিবিসির ওই প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, মহামারি এই ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব শুরুর পর থেকে ভারতে এখন পর্যন্ত এক কোটি দশ লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হিসেবে শনাক্তা হয়েছেন। এর মধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন ১ লাখ ৫৮ হাজারের বেশি মানুষ।
কয়েক সপ্তাহ ধরে ভারতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ক্রমশ বেড়েছে। সবচেয়ে ধনী রাজ্য হিসেবে পরিচিত রাজ্য মহারাষ্ট ছাড়াও দেশটির আরও যে সাতটি রাজ্যে করোনার সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী সেসব রাজ্য হলো- কেরালা, পাঞ্জাব, কর্ণাটক, গুজরাট, তামিলনাডু, হরিয়ানা ও মধ্যপ্রদেশ।
পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশন অব ইন্ডিয়ার প্রেসিডেন্ট এবং ভারতের কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের করোনা বিষয়ক উপদেষ্টা ডা. শ্রীনাথ রেড্ডি ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণ প্রসঙ্গে বিবিসিকে বলেন, ‘আমি এতে করে অবাক হচ্ছি না। আমি মনে মনে চেয়েছিলাম যেন এটা না ঘটে কিন্তু আমি যে অবাক হয়েছি এটা আমি বলতে পারবো না।’
ভারতে শনাক্ত হওয়ার করোনাভাইরাসের নতুন ধরনের কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে জানিয়ে দেশটির শীর্ষ এই জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ বলেন, বিজ্ঞানীরা এ নিয়ে তৎপর হলেও এতে করে বর্তমান করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির কতটা অবনতি হবে বা হয়েছে তা আমরা অনুমান করতে পারছি না।
ডা. শ্রীনাথ রেড্ডি আরও বলেন, নতুন করে করোনার এই ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণের খুব পরিষ্কার কারণ হলো, মানুষজন আর জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত পূর্বসতর্কতা ও বিধিনিষেধগুলো মেনে চলছেন না। এরমধ্যে অন্যতম হলো মাস্ক পরার বিষয়টি।